স্কুল ফেরত দুটো বিনুনি দুলিয়ে
দৌড়ে এসে বলত
মা খেতে দাও
বাবা তখনও মাঠে
কোন রকমে নাকে মুখে দিয়ে
দৌড় লাগাত বাবার কাছে
বাবা বলত পাগলী কোথাকার
একবার হাট থেকে বাবা
একটা লাল ফ্রক কিনে দিয়ে ছিল
ফুল ফুল ছাপ
কি ফুল এটা?
বাবা বলে ছিল কৃষ্ণচূড়া।


ভালো ছেলের খবর দিল
পাশের গ্ৰামের কাকা
মোটা মাইনের চাকরি
নিজের পাকা বাড়ি
পাল্টিঘর আমাদের
দেখতে শুনতে ভাল
বাবা বলল থাক না এখন
সবে মাত্র ষোলো
মা বলল এমন পাত্র
করব হাত ছাড়া?
বিয়ের সাজে সাজল মেয়ে
যেন কৃষ্ণচূড়া।


ভীষণ রকম ভালোবাসে
ভীষন আদর করে
চল আমরা ঘুরে আসি
অন্য শহরে
ভূল ভাঙল কদিন পরে
কারা যেন রোজ আসে
কীসের এত দরাদরি
কিচ্ছু বোঝেনা সে।
হঠাৎ একদিন স্বামী তার
উধাও হয়ে গেল
কৃষ্ণচুড়া আজ বিক্রী হয়ে গেল।


রাস্তাঘাট শুনশান
গীর্জার ঘড়িতে ঢং ঢং শব্দ
জানান দেয় দিন শেষ
গলির মোড়ে মেয়েটা দাঁড়িয়ে
শেষ  খদ্দেরের আশায়
রাস্তার ধারের গাছটা
লাল হয়ে আছে ফুলে
দমকা হাওয়ায় ঝরে পড়া ফুল
কুড়িয়ে নেয় মেয়েটা
কেমন যেন চেনা লাগে
সেই লাল ছাপা ফ্রক
সেই কৃষ্ণচূড়া।