প্রকৃতির স্নিগ্ধ রূপ দেখতে গিয়েছিলাম
পূণ্যভূমি সিলেটের পাহাড়িয়া দেশে
ক্লান্তিকর শহরের কষ্টকর মোহমায়া ছেড়ে
আমরা গিয়েছিলাম দল বেঁধে বাউলের বেশে
সবুজ চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়েছিল পাহাড়
শান্তশিষ্টমৌণ ঋষি যেমন থাকেন নিরিবিলি
তার অন্ধকার বুকে মায়াময় আলো জ্বেলেছিল
স্বর্ণ লতিকার মতো শীর্ণ ঝর্নাধারা
অজস্র ফুলের চোখে তাকিয়েছিল আমার দিকে
বাহারি পত্র-পল্লবে আমাকে জানালো সম্ভাষণ
বিলালো সুবাস ধারা মৃত্তিকার ভেজা বুক থেকে
আমরা পাহাড় দেখতে গিয়েছিলাম দলবেঁধে


আমাদের সঙ্গীসাথীদের মাঝে
পাহাড়ের মত মৌন ছিল না গুটিকয়েকজন
বিক্ষিপ্ততার আবহে হুক্কাহুঁয়া করেছিল তারা
যেন কেউ এ পৃথিবীর মানুষ নয়
অতি লোভী ও চতুর কতকগুলো আদিম ফেউ
চিৎকার চেঁচামেচি কামড়াকামড়ি অহেতুক অযথায়
মৃত পশুর রক্ত মাংসের লোভে লম্ফঝম্প করেছিল তারা
অন্তরে আমার বিষাদের নদী বহে ক্ষোভের লজ্জায়
পাহাড়ের মুগ্ধকর রেশ মেখে আমিও পাহাড় হলাম

এই পাহাড় সবুজ ছিল, স্নিগ্ধ ছিল; ছিল মোলায়েম
সভ্যতার করাল থাবায় ম্রিয়মান আজ
শিশুর মতন সে কাঁদছে নিরন্তর
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে বিষাদের সুরে
গোঙাতে গোঙাতে বলে
আমাকে বাঁচিয়ে রাখো ওগো পৃথিবীর মানুষেরা
চিৎকার করছে ধর্ষিতার কাতর কণ্ঠে
দ্বিধাগ্রস্ত মহাকাল বুকে তার করে তোলপাড়
সেই কান্না কেউ শোনেনি
শুনছিলাম গহীন পরাণের কথা
নিঃশব্দতার কোমল আবরণে ঢাকা
দুর্ভিক্ষের জ্যোৎস্নাবিহীন নিদ্রাহীন রাতে...


২৮/০৪/২০২৪
শাহজালাল উপশহর, সিলেট।