স্বাধীনতা ০৪
জামাল উদ্দিন জীবন


টক টকে লাল রঙ তখনও হাতে লেগে আছে শিশুর কান্নায়
রক্তের স্রোতে বাংলার উদ্যানে বয়েছিল বান সর্বত্র জুড়ে
মুক্তির নেশায় নতুনের আশা মাথা উঁচু করে বাঁচার প্রেরণা
তখনও বুকে ছিল লক্ষ্য একটাই এবার নিশি হবে ভোর।


রক্তিম লাল আভা জড়ানো সবুজের শস্য জমিন আমার
স্বামী হারা স্ত্রী ভাই হারা বোন পিতামাতা হারানো সন্তান
বোনের সম্ভ্রম হারাতে প্রস্তুত হয়ে থাকা সন্তান হারানো মায়ের অপেক্ষা
জাত ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে নির্দিষ্ট একটি ভূখন্ডের জন্য অস্ত্র ধরা।


ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একটি পতাকা আমাদের  
বীরাঙ্গনা, মুক্তিযোদ্ধার, শহীদ পরিবার, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে হায়
হায়েনা দোসর দালাল রাজাকার মনের সুখে তাদের আঁখি জল ঝরায়
জীবনের বিনিময়ে দেশকে স্বাধীন করে কি পেলাম আমরা কাকে বলি।


পঁয়তাল্লিশ বছর হয়েছে পার পাইনি আমার প্রাপ্য ন্যায্য অধিকার?
গোলামি করবো না বলে সব হারিয়ে যুদ্ধ করে এনেছি একটি পতাকা
বুকের রক্তে নাম লিখেছি বাংলাদেশ এটাই কি ছিল আমার অপরাধ?
গোলামির বেড়াজালে বন্দি স্বদেশ আমার অনাহারে অর্ধাহারে কাঁটে দিন।


কি পেয়েছি আমরা স্বাধীন হয়েও পরাধীনতার বৃত্তে আষ্টে পিষ্ঠে ঘোরাঘুরি
দুঃখে কষ্টে ঘৃণায় উঁচু শির মোর অবনত মা বোনরা দ্বারে দ্বারে লাঞ্চিত হয়
রক্ষক যখন ভক্ষকের আসনে বসে দেখায় তার স্বরুপ চিত্র খানি নির্বাক আমি
কোথায় কার কাছে বলি এতটাই গ্লানি প্রাণ দিয়ে এনেছি বাংলায় কবিতা।


লিখতে পারি গান, গল্প ,ছড়া,বলতে পারি মধুর সুরে মায়ের শেখানো বুলি  
হৃদয় উজাড় করা প্রাণের সুরে উড়ে বিজয় নিশান সবুজের বুকে লাল
হয়েছে মুক্ত স্বাধীন আমার মাতৃভূমি সকলে লিখবো মোরা কবিতা সবিতা
রক্ত দিয়ে জোয়ানেরা হয়েছে মহান নারীরা বীরাঙ্গনা তোমাদের ভুলবোনা।


স্বাধীনতা প্রাণ দিয়ে এনেছি তোমায় জীবন দিয়ে রাখবো ধরে সকলে  
কোন কিছুর বিনিময়ে তোমাকে দেবনা হারাতে আমাদের কাছ থেকে
সহস্র কোটি ছালাম বীর শহীদের প্রতি যারা মোদের করে গেলে দান
বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি নাম দেবনা ম্লান হতে এ দেশের সম্মান।