.              
              ওগো বরষার মেয়ে!
রুক্ষ্ম পৃথিবী নয়ন তুলিয়া পথ পানে রয় চেয়ে।
          চপল চরণে এসো ধরণীতে,
          চাহে কুমুদিনী তোমা বরে’ নিতে;
মর্মর স্বরে বনানী পত্র তোমার পরশ চায়,
কালো চুল খুলে ঝঞ্ঝা বাদলে এসো ঘুঙ্গুর পায়।


               ওগো বরষার মেয়ে!
ঘোমটা খুলিয়া চপল হস্তে এসো নাওখানি বেয়ে।
          ধুলি ধূসরিত বিমল আকাশ,
          চপলতাহীন দীঘল নিশ্বাস;
সিক্ত করো গো পরশন দিয়ে আকাশের ব্যকুলতা,
বর্ষণঘন শীতল পরশে বলে যাও সব কথা।


               ওগো বরষার মেয়ে!
উষর ভূমিতে নেমে এসো তুমি মল্লার গান গেয়ে।
          বৃষ্টির ঝাঁপি খুলে ফেলো আজ,
          ঝর ঝর ধারা আনো কারুকাজ;
সজল পবন বাদলের গাঁথা তুলে আনো সংসারে,
বরণের ডালা সাজিয়ে রেখেছি পুষ্পের সম্ভারে।


               ওগো বরষার মেয়ে!
কৃষ্ণ মেঘের উডুনী ওড়ায়ে এসো নীপবন ছেয়ে।
          তোমার আঁখির কালো তারা ’পরে
          আষাঢ় নামুক ঝর ঝর করে;
অবগাহি যাