বিদ্যেবোঝাই ধনীমশায় অনেক বিষয় জানেন
অনেক অনেক টাকার গরম টাকা শক্তি মানেন ।
সুযোগ পেলে জ্ঞানের বহর ঝাঁকিয়ে বাহির আসে
অল্পজানা লোকগুলো সব মরে ভয়ে ত্রাসে ।
পদে পদে কম জানাদের পিন্ডি চটকে দিয়ে
গভীর খুশি বিদ্যেবাবু তুষ্ট তেনার ইয়ে ।
নিজের গাড়ি নিজেই চালান ওঠান ডেকে ডেকে  
ভাড়ার কথা বাদ দিলাম খাওয়ান নানান মিঠে ।
আছে তাঁর এক বাংলোবাড়ি দাওয়াত যখন তখন
গাড়ি করে নিয়ে গিয়ে খাওয়ান কোপ্তা মাখন ।
মাংস পোলাও কোরমা ঢালাও সাজিয়ে থালা পুরো
স্যুপ পকোড়া ইলিশ তেলি বিউলি ডালে মুড়ো ।
গেলেন যাঁরা খেলেন যাঁরা তাঁরাও বেদম খুশি
মাস পেরুতেই হেঁচকি ওঠে গলাতে খুসখুসি ।


বিদ্যেবোঝাই বাবু ভাবেন সবাইকে তাঁর গোলাম
কথায় কথায় অপমানের বাক্যবুলি চালান ।
ভাবেন তিনি -
চড়িয়ে গাড়ি ভরিয়ে ভুঁড়ি সকলে তাঁর কেনা
জীবনে আর শোধ হবে না কোনোদিন এই দেনা ।
মানুষ তো নয় গরু ছাগল ইচ্ছেমতো কিনি
ইচ্ছেমতো খাইয়ে দিলাম জীবনভরের ঋনী ।
এক আঘাতেই ফুঁসিয়ে ওঠে মনের স্বাভিমান
ভুল ভেঙে যায় বিদ্যেবাবুর মানুষ নয় গোলাম ।


হারিয়ে গেলো হারিয়ে গেলো বন্ধুসকল শেষে
সবাই আছে নিজের মতো নিজের আপন দেশে ।
তেনার গাড়ি চড়ার আগেও সবাই হেঁটেছিলেন
তেনার ভোজন খাবার আগেও সবাই খেয়েছিলেন ।
এখনও তো চলছে সবাই খাচ্ছে সুখেদুখে
একা তিনি বারুদ পোড়েন পুড়ে নিজের বুকে ।
সবকিছু সেই আগের মতো দিব্যি হাসে খেলে
রামের সঙ্গে শ্যামের মিলন তিনি যে যান জ্বলে ।


লক্ষ কোটি বিদ্যেবাবুর হাজার টাকার শোক
জ্ঞানবিজ্ঞান জলাঞ্জলি মানেন নাকো লোক ।
সবার সামনে টাকা চাওয়ার গুস্তাফিটা দেখান
সামান্য সেই হাজার টাকার ভুখা তিনি শেখান ।
আদৌ সেটা পাওনা কিনা সেই প্রশ্নও ওঠে
অনেক হিসেবনিকেশ শেষে সমাধানটা জোটে।


তিনিও তো নিয়েছিলেন হাজার দশেক ধার
শোধও তিনি দিয়েছিলেন তাঁকে টাকা যার ।
কিন্তু যিনি পাওনাদার কখনো তা চান নি
টাকার জন্য অসম্মান তিনি কিন্তু পান নি ।


সবাই চলে নিজের জোরে আপন বলই বল
সঙ্গে থাকা কালের নিয়ম মহাকালের কল ।
নিজের জোরে লাফায় সবাই যতোটা তার কুলায়
মূর্তি ভাবে ভ্রমে পড়ে আমি দুনিয়া চালাই ।