সকল কবিবন্ধুদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, আগামী ১৫/০২/২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলা কবিতার কবি সম্মেলন, ২০২০ উপলক্ষে উপস্থিত সকল কবিই তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করার সুযোগ পাবেন। যেহেতু, প্রত্যেক কবি তাদের কবিতা আবৃত্তি করবেন, তাই, সময়ের কথা বিবেচনা করে সকলকে অনুরোধ করছি যথাসম্ভব ছোট কবিতা (সর্বোচ্চ ৩০ পংতির) পাঠের জন্য নির্ধারণ করবেন। যারা কবি সম্মেলন অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করবেন, তাদের কবিতার বিষয়বস্তু আয়োজক কমিটিকে দেখিয়ে নিতে হবে। তাই, প্রত্যেকেই তার পাঠযোগ্য কবিতাটি কাগজে লিখে আনার জন্য সবিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি। (কারন, আমরা চাই না, একজন কবির অপ্রাসঙ্গিক কবিতা পাঠের জন্য আমাদের 'বাংলা কবিতা ওয়েবসাইট' আইনের মারপ্যাঁচে ক্ষতিগ্রস্ত হোক)।


কবির লেখা কোন নিবর্তনমূলক আইন দ্বারা রহিত করা হোক, আমরা তা চাই না। তবে, বাংলাদেশের 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি'' (ICT- Information and Communication Technologies) আইনকে মান্য করে আমাদেরকে অনলাইনে লেখালেখি করতে হয়। এ প্রেক্ষিতে   (১) কবিতায় কোন রকম সাম্প্রদায়িকতা, ব্যক্তিগত আক্রমণ কিংবা উস্কানিমূলক কবিতা; অথবা,  (২) যে কোনো ধর্মীয় কিংবা সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানে এমন কবিতা; অথবা,  (৩) নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে প্রচারণামূলক কবিতা; অথবা,  (৪) দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ কিংবা অন্যান্য জাতীয় চেতনার পরিপন্থী কোন বক্তব্যমূলক কবিতা পাঠ করা যাবে না।  


তাই, কবি সম্মেলন-২০২০ এ "নিবন্ধনকৃত কবিবন্ধুদেরকে" বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, যিনি কবি সম্মেলনে যে কবিতাটি আবৃত্তি করবেন বলে মনস্থির করেছেন, শুধুমাত্র সে-ই কবিতাখানি এখানে মন্তব্যের ঘরে কপি-পেস্ট করে দেবেন। এই কবিতাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আবৃত্তি করার সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করা হবে। (কবিতা ব্যতীত অন্য কোন মন্তব্য করা হলে, তা মুছে দেয়া হবে)।
====================================


কবি সম্মেলন,২০২০-এ পাঠের উদ্দেশ্যে যে কবিতা জমা হয়েছে-


সঞ্জয় কর্মকার  ১৩/০১/২০২০, ২৩:৫৭ মি:


বেদম শীতে কাঁপছে ভূ-লোক থর থর থর থর
তুষার তুহিন হিমেল হাওয়ায় বস্তি নগর ঘর।
ঘোরেল বাতাস হিস হিস হিস ছোবল মারে দেহে
রেশমী চুলে দিঘির ধারে আগুন জ্বালে কে হে!


জীর্ণ পোষাক বেশ ভূষাতে নাই তো পশম ছোঁয়া
দুহাত সেঁকে আগুন মেখে মাগছে রে ভাই দোয়া।
মলিন দেহে শীর্ণ শিশু কাঁদছে মায়ের কোলে
হিমেল বাতাস ঝঞ্ঝা তুফান কুপিত ক্রোধিত বোলে।


হে আল্লা ঈশ্বরেতে নাই কী বিচার বিধি!
কোন সে পাপের সাজায় বলো ক্রোধিত তুমি নিধি?
তোমার দানের স্বর্গ ধামে বিষমতার বিধায় কেনো!
উচ্চ নীচের বিভেদ প্রবল নিত্য মানুষ মরছে হেন।


কেবল মূরত তাই কী তুমি বিগ্রহতেই লিপ্ত রও
রহিস সহিস সাহেব সুবোর ঘরেই শুধু দীপ্ত হও।
হায় অভাগী ভোল রে তারে শাপ তাপেতে বিঁধতে চল
মানবো না আর শোষণ পোষণ চল রে বানাই অগ্নি দল।


