বৃক্ষ যদি হই; তবে, বটবৃক্ষ  হবো;
পথহারা পাখিদের সাথে কথা ক'বো।
তুমুল ঝড়ের রাতে বুকে ধরে তারে
নিরাপত্তা দিয়ে যাবো বিবর্ণ সংসারে।


বর্শাবিদ্ধ এ জীবন অসহ্য যন্ত্রণা!
সোহাগে দিলো না কেউ সুখের মন্ত্রণা।
রেসের ঘোড়ার মতো ছুটে চলি তাই,
অন্ধকার মরুপথে হর-হামেশাই।


সবকিছু হারালেও, এই কথা জেনো,
মানুষের পিরিতি হারায় না কখনো।
পিরিতি বৃক্ষের মতো উর্ধ্বমুখী সদা,
পিরিতি জলের মতো আনে শীতলতা।


চুপিসারে চলে গেলে চিরতরে দূরে,
ধরে কেউ রাখবে না হৃদয়ের পুরে।
একটি আঁচর কাটো দীঘল-গভীর,
কালের দেয়ালে রবে, ছড়াবে আবীর।


স্বপ্নেরা ফানুস নয়; জ্বলন্ত পাথর!
আগুন জ্বালায় তারা নিত্য নিরন্তর।
একবার যদি জ্বলে, সহস্র জিহ্বায়
অনাচার অবিচার সব গিলে খায়।


মানব-দানব হন্তা মানুষের মাঝে
চুপিসারে বেড়ে ওঠে এবং বিরাজে।
কংসের প্রাসাদে জন্মে কংস-হত্যাকারী,
একদিন দানবেরা গুটাবেই পাততারি।


ভালোবাসা-টালোবাসা কিছু নেই ভবে!
স্বার্থের বৈভবে তারা চলে কলরবে।
অন্তরে অনন্য কথা, ভিন্ন যে বাহিরে;
চেটেপুটে খেয়েদেয়ে চলে যায় ধীরে।


দানবেরা লুটেপুটে, চেটেপুটে খায়;
খাওয়া শেষ হলে তারা আরো খেতে চায়।
ঘর খায়, বাড়ি খায়, খায় নদী-খাল;
সবকিছু খেয়ে তারা হয় বেসামাল।


একাকী মেলেছি পাখা সুনীল গগনে,
এমন জীবন হবে ভাবিনিতো মনে।
অন্তহীন বেদনায় মন কেঁদে যায়,
ঝরে শুধু আঁখিজল বড়ো অসহায়।


অনন্তের মরুপথে ধাবমান আমি,
সহায়-সম্বলহীন ছুটি দিবা-যামী।
স্বপ্ন যেন মরিচিকা উদ্বায়ী ফানুস,
তবুও যে স্বপ্ন দেখি, আজব মানুষ!


ভাটিতে উজান খুঁজি হয়ে পেরেশান,
পাথর-ঠোক্করে আজ হই খানখান।
চুপিসারে চিরতরে চলে যাবো, ভাই;
উজান ভাটিকে তাই একত্রে মিলাই।


ওরা সবে করুণার চোখে দেখে যায়,
নিয়তি-খোঁয়াড়ে আছি হয়ে অসহায়!
দুই বেলা রুটি আর এক বেলা ভাত,
নিরিবিলি শুয়ে থাকি, কাটে দিন-রাত।


কখনো যায় না বলা সব সত্য কথা,
বিষাদী অন্তরে তাই এতো ব্যাকুলতা।
গোপন নিলাম হয়ে ঘুরি পথে পথে,
মানুষ জীবনখানি চলে কোনমতে।



অন্ধ ক্ষমতা বন্ধ না হলে মন্দেরা বেড়ে যায়,
আনন্দহীন ছন্দবিহীন যৌবন কাঁদে, হায়!
রন্ধ্রে রন্ধ্রে গন্ধ ছড়ায় সমাজ দুষিত হয়,
জনগণ মন সদা কেঁদে যায় বেদনায় নিশ্চয়।


কবিরা যখন দলবাজ হয় লেখায়,
সমাজে তখন অকবিরা এসে শেখায়-
'মানুষের চেয়ে অর্থের দাম বেশি,
কবির কলম ক্ষমতালোভীর পেশি'।


ক্ষোভ রাগ ঘৃণা তেড়েফুঁড়ে জ্বলে,
অভিমান জ্বলে ধিকিধিকি;
সোহাগ-পিরিতি যদিগো উথলে,
ভালোবাসা করে ঝিকিমিকি।


কবিরা যখন ব্যবসায়ী হয়ে যায়,
ক্ষমতাবানের চাটুকার হয় তারা।
তখন কবিরা জিঞ্জির পরে পায়,
দাসখত দিয়ে অকালেই যায় মারা


সত্য-ন্যায়ের শক্তি কবির প্রাণ,
জীবন পণের প্রতাপী উচ্চারণ;
কবির কণ্ঠে মানুষের জয়গান,
সুর-ঝংকারে বেজে ওঠে আমরণ।


কবি চায় প্রেম মানুষের ভালোবাসা,
অর্থের মোহ গৌণ কবির কাছে।
খ্যাতি, যশঃনাম কবিরা করে না আশা,
কবিরা চলে না স্বার্থবাদীর পাছে।


পাগলা ঘোড়ার লাগাম ছেঁড়ার
শক্তি আনিস যদি;
বদ্ধ জলের খাল-নালা বিল
তখন হবেই নদী।



বাতাসে বিরাজে প্রাণবায়ু
বাতাসে বিরাজে ভাইরাস!
মানুষের মাঝে বদ-ভালো আছে-
মীর জাফর ও সাইরাস।


যে সব শব্দেরা জাগে প্রেম-অনুরাগে,
স্বপ্নের তলানী থেকে;
সে সব শব্দের কথা অমর কবিতা,
দুঃসময়ে যায় হেঁকে;
নুরুলদিনের মতো,
অবিরাম অবিরত-
ডেকে যায়- 'জাগো বাহে, কোনঠে সবায়?
অন্ধকার ভেদ করে আয়, ছুটে আয়'।