বাপ দিয়ে ছিল আদর করে
নাম মনোরমা
কালে কালে সব ই গেল
রইল বেচে আলোর মা।
বয়স তখন বছর কুড়ি
বাপের ঘর ছেড়ে
অনেক দূরের শশুর বাড়ী
লক্ষীকান্তপুরে।
জমি জমা ছিল না কিছুই
দিনমজুর স্বামী
ঘরের কাজে লক্ষীমন্ত
সবাই বলে আমি।
এমনি করেই কাটছিল দিন
আলো তখন কোলে
ঘর ছেড়ে স্বামী গেল
অন্য কোথায় চলে।
হয় তো কোথাও ঘর বেধেছে
অন্য কারও সাথে
তবু ও দিই কপালে সিঁঁদূর
শাখা পড়ি হাতে।
সকাল বেলা বেড়িয়ে পড়ি
পাঁঁচটা দশের লোকাল
ফিরতে ফিরতে সন্ধে সেই
গড়িয়ে যায় বিকাল।
সাত বাড়ি বাসন মাজা
পাচ বাড়ী কাঁঁচা
নিত্ত্য দিন এমনই করে
গতর খেটে বাচা
পূটলি ডরা বাসী খাবার
প্লাস্টিক এর ঝোলা
মেয়ের দেখা মেলে
আবার সন্ধেবেলা।
কামাই হলেই একদিন
সবার মুখ ভার
তোমাদের থাকে ছূটির দিন
ছুটি নেই আমার।
আমার ও তো মেয়ে আছে
সোহাগ করে বলে
কাল যেওনা কাজে মা গো
ঘুমোব তোমার কোলে।
ভালোবেসে বাড়িয়ে দিই
হাজা ভরা দুই হাত
লক্ষীকান্তপুরে তখন গভীর রাত
সকাল হয় আবার ছোটা
আবার পাচটা দশ
শ্রান্ত লাগুক ক্লান্ত লাগুক
মন না মানুক বশ
গল্প গাথায় কাটে না দিন
জড়িয়ে মেয়ের গলা
সোহাগ এ যে ভরে না পেট
মেটে না পেটের জ্বালা।
ডাউন টাউনে ছুটতে থাকে
এমন অনেক আলোর মা
ভূলে যায় তারা
একদিন সে ও ছিল মনোরমা।।