জাতার কলে রইবো না আর চল রে আজি শপথ করি
বিষমতার বিষ মোচনে ধরায় আজি স্বর্গ গড়ি।
চাইবো না আর ভিক্ষে মোরা ছিনিয়ে নিতেই বাহুর বলে
বিদ্রোহের ই বীজ বুনে দি কোণায় কোণায় অগ্নিদলে।


শোন রে মালিক সমাজপতি এক সে আকাশ এক সে তল
এক ওই দেহ এক ঐ ধরা স্বত্বে সবার এক ওই বল।
শঠ শঠতায় গড়লি সমাজ মানবতার সে গান ভুলি
শোন রে আজি দলিত গরিব লইবো হাতে অস্ত্র তুলি।


জীবন যেথায় শক্ত থাবায় শোষণ পোষণ জাতার কল
কর্মকারের হাত ধরে শোন গড়বো মোরা অগ্নিদল।
অগ্নিদল অগ্নিদল অগ্নিদল।
-------------------------------------------------------


সুদীপ্তা চৌধুরী  ১৪/০১/২০২০, ১১:২৫ মি:
“একুশের তারুণ্য”


একুশ মানে উদ্দীপনা!
একুশ মানে বাংলার সাহসী তরুনদল।
একুশ মানে ভাষার জন্য হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করা।
একুশ মানে ১৯৫২ সালের তীব্র আন্দোলন।
একুশ মানে হাজারো মায়ের কোল খালি হওয়া তবু তাদের আঁখিতে আনন্দ অশ্রুজল।
একুশ মানে “মাতৃ ভাষা বাংলা চাই” মুখরিত স্লোগান!
একুশ মানে বাংলা দামাল ছেলেদের বুকের রক্তে রাঙ্গা রাজপথ।
একুশ মানে সালাম; বরকত; রফিক আরো নাম না জানা;
সাহসী বাংলার ছেলেদের বুকের রক্ত।
একুশ মানে প্রাণের ভাষা বাংলার কাছে পরাজিত।
একুশ মানে হৃদয় উজ্জীবিত করা গান;
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি”!
একুশ মানে ২০১০ সাল; আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি জাতিসংঘের কর্তৃক।
একুশ মানে শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া শহীদের স্মরণে।
একুশ মানে বর্তমানে তরুণদের কাছে “ছুটির দিন আর হিন্দি গান বাজানো”।
একুশ মানে ইংরেজী মিডিয়ামের ছেলেদের কাছে একচুয়েলি আই ডোন্ট নো বাংলা ভাষা!
একুশ মানে একুশে বইমেলায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া আর সেলফি তোলা।
হাসির বিষয় হলেও এটাই সত্যি একুশের তারুণ্য আজ বিলিপ্ত তরুণদের হৃদয়ে!
একুশের তারুণ্য উজ্জীবিত হোক তরুণদের হৃদয়ে।
তরুণদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে এই প্রাণের বাংলাদেশ।
একুশের তারুণ্য পুনঃজাগরণ হোক ভাষা; সংস্কৃতি আর তরুণদের হৃদয়ে।
-------------------------------------------------------------


আজহারুল ইসলাম আল আজাদ  ১৪/০১/২০২০, ১৮:৪১ মি:
তোমাকে খুঁজি


তোমাকে খুঁজি গাঁও গ্রামের হাটে
তোমাকে খুঁজি তেপান্তরের মাঠে।


তোমাকে খুঁজি বকুল ফুলের মাঝে
তোমাকে খুঁজি সকাল দুপুর সাঁঝে।
তোমাকে খুঁজি বট বৃক্ষের ডালে
তোমাকে খুঁজি প্রভাতের কালে।


তোমাকে খুঁজি দুর্বা ঘাসের ডগায়
তোমাকে খু্ঁজি কলমী লতার পাতায়।
তোমাকে খুঁজি নিলাম্বরীর নীলে,
তোমাকে খুঁজি পুকুর নদী বিলে।


তোমাকে খুঁজি আষাঢ়ের বন্যায়,
তোমাকে খুঁজি শ্রাবণের কান্নায়।
তোমাকে খুঁজি ফাল্গুনের আগুনে
তোমাকে খুঁজি আশ্বিনের কাঁশ বনে।


