ওরে খোকা, আয়না কাছে, দেখি তোর মুখ খানিক,
ভূতের মতো কেমনে খাটিস হাসি রেখে, মানিক?
ঘুমের থেকে উঠেই লাগিস ইটের ভাটায় কাজে,
শুকনো রুটি চিবোস বসে কষ্টের ভাজে ভাজে।


কেমন করে তোর মুখে রয় ফুলের মতো হাসি?
কোথায় রাখিস পাহাড়সম হরেক দুঃখ রাশি?
রোদে পুড়ে, ধুলো জমে মুখ হয়েছে কালো,
অথচ তোর চোখের কোনায় ঝিলিক মারে আলো।


ইশকুলে তোর থাকার কথা, খেলার কথা মাঠে,
কাজ করে তুই ফিরিস ঘরে সূর্য গেল পাটে।
কী করে তুই পারিস এমন বল না আমায়, সোনা?
হাজার প্রশ্ন মনের মধ্যে করে আনাগোনা।


প্রদীপ নিভে গেলে যেমন আঁধার আসে নেমে,
তেমন আঁধার খোকার মুখে, হাসি গেল থেমে।
সজল চোখে বললো খোকা, ঘরে পঙ্গু বাবা,
মায়ের বক্ষে ঘর বেঁধেছে যক্ষা রোগের থাবা।


কাজ না করলে সবাই মিলে থাকবো অনহারী,
তাই তো আমি কাজ করে যাই ঝরাই ঘর্মবারি।
মা ও মাটির নিকট থেকে ধৈর্য ক'রে শিক্ষা,
নিত্য আমি কাজ করে যাই, করি না তো ভিক্ষা!


ভাঙা ঘরের দাওয়ায় শুয়ে দেখি চাঁদের আলো,
নিঃস্বার্থ চাঁদ বিলায় আলো মুখ না করে কালো।
চাঁদের হাসি বক্ষে পুষে করি আমি কর্ম,
সবাই মিলে থাকতে ভালো কর্ম করাই ধর্ম।


১১/০২/২০২১ ইং