নিঃসঙ্গতার আঁধারে,
নোনাধরা দেয়াল ঘেঁষে প্রত্যক্ষ করছি,
দূর্ভাবনার কান্নায় ভেজা শহরের অলিগলি।
কী নিথর নিস্তব্ধতা! থমকে আছে সব।


একদিন,
এ শহরের অরূণোদয়ে মেতে উঠতো
নৈসর্গিক উপবনের বিহঙ্গকুল।
অস্তরাগে বেজে-ওঠা রঙিন গোধূলিতে
স্নান করতো কুসুমকলিরা।
কী স্বশ্রুক বিষন্নতা আজ!


একদিন,
এ শহরের রক্তবর্ণ শিমুলের ডালে
ডানা ঝাড়তো শকুনেরা।
অর্থ-বৈভবের হুইসেলে কেঁপে উঠতো
ভূ-শয্যায় ঘুমন্ত আত্নাগুলো।
আজ কী বিচিত্র নিরবতা!


এক অদৃশ্য কোভিডের আক্রমনে,
পুরো শহর যেন জীবন্ত লাশ।
নাগরিক আছে ঠিক, নগরের স্পন্দন নেই,
শহরের সব আছে তবে, ঈষৎ প্রাঞ্জলতা নেই।
ধূর্ত বাউন্ডুলের শিকল পরা পা,
কোথাও নেই সামান্য উল্লাশ।


হাসপাতালে লাশের দীর্ঘ মিছিল,
কী বিভৎস চিত্র!
দুর্ধর্ষ কোভিডের নিত্য-নতুন রূপ,
নিস্ফল সব মন্ত্র।
সজনহারা আর্তনাদে প্রকম্পিত আকাশ,
যেন রক্তাশ্রু ঝরছে,
ধেয়ে আসছে মরণাতংকের আগ্নেয়গিরি,
যেন তামু ম্যাসিফ জ্বলছে।


মানবতার পৃথিবীতে আজ অমানুষের বসবাস,
এখানে মানুষ হত্যা কোন অপরাধ নয়।
ঐ তো দেখো, জগৎ সংসারে
মানব হত্যার কত আয়োজন!
রাইফেল, ট্যাংক, কামান যেন তুচ্ছ,
অস্তিত্ব বিনাশে, রসায়নিক, পরমানু
এবং জিবিইউ-43নিয়ে চলছে
নিত্য নতুন আয়োজন।


তবে কেন আজ মগজ খামছে ধরেছ
মরনভীতির অক্টোপাস?


কোভিড ঊনিশ,
এতো উশৃঙ্খলিত জীবনের
মর্মঘাতি অতীত জাতনা।
সিরিয়ার মজলুম শিশুদের
দীর্ঘ নিঃশ্বাসে প্রজ্জ্বলিত আভা।
ইরাকের অনাথ শিশুদের আত্নচিৎকারে,
জগৎস্রষ্টার প্রেরিত ক্ষুদ্র সৈনিক।


লকডাউন কিংবা শাটডাউন
কার সাধ্য, গড়ার শক্তির বলয়?
ভ্যাকসিন কিংবা মাস্ক - গাউন
মুছে দিতে পারছে কী কোন ভয়?


এসব যুক্তিতে কোন মুক্তি নেই
ব্যর্থ সকল শক্তি-ধন
মুক্তির যত শক্তি কেবল
স্রষ্টার হাতে সমর্পণ।