তোমাকে খুঁজি কার্তিকের নবান্নের দেশে
তোমাকে খুঁজি মাঘ মাসের শেষে।
তোমাকে খুঁজি বৈশাখের তাপ দাহে
তোমাকে খুঁজি চৈত্রের পশ্চিমা বায়ে।


তোমাকে খুঁজি জৈষ্ঠের ফল ফলাদিতে
তোমাকে খুঁজি পৌষের কুয়াশার চাদরে
তোমাকে খুঁজি ভাদ্রের আদরে,
তোমাকে খুঁজি অগ্রহায়নের ধানের গন্ধে।
তোমাকে খুঁজি কুল মাখলুকের গুল বাগে


তুমি যে আমার কবিতার পংক্তি
আমার সুরের রাগিনী
তাই তোমাকে খুঁজি শূধূ তোমাকে খুঁজি।
------------------------------------------------------


মোঃ হাবিবুর রহমান বাবলু  ১৪/০১/২০২০, ২১:৫৭ মি:
তোমার চোখে তাকাতে ভয় হয়


তোমার চোখে তাকাতে ভয় হয়
তাই বলে ভেবো না তোমার ক্রোধকে ভয় করি ৷
কারণ সেই ক্রোধ ক্ষণস্থায়ী ৷
তোমার চোখের গভীরে ভালবাসার স্থায়ীত্ব হৃদয়ে ভয় জাগায়
যে ভালবাসার ওজন হয়তো পাল্লার সীমানা ভেদ করে
কঠিন সমীকরনে নিয়ে যাচ্ছে ৷
তবু তুমি প্রায়ই আমাকে বল
তোমার চোখে তাকাতে ৷
বারবার বলো, একবার তাকাও আমার চোখে
মায়ার বন্ধন আরো গাঢ়ো হবে ৷
তোমাকে আমি বুঝাতে পারি না
সমুদ্র আমি ভালবাসি
নদীও আমি ভালবাসি
পাহাড়ও আমি ভালবাসি
আকাশও আমি ভালবাসি ৷
সমুদ্রের কাছে যাই না, কারণ বেশি কাছাকাছি গেলে সমুদ্র যদি তার গভীরতম স্থান আমায় পরিদর্শন করায় তাহলে-
তখন ভালবাসার অর্থটা হারিয়ে যাবে ৷
নদীর কাছাকাছি যাই না, কেননা স্থায়ীত্ব আবাস স্থাপন হলে যদি নদী তার শরীর পরিদর্শন করতে বলে তাহলে-
তখন ভালবাসার অর্থটা হারিয়ে যাবে ৷
পাহাড়ের উচ্চে উঠতে গেলে পাহাড়ও যদি বলে নিচু সীমানায় চলে এসো তোমাকে একটু আলিঙ্গন করবো, তাহলে-
তখন ভালবাসার অর্থটা হারিয়ে যাবে ৷
আকাশের সংস্পর্ষ অথবা তাকে ধরার মন বাসনা প্রকাশ করি না, যদি আকাশ তার সাথে মিশে যেতে বলে তাহলে-
তখন ভালবাসার অর্থটা হারিয়ে যাবে ৷
তোমাকে ভালবাসি গাণিতিক সূত্রহীন পরিমিত পর্যায় থেকে
যেখানে হারিয়ে যাবে না ভালবাসা অথবা সম্পর্কের অথবা চোখের কোন চাওয়া পাওয়া ৷৷
------------------------------------------------------


