স্কুলে যাকে খুব তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতাম
সেই যে একদিন আমার ত্রাতার ভূমিকায়
অবতীর্ণ হবে স্বপ্নেও ভাবিনি !
কত যে বকেছি তাকে
কত যে মেরেছি তাকে
কতবার তাকে কারণে অকারণে শাস্তি দিয়েছি
যেবারে ব্যাক বেঞ্চের ছেলেটা মোরগ ডাকার
অপরাধে তার পিঠে দুটো ছড়ি ভেঙেছিলাম
সেই যে আমার মসিহ হয়ে বিপদ থেকে
উদ্ধার করবে তা কল্পনাও করিনি !
সন্ধ্যার পরে সাইকেলে বাড়ি ফেরার সময়
নির্জন মাঠের মধ্যে আমার পার্স , হাতঘড়ি ও সাইকেল কেড়ে নিয়ে মুখোশ পরা একজন
অগত্যা সারাটা পথ হেঁটে হেঁটে বাড়িতে ফিরি
মনটা স্বভাবতই খারাপ ;
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে দেখলাম সেই ব্যাক বেঞ্চার
একহাতে সাইকেল ঠেলে আরেক হাতে
জামার কলার ধরে হিড়হিড় করে টেনে আনছে
কাছে আসতেই প্রাক্তন ছাত্রটি
ধুম করে ছিনতাইকারীর পশ্চাতে লাথি মেরে বলছে , স্যারের কাছে ক্ষমা চা !
এই বলে আমার পার্স হাতঘড়ি
এবং সাইকেল ফিরিয়ে দিল
ছিনতাইকারী বললে , তুমি তো আমাকে ---
তার কথা শেষ করার আগেই ছাত্রটি বললো
আমি কি বলেছিলাম আমার স্যারের কাছ থেকে কাড়তে ? বলেই পিছনে সজোরে লাথি ।
তারপর সে বলে , স্যার আমি আপনার ছাত্র
সেভেন অবধি পড়েছিলাম
আমার হাতের মারের কথা এখনো ভুলিনি
বাবা গেল মারা , মা বললে বাজির কারখানায় ঢুকতে ; বারুদ বোমায় আমার আগাগোড়া ভয় ; অসৎ সঙ্গে পড়ে ছিনতাইকারী হলাম
এই ছিনতাইকারী আমার নতুন শিষ্য
ওর সবে হাতেখড়ি
ও না বুঝে আপনার সাইকেল ঘড়ি টাকা নিয়েছে
তাই বলে শিক্ষকের কাছে ছিনতাই !
আমি মাফ চাইছি স্যার ।