দয়াবতী তুমি!
তোমার সযত্ন শাসিত সুললিত পা
ইচ্ছে হলেই কাঁটতে পারে যে কোন পিঁপড়ে
তুমি তাকে কিচ্ছু বলো না ।
সেই পা বুকে করে, দেশ থেকে দেশান্তরে
দেবতার অর্ঘ্য দিতে পারি মন্দিরে মন্দিরে
তুমি একবারও আমাকে কাছে ডাকো না !


মমতাময়ী তুমি!
মশারীর ভিতর ঢুকে পড়া বেয়াদব মশা
ইচ্ছে হলেই চুষে চুষে খায়
মোমে গড়া তোমার সুগন্ধী শরীর
তাকেও তুমি কিচ্ছু বলো না ।
তোমার শরীরের প্রতি বর্গ মিলিমিটার জমি
চুমোয় চুমোয় গড়ে দিতে পারি
স্বর্গের সুশোভিত উদ্যান ।
অথচ, প্রত্যাখ্যাত উড়ন্ত চুমু হাতে করে
ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি আমি মস্ত বেকুব !
একটু ছুঁতেও দাওনা তোমাকে আমায় !


পরম বন্ধুবাৎসল তুমি!
অর্গলবদ্ধ ঘরের অসভ্য টিকটিকি
তোমার চুড়ির টুং টাং আওয়াজ
কাব্যের বাছাই করা শব্দের কথোপোকথন
কলি ভাঁজা গানের সুর
বুকের খসে পড়া ওড়নার মোহনীয় উদাস
অনুক্ষণ দেখে, শুনে,
তুমি তাকেও তাড়াও না !
অথচ আমি তোমার সহচর্য্যে
একদিনেই হয়ে যেতে পারি মহাকবি
পৃথিবীকে দিতে পারি শ্রেষ্ঠ কাব্য
তুমি আমাকে একটু বসতেও বলো না !


কি সহিষ্ণু তুমি!
তোমার গোলাপী কপোলে বসে
পুষ্পিত বুক হেঁটে
উরুতে, বাহুতে বেড়ায় চালাক মাছি
তুমি একটুও বিরক্ত হও না,
অথচ তোমার জন্য ওষ্ঠে প্রাণ নিয়ে
মঙ্গলের দুষ্প্রাপ্য পানির সোনালী মাছ
এক দৌড়ে এনে দিতে পারি
তুমি একবারও আমার হাত ধরো না ।


কি করুণা তোমার !
শাওয়ারের উপর ঝুলে থাকা লম্পট মাকড়ের তরে
তোমার স্নানরতা শরীরের সুষমা দেখে প্রতিদিন
দোলে, আর স্বপ্নের জাল বোনে
তুমি তাকে দেখেও না দেখার ভান করো ।
অথচ, আমি সেই মোহনীয় দৃশ্য পলকের দেখায়
পৃথিবীর সমস্ত বিভেদ ভুলিয়ে
ফিলিস্তিন ও ইজরাইলকে বন্ধু বানাতে পারি ।
তুমি আমাকে কাছেই আসতে দাওনা ।


পিঁপড়ের জন্য তোমার যত দয়া
মশার তরে তুমি অমর মায়াবতী
মাছির তরে তুমি চরম সহিষ্ণু
মাকড়ের তরে করুণাময়ী !


আমার জন্য কেবল “ভাল থেকো “
আমার জন্য কেবল “সুস্থ্য থেকো”
আমার জন্য কেবল সৎ থাকার সস্তা মুলো
তবে কি সত্যিই ভুল করেছি আমি?
মানুষ হয়ে ?