পরিতোষ ভৌমিক (অমায়িক কবি)  ১৫/০১/২০২০, ২৩:৫৩ মি:
আমার ইশ্বর


আমার ঈশ্বর আক্রান্ত আজ
তোমার ঈশ্বর হাসে,
আমার ঈশ্বর বিদ্যাসাগর
তোমার ঈশ্বর লাশে,
আমার ঈশ্বর ভাষা শেখায়
তোমার ঈশ্বর ভাঙ্গে,
আমার ঈশ্বর কলেজ মোড়ে
তোমার ঈশ্বর শৃঙ্গে,
আমার ঈশ্বর পরম্পরায়
তোমার ঈশ্বর ধর্মে,
আমার ঈশ্বর আধ্যাত্মিক
জীবে প্রেম -কর্মে ।
আমার ঈশ্বর নোবেল আনে
রক্ত মাংসের মানুষ,
তোমার ঈশ্বর দাঙ্গায় ব্যস্ত
ধর্মান্ধতার ফানুস।
আমার ঈশ্বর বাস্তবিক
পথে ঘাটে শ্রমিক,
তোমার ঈশ্বর কাল্পনিক
কিংবা পৌরাণিক,
আমার ঈশ্বর নাস্তানাবুদ
অনাহারের হীনাঙ্গে,
তোমার ঈশ্বর আজব অদ্ভুত
মন্দির-মসজিদ ভাঙ্গে ।
আমার ঈশ্বর বিরাজমান
কৃষ্টি মর্মর মূর্তিতে,
তোমার ঈশ্বর কীর্তিমান
রক্ত হোলির ভক্তিতে।
আমার ঈশ্বর ভেঙে চৌচির
রাজপথে রাজধর্মে,
তোমার ঈশ্বর ধীর স্থির
সিংহাসনে , আশ্রমে ।
আমার ঈশ্বর বস্তির মোরে
কলাপাতার ছাউনী,
তোমার ঈশ্বর পাঁচ তলাতে
এসি ঘরের তিনি,
আমার ঈশ্বর পান্তা খায়
তোমার ইশ্বর পান্তোয়া,
আমার ঈশ্বর তেলের পিদিম
তোমার ডিজিটাল ধোঁয়া ।
আমার ঈশ্বর বিশ্বে বিরাজ
তোমার ঈশ্বর তোমার,
আমার ঈশ্বর নিঃস্ব সমাজ
দয়ার অকূল পাথার ।
আমার ঈশ্বর তোমার ঈশ্বরে
বিভেদ যতই থাকে,
অদৃশ্য অন্তর্যামী ঈশ্বর
রেহাই দেবেনা কাউকে ।
-------------------------------------------------


মোঃ জাহিদ হাসান  ১৬/০১/২০২০, ১০:১৪ মি:
প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশা


(১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে)


এই তো সেদিন বসুধার মাঝে
তুমি এসেছিলে ফিরে মায়ের বুকেতে,
শত অন্যায়ের জিঞ্জির ভেদে
পারনি সেদিন নেত্র তলে অশ্রু লুকাতে।


অন্ধকার কারাগারের পাশেই
খুঁড়েছিলে কবর সেই নাপাক শয়তান,
দীর্ঘ ন'মাস রক্তস্রোত পদ্মায়
মায়ের ত্রিশ লক্ষ সন্তানের আত্মদাণ।


তিন লক্ষ বোনের ইজ্জত সম্মান
বিজয়ের নিশান উড়ে বাংলার আকাশে,
দশ জানুয়ারি তোমায় পেয়ে
সবুজ এ মাতৃকায় প্রেম আনন্দে ভাসে।


শত ব্যথা বুকে নির্ঘুম আজ
নির্বাক পোঁড়া মনে খুঁজি গো তোমায়,
ধুলা জমা ওষ্ঠে প্রাণপাত
তোমার অপেক্ষায় মন কাঁদে বাংলায়।


চিরঞ্জীব প্রিয় তোমার অবিনাশী
গান "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম",
প্রত্যাশায় এ মন চায় অনুক্ষণ
‍‍‍‌‌‌"এ‍বারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম"।
---------------------------------------------------------


অবিরুদ্ধ মোহাম্মদ  ২০/০১/২০২০, ১৭:০৬ মি:
অনুভবে একাত্তর


অনুভবে স্বাধীনতা যুদ্ধ আজো আমার চোখের
সামনেই ভেসে ওঠে যেন বারবার।
যদিও আমি দেখিনি মুক্তিযুদ্ধ,
যদিও আমি দেখিনি একাত্তরেরই বর্বরতা;
যদিও আমি দেখিনি রক্তাক্ত লাশের পাশে বসে
অবুঝ শিশুর কান্না।
যদিও আমি দেখিনি পচা লাশ শেয়াল শকুনে
চিরে খেতে।
যদিও আমি দেখিনি পাক-পাষণ্ডের পিপাসিত
রক্ত-চোখ আমার মা বোনের দেহ ক্ষতবিক্ষত
করে খেতে।
যদিও আমি গ্রামের পর গ্রাম আগুনের
লেলিহান শিখায় জ্বলতে দেখিনি;
যদিও আমি মুক্তির মিছিলে যোগ দিতে পারিনি।


