চাঁদে বসে কাটে বুড়ি চরকায় সুতো
সেই সুতো দিয়ে জামা পরে নাতি ভূতো
জামা পেয়ে খুব খুশি নাতিপুতি তার
প্রতি জ্যোৎস্নায় চলে সাজের বাহার l


শোনা যায় সুতো কেটে রেখেছেন তিনি
কিন্তু এ দুর্দিনে নেই বিকিকিনি,
করোনার অভিঘাতে বন্ধ বাজার
বুড়ি চাঁদে জমা করে সুতোর পাহাড় l


সুতো কাটে আর বাঁধে তারাগুলি ধরে
এক এক করে সব তারা ধরা পড়ে,
চাঁদের কি আছে এতো জেলখানা দেশে ?
তাই ছাড়া পেয়ে গিয়ে তারাগুলি হাসে l


চরকার বুড়ি চাঁদে সুতো কাটে রাতদিন
একটানা, ফাঁকি নয়, পুরো কোটা সাতদিন l
সুতো জমে জমে হলো আস্ত পাহাড় এক
পাহাড়ের খাদে খাদে সুতো ঝোলে চেয়ে দেখ l


সুতো কাটে আর করে সারাখন গল্প
চরকার বুড়ি জেনো খায় খুব অল্প l
চাঁদে জল নেই তাই বুড়ি জল পায় না
সর্বদা সুতো কাটে, কোনোদিকে চায় না l


ভাবে খুকু শুধু ভাবে চরকার বুড়িটা
সর্বদা সুতো কাটে পাশে রেখে ঝুড়িটা,
খায় কি সে, নেয় বা কে, রান্নার ঝক্কি
সর্বদা সুতো কাটে খায় কি সে সত্যি ?


তুলো ভরা ঝুড়ি এক পাশে নিয়ে বসে সে
ঘড়ঘড় ঘড়ঘড় সুতো কাটে নিমেষে
এতো সুতো করে কি সে, দেয় চাঁদে ছড়িয়ে ?
রাতদিন সাতদিন পড়ে সুতো গড়িয়ে l


চরকার বুড়ি দেয় সুতো নিয়ে মাঞ্জা
ঘুড়ি খেলে সুতো দিয়ে তার নিজ ভাঞ্জা,
এক দুই তিন চার ঘুড়ি সব কেটে যায়
কেটে গেল ঘুড়ি যার তার বুক ফেটে যায় l


দেখেছো কি চাঁদ রাতে আকাশের হাসিখানা ?
চরকার বুড়ি তার নাতিপুতি চাঁদপানা,
চাঁদের সোনালী আলো চারিদিকে খেলে যায়
গ্রহ তারা আর চাঁদ খুশিমনে গান গায় l


চরকায় কাটা সুতো বেচে চলে সংসার
বেশি দামে সুতো বেচে খুশিমন বুড়িটার,
তুলো কেনে রাশি রাশি আরো সুতো কাটতে
বেশি দামে সুতো বেচে খুশি হয়ে নাচতে l


জ্যোৎস্নার চাঁদ যেটা হাসি আলো ঝলমল
যেখানে সে আলো যায় কলরব কলকল,
অমাবস্যার রাতে সেই চাঁদ আড়ালে
বিপদে ধরে না হাত, হাতটুকু বাড়ালে l


একলা রাতে চুপটি করে চাঁদের ঘরে উঁকি
চরকা বুড়ির নাতির বিয়ে তাকিয়ে সেটা দেখি,
খোঁজ নিয়ে পাই কনে ছিল পাশের একটি চাঁদের
বুঝলো নাতি সেদিন রাতে বিয়ে কেমন ফাঁদের l


চরকার বুড়ি বলে কিছু নাকি হয় না
দেখবার ভুল সেটা মনগড়া গয়না,
বিজ্ঞান চাঁদে গিয়ে নিজচোখে দেখেছে
খানা ও খন্দ মাটি ধুলো মেখেছে l
৮৮৯