এক একাকিত্বের দুপুরে
আধুনিক আয়নায় নিজেকে দেখছিলাম।
হাতে থাকা কৃত্রিম জোনাকির ধোঁয়ায়
মেঘ জমে গিয়েছিল আয়নার আকাশে।
খুব অবাক চোখে তাকিয়েছিলাম।
প্রথমত বোধ হলো-
অনেক দীর্ঘ এক শ্বাস নিয়ে ফেলেছি।
অনেকগুলো ফুলের সুবাস নেওয়া শেষ।
অনেক সময় ধরে তাকিয়েছিলাম।
এরপর মনে হলো-
অনেক বেশি কালো আমি!
কিন্তু আয়নার মানুষটা আমার সাথে কথা বললো।
আমি বিস্মিত চোখে তাকিয়েছিলাম।
প্রশ্ন করলো, জীবন মানে কি?
আমি চুপ করে থাকলাম।
মনে পড়লো  কিছু ফুলের কথা।
মনে পড়লো সুখের কথা।
কিন্তু উত্তর দিলেম, জীবন মানে ছুটতে থাকা।
জীবন মানে বিস্বাদ কোনো যাত্রা।
জীবন মানে মাত্র ষাট কিংবা সত্তর পৃষ্ঠার একটা বই।
বইটাকে যত পড়া যায়, যত পৃষ্ঠা ফুরিয়ে যায়
ততই আর পড়তে ইচ্ছে করে না, তবু পড়া যেন দায়!
আয়নার মানুষটা একটু মুচকী হেসেছিল।
আমি একপলকে তাকিয়েছিলাম।
আবার প্রশ্ন করল, মানুষ মানে কি?
আমি থমকে গিয়েছিলাম।
মনে পড়লো কিছু মুখের কথা।
তার মাঝে কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
এরপর হটাৎ দুটো গোলাপ, আমার মনে পড়েছিল।
আমি উত্তর দিলেম ভিন্ন, মানুষ মানে,
সুগন্ধ গোলাপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কাঁটা,
ছুঁইতে গেলে  গোলাপ, পাইতে হয় ব্যথা!
আয়নার মানুষটাও এবার চুপ করে ছিল।
আমি গভীর ভাবে তাকিয়েছিলাম।
মানুষটা প্রশ্ন করল, আমি কে?
আমার খুব পাপবোধ  হলো।
আমার খুব কান্না পাচ্ছিলো।
মনে পড়লো মৃত্যুর কথা।
কিন্তু আমি তা মেনে নিতে পারছিলাম না।
এরপর হটাৎ মনে পড়লো জীবনের কথা।
তারপর আমি উত্তর দিলেম ভিন্ন, আমি,
অনেক কালো রঙের একটা লাশ
ভুলের পরেও হইনা  নিরাশ
তারপরও মৃত্যুর আশায় বেঁচে থাকি!
আয়নার মানুষটা বেশ খুশি হয়েছিল।
আমি নিচের দিকে তাকিয়েছিলাম।
এরপর সে আমাকে বাঁচতে শিখিয়েছিলো।
অবশেষে আমি একা  হয়ে গিয়েছিলাম।
ঝিম বৃষ্টিতে ভিজে এক কাপ ভাপ ওঠা চা-কে সঙ্গ দিয়েছি।
গভীর রাতে না ঘুমিয়ে কাগজ আর কলমকে সময় দিয়েছি।
শীতের ভোরে ঘন কুয়াশায় শিশির ভেজা রাস্তাকেও দেখেছি।
সমুদ্র আর পাহাড়ের মাঝে ডিঙি নৌকায় ঘুরেছি।
বিশ্বাস করুন,
এখন আয়নার মানুষটাকে পেলে বলতাম-
জীবন সুন্দর!
মানুষ ভয়ংকর!
আমি সুখী!


১৫/০৯/২২ ইং (ফার্মগেট, ঢাকা)