তবুও আমার অনুভবে একাত্তর
তবুও আমার অনুভবে ৭ই মার্চ
তবুও আমার অনুভবে ২৬ শে মার্চ
তবুও আমার অনুভবে ১৬ ই ডিসেম্বর
তবুও আমার অনুভবে একুশে ফেব্রুয়ারি
তবুও আমার অনুভবে বাহান্ন।


আমি গর্বিত আমি স্বাধীন;
আমি আজকে গর্বিত আমার স্বাধীন
মাতৃভাষা।


হে আমার পূর্ব পুরুষেরা
তোমাদের লক্ষ কুটি সালাম।
হে আমার শহীদ ভাইয়েরা
তোমাদের লক্ষ কুটি সালাম।
হে আমার বীরাঙ্গনা মা বোনেরা
তোমাদের লক্ষ-কোটি সালাম।
-----------------------------------------------------


রবিউল হাসান  ২০/০১/২০২০, ২১:৪৩ মি:
অশান্ত কবি,শান্ত কবিতা রানী


কে তুমি?
আমি নারী।
এখানে কেন এসেছো?
তুমি ডেকেছো।
কই ডাকিনি তো।
ডেকেছো।তোমার কবিতার পেছনে ছুটন্ত কল্পনার ইন্দ্রজাল আমায় টেনে এনেছে।
তাহলে-তাহলে তুমিই কি আমার কবিতা রানী? কিন্তু তোমাকে তো বড্ড অচেনা লাগছে।
না কবি,তুমি আমাকে চেনো-আমাকে দেখেছো-তুমি আমাকে অসংখ্যবার অধ্যয়ন করেছো।
তোমার হৃদয়ের সমস্ত উপমায়-কল্পনায় তোমার কলমের ডগায়-তোমার মগ্নতায় প্রতিটি ছত্রেই আমার ছায়া আছে।
তুমি কি শুধুই ছায়া মানবী?
আমি শুধুই তোমার।
আমি কি তোমায় ছুতে পারবো?
না কবি,তুমি যে আমার স্রষ্টা।
তোমার স্পর্শ যে আমি নিতে পারবো না,
আমি ক্ষয়ে যাবো-বিলীন হয়ে যাবো।
ষ্পর্শের বাইরে তোমার উপাসনা করবো।
নাঃ নাঃ,আমি তোমাকে চাই এ হৃদয় ভরে, দেহের আষ্ঠেপৃষ্ঠে,
প্রানোল্লাসে-উষ্ণ আলিঙ্গনে বন্দী করতে চাই তোমায়।
না কবি,আমার তো দেহ নেই-আছে শুধু আত্মা আর হৃদয়।
তবে তুমি চলে যাও-চলে যাও, চলে যাও আমার চোখের সামনে থেকে ।
তোমার চোখের ভেতরেইতো আমার বসবাস।
----------------------------------------------------------


শফিকুল ইসলাম বাদল  ২১/০১/২০২০, ০০:১৩ মি:
সেই কালোরাতে


সেদিন কি অমাবস্যার রাত ছিলো;
নাকি পূর্ণিমা চাঁদ ছিলো আকাশে !
রাহুকবলিত ছিলো বাংলা মায়ের চাঁদমুখখানি;
নির্যাতনে নিষ্পেষণে ছিন্নবসনা মা আমার!
চৈত্রের খরদাহে বিবর্ণ ছিলো বাংলার প্রকৃতি;
মাঝরাতে নেমে এলো কালবৈশাখী প্রচন্ড বেগে।
তছনছ হয়ে গেলো গাছপালা, ফুলের বাগান;
লুটিয়ে পড়লো লাল গোলাপের কুঁড়ি,
হাসনাহেনার ডাল পড়লো ভেঙে;
মুখ থুবড়ে মাটিতে লুটালো বাগানবিলাসের ঝাড়।
আম-কাঁঠালের গাছ থেকে ঝরে গেলো মুকুল আর মুঁচি।
উপড়ে পড়লো তিন রাস্তার মোড়ে বিশালদেহী বটগাছ সমূলে।
নাভিশ্বাস বাঙালির।
লাশ হলো শিশু, কিশোর, আবালবৃদ্ধবনিতা।


