ওরা প্রশ্ন করে,
এত প্রেমের কবিতা, ভালবাসার কবিতা কেন লিখি !
পৃথিবীর মানচিত্র বদলায়, সংঘাত বাড়ে
আর বসে বসে প্রেমের কবিতা লেখেন !
লজ্জা করে না ? দেশ-সমাজের মানুষের জন্য কিছু করতে ইচ্ছা করে না ?
একঘেয়ে কবিতা নিপাত যাক ! যাচ্ছেতাই সব !


না, লজ্জা করে না ।
অধমের আবার লজ্জা কিসের?
যদি ভালবাসা দিতে পারতেন তবে “সংঘাত” শব্দটাই উঠে যেত
জুতোপেটা করে দেশ থেকে ভাগাতাম !
কিন্তু হায় ! ভালবাসা তো একঘেয়ে ! হায় !
দেশ-সমাজের কথা বলছেন ?
করে, অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করে দেখেই লিখি
নাহলে ঠ্যাকা কিসের কলমের কালি নষ্ট করার ?
ভালবাসি বলেই তো লিখি,
একটা প্রেমের কবিতা পড়ে একবার আপনার স্ত্রী’র দিকে তাকাবেন
দেখবেন আজ তাকে অন্যদিনের চেয়ে আরও সুন্দর লাগছে ।
মায়ের দিকে তাকাবেন,
তার স্নেহ পেতে আঁচল টেনে ধরবেন ।
যতই বাস্তবতার দোহাই দেন, ধরবেন ঠিকই ।
যখন আপনার সন্তান আপনাকে দেখে দৌড়ে আসে
তখন তাকে কোলে নেন ? চুমু খান তার গালে ?
কেন করেন এসব, জানেন ? আমি জানি ।।
এগুলো আসলে কিছুই না ভাই,
ওই সামান্য “যাচ্ছেতাই ভালবাসা” আর কি !


ঠিক সেভাবেই, ভালবেসে একবার মানুষের দিকে তাকান;
সমাজ-দেশটার দিকে তাকান ।
দেখেন কী করুণ চোখে তাকিয়ে আছে একটু ভালবাসার জন্য;
জীবনে কোনদিন মাটির গন্ধ শুঁকে দেখেছেন ভাই ?
নাকি ওই মাটিতে বড় বড় কারখানা বানাতেই ব্যস্ত ?
জানি, ওই পোড়া মাটির গন্ধ আপনাদের ভাল লাগবে না
সুগন্ধি লাগান ভাই, ভাল লাগবে ।
জীবনে কোনদিন নিজের ঘরটা দেখেছেন ভাল করে ?
প্রতিদিন সকালে আপনার ঘর পরিষ্কার করা হয়, তাই না ?
কেন করা হয় ? ময়লা গুলো যেন আপনাদের স্পর্শ না করে, তাই না ?
তো দেশের ময়লা পরিষ্কার করলে কী অসুবিধা ?
ময়লা লাগবে জানি, কোমর-পিঠে দু-এক দিন ব্যথা করবে-সেটাও জানি
কিন্তু দেশটা তো পরিষ্কার হবে !
কিন্তু করবেন না, শুধু আমাকে গালি দিবেন !
আমার কবিতায় থুতু দিবেন ।
কেন জানেন ?
ওই সামান্য “যাচ্ছেতাই ভালবাসা” – এর অভাব আর কি !
আর কোন সমস্যাই দেখি না ।


আমি লিখেই যাব, মারবেন ? মারেন ।
ভালবাসা-প্রেমের কবিতা একঘেয়েমি লাগে, লাগুক ।
তাও লিখবো…।।
অস্ত্র দিয়ে তো পারিনি, তাই কবিতা দিয়ে যুদ্ধ করি
ভালবাসার কবিতা লিখি,
প্রেমের লিখি, বাঁধনের-মায়ার কবিতা লিখি;
কেন লিখি জানেন ?
ওই সামান্য “যাচ্ছেতাই ভালবাসা” আর কি !!




-জিহান আল হামাদী
৩রা ফেব্রুয়ারি’২০১৩