ভনিতা আর ছলাকলার শেষে হায়েনারা বাঙালির রক্তে ভাসালো রাজপথ, ফুটপাত, গলিপথ
আর এবড়োথেবড়ো গাঁয়ের মেঠোপথ মাঝরাতে অতর্কিতে।
ঘরে, বাইরে, বাঁশবাগানে, ঝোপে, ঝাড়ে, নদীর ধারে, খালের পাড়ে
বাংলামায়ের অদম্য সন্তানেরা পড়ে রইলো লাশ হয়ে আকস্মিক গুপ্ত আক্রমণে।
এতো রক্তের স্রোত কেউ দেখেনি আগে;
পাষন্ডেরা এতো নির্মম হতে পারে!
ভীরু কাপুরুষের দল।


অগ্নিগর্ভা বাংলা মায়ের দামাল ছেলেমেয়েরা প্রতিরোধে গর্জে উঠেছিলো বাঘের নিনাদে।
নেতার ঘোষণা,' এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' বাঙালির শোণিতে জ্বালালো আগুন।
নেমে এলো যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে নেতার নির্দেশে।
সেই কালোরাতে এমনি করেই শুরু হলো বাংলা মায়ের অশ্রু মুছানোর যুদ্ধ।
-----------------------------------------------------------


শব্দ মাধুকরী (আরিফুল ইসলাম)  ২১/০১/২০২০, ০৯:৩৭ মি:
কাঁচ ভাঙার শব্দ


বুকের বর্ম খুলে আগুন জ্বালা, রক্তের সমস্ত নুন জ্বালিয়ে দে;
জ্বালিয়ে দে— অন্তত আরও কয়েক বার
শীর্ষবিন্দু,নাভিকুণ্ডলী সমস্ত পাপ পঙ্কিলতা
স্বতঃসিদ্ধ হই!
কোন পুষ্পবাণেই বিদ্ধ হবো না আর!
চুম্বনে চৌচির কর্টেক্স; স্নায়ুতে ছুটছে তীব্র বিদ্যুৎ;
অসহ্য ঢেউয়ে থরথর কাঁপছে জাহাজ, চুইয়ে পড়া আলোর সফেদ ফেনায়
ডুবে যাচ্ছি ডুবে যাচ্ছি আপাদমস্তক তোর ইন্দ্রিয় জালে—
ওহ! শিরদাঁড়ায় কী তীব্র শিহরণ !
আবিশ্ব তরল আগুন— নেমে যাচ্ছি পাতাল থেকে পাতালে!
কেবল তোর ঝাঁঝালো দৃষ্টিই পারে বৃষ্টির কৌণিক পতন রুখতে
মাটি থেকে ছিঁড়ে যাচ্ছে শিকড়, বোঁটা থেকে ফুল,
শাখা থেকে পাতা, মুকুল—
অনন্ত সুন্দর—ঝরে যাচ্ছে, ঝরে যাচ্ছে
শান্তির লোভে ডানা গুটিয়ে ভিড়ের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে বসে আছি
হৃদপিণ্ড ছিঁড়েখুঁড়ে কোথা থেকে যে ঢুকে পড়ছে
ঝড়ের মতন ওলট পালট একটা পৃথিবী—
চৌদিকে শুধু কাঁচ ভাঙার শব্দ !
বিদীর্ণ দর্পনে তোর মুখ—ভালোবাসার লালারসে
ভিজে যাচ্ছে প্রতিটি মুহূর্ত, পিষে ফেলছি স্বয়ং
তোর প্রতিরূপ টকটকে লাল রক্তজবা;
চাঁদের মতো আক্রান্ত ভিতরে বাহিরে অনিঃশেষ কলঙ্ক নিয়ে
ভেসে আছি মাংসাশী রাত্রির শরীরে!
তবু ভালোবাসি গন্ধ স্বাদ—অমল বিশ্বাসে শুয়ে পড়ি পাখিদের শয্যায়
শিয়রে পোড়া পাণ্ডুলিপি, ছাই—
নিংড়ে যেতে যেতে তোর নিঃশ্বাস—অস্তিত্ব ধূলিসাৎ করে দেয়
এক একটা স্বপ্নময় ভোর!
জেগে উঠি কাল ঘুম থেকে তোর ধ্বংসস্তূপে—শুধু কাঁচ ভাঙার শব্দ!!
-------------------------------------------------------------


শরীফ নবাব হোসেন  ১৯/০১/২০২০, ২১:৪১ মি:


আমি কবি


আমি কবি ------
লিখে যায় কবিতা
বর্ণের সাথে বর্ণ গুচ্ছ
শব্দের সাথে শব্দ গুচ্ছ
মিলিয়ে প্রকাশ করি মনের ভাব ।
মনের আলপনা, কল্পনা, আবেগ-অনুভূতি,
ভাবাবেগ, প্রত্যাশা, ক্ষোভ,
প্রেম-ভালোবাসা, বিরহ সব
কাব্যিকতার মাধুরী মিশিয়ে রূপায়িত করি ।
পাঠ করে কেহ হয়তো আনন্দ পায়
কারো বেদনায় মন ভরে যায়
হয়তো কারো দেখার সময় নাই ।


আমি কবি –
আকাশের তারায় তারায় চষে বেড়ায়
চাঁদের সাথে মিতালি করি
শুকতারার সাথে জীবনের গল্প বলি
নীল সাদা মেঘে মেঘে ভাসি
ভোরের সোনালি সূর্যের রাঙা আলোয় মিশে
ঘুমের মানুষকে জাগিয়ে দেই ।
সূর্যাস্তের লাল রঙীন আভায়
পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ি
দিবাবসানের বারতা পৌঁছে দিই ।


আমি কবি –
নীল সমুদ্রের ঢেউয় ভেসে বেড়ায়
সৈকতের বালি কণায় পর্যটকদের পায়ে
ভালোবাসার আবেশ মাখিয়ে রাখি
পড়ন্ত বিকালে নীড়ে ফেরা পাখিদের
পালকে পালকে উড়ে বেড়ায়
সকালে ভোরের পাখিদের কলরবে
ব্যস্ত মানুষজনদের মুগ্ধ করি
সবুজ বন-বনান্তর, ঝোঁপ-ঝাড় ও ফসলের মাঠে
প্রকৃতির রুপে একাত্ম হয়ে
পরম সৃষ্টিকর্তার বন্দনা করি ।


আমি কবি –
কিন্তু আমি রিক্ত হস্ত
অর্থ-সম্পদ, উপঢৌকন, রকমারি সামগ্রী
দিয়ে কাউকে খুশী বা সুখী করতে পারি না ।
পারি সবার দুঃখে দুখী হতে
সু্খে সুখী হতে
হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নিতে।
-----------------------------------------------------------


সাইদ খোকন নাজিরী  ২১/০১/২০২০, ১২:৫৫ মি:
প্রেমের মহাকাল


ইউসূফ জুলেখা রাধা কৃঞ্চ-রেখে গেলেন প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত
কোথায় পাব সেই খাঁটি প্রেম-প্রেমতো নয় যেন চশমার ফ্রেম
প্রেমে শক্তি প্রেমে মুক্তি-প্রেম মানেনা কোন যুক্তি
প্রেমের এই মহা উক্তি’র আজ বড়ই আকাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!


ফেসবুক ইন্টারনেট হ্যান্ডফোন-তরুণদের করেছে আলিঙ্গন
ধুম ধারাক্কা বেচাকেনা চলছে ডিজিটাল মার্কেটে
রঙ্গীন কাঁচের চশমাওয়ালী পড়ছে সবার টার্গেটে
প্রেম-প্রীতির বেড়াজালে দুনিয়াটা টালমাটাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!


ছয় মিনিটে প্রেম পাকা-নয় মিনিটে খায় ছ্যাকা
প্রেমের এই গ্যারাকলে-প্রেমিক বন্দী দলেদলে
প্রেমের এই নোংরা জলে-টানছে সবাই ছলেবলে
যুগের সাথে তাল মিলাতে ফেলছে এমন প্রেমের জাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!


মাই ডার্লিং আই লাভ ইউ-যত খুশি নিতে পার ইন্টারভিউ
তুমিই আমার প্রথম এবং শেষ প্রেম মাই সুইট
তোমায় না পেলে করব করবই সুইসাইড
রমরমা চলছে প্রেমের এ কমন রিয়ারচাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!


অর্ধনগ্ন ছেঁড়াফাটা প্যান্ট পড়া-রঙবেরঙ্গের কেশে ভাব ধরা
পার্লারের বৈচিত্র সাজে-ইংলিশ মার্কা শরীরের ভাজে
কপি হাউজ চাইনিজে-গার্ডেন আর সী-বীচে
আনন্দ উল্লাসে মুখরিত সকাল-বিকাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!


ধর্ম কর্ম বর্ণ জাত এসব নাকি এখন ফালতু প্রবাদ
একদিনের প্রেমবৈরাগী বাসর গড়ে খুঁজে বেড়ায় প্রেমের স্বাদ
এরাই নাকি যুগের লাইলী-মজনু-শিরি-ফরহাদ
করেনা যাচাই-বাছাই প্রেম ভেজাল না নির্ভেজাল
বিশ্ব জুড়ে চলছে নাকি এখন প্রেমের মহাকাল!
---------------------------------------------------



প্রণব লাল মজুমদার  ২৪/০১/২০২০, ১১:২৯ মি:


প্রাণের দিয়া


শিশু মায়ের কথা শুনে ভাসায় তরি আপন মনে
মা বলে সে প্রথম ডাকে
একে একে ফোটে বুলি মাতৃ ভাষায় কথাকলি
শেখে সে তার মায়ের থেকে।


মাকে ধরে কোলে বসে ভাব বিনিময় করে সে
প্রাণের দিয়া জ্বলে ওঠে
মায়ের ভাষা খুবই খাসা শিশুকে দেয় আলোর দিশা
মনের রসদ তারি সাথে।


জ্ঞান আহরণে মাতৃভাষা সুধা সম ক্লান্তি নাশা
এই কথাটিতে নেই কো ছল
এই ভাষায় কথোপকথন ঠিক যেন প্রাণবায়ুর মতন
যোগায় নিয়ত অশেষ বল।


মাতৃভাষা মা-র অশেষ দান সব জাতির উন্নতির সোপান
স্মরণে সেটি রাখবো ভাই
ভাষা শহীদ হলেন যারা চির স্মরণীয় তারা
অন্তরে তাদের দেবো ঠাই।


নানান ভাষা বিশ্ব জুড়ে থাকুক সবই সমাদরে
ঠাই দেবো তাদের অন্তরে
শিখবো যত জাতির ভাষা ভাবের বিনিময় হবে খাসা
লাগবে কাজে জ্ঞান বিস্তারে।


ভাসাবো তরি জ্ঞান সাগরে ভিন ভাষাদের রসদ ভরে
ফিরবো মোরা নিজের ঘরে
জুড়বো শেষে ভাষার বাধন কাব্য গড়বো মনের মতন
নিত্য নতুন অলঙ্কারে।
--------------------------------------------------
মোশারেফ ঢালী৷ ২৪/০১/২০২০, ১১:২৬ মি:


ধোকা


তোমার ধোকাতে..
বোকা বানিয়েছ আমায়!
বিষাক্ত ফরমালিনে..
ছেয়ে গেছে দেহখানি,
বিশ্বাস করো, আমি আজও মরিনি!
মরেছে তোমার বিবেক খানি!


যত্রতত্র করেছো খেলা..
লোভ লালসা মাঝে কাটিয়েছো বেলা!
আর কত টাকা চাই?
ডাইবেটিসতো তোমার সঙ্গী হয়েছে ভাই!


তোমার ছেলে আজ নেতা হয়েছে..!
গুম, লুটপাট, টেন্ডারবাজি, মঞ্চ বানিয়েছে..
শুনেছি মমতা আজ নাকি আর কলেজে যায়না
ও নাকি কর্তা মশায়ের কাছে ,
নালিশ করলে বিচার পায়না...
আহারে ভাই সমাজনীতি..
সবই নাকি চামচামী।


লক্ষ টাকার বালিশ চাই..
সরল মনে বলেছি ভাই!
আড়াইশো টাকা পিয়াজে ভাই
কাঁচকি মাছের ভর্তা চাই..


হাড়-কাঁপানো এই শীতে ভাই..
এক কম্বল বিতরণে, গোষ্ঠীসহ ফটোসেশন চাই..
লোকদেখানো তামশাগুলি!
সামলাতে বেসামাল ফেসবুক, টুইটারগুলো..


তোমার ধোকাতে..
বোকা বানিয়েছ আমায়
বিষাক্ত ফরমালিনে..
ছেয়ে গেছে দেহখানি,
বিশ্বাস করো, আমি আজও মরিনি!
মরেছে তোমার বিবেক খানি!


--------------------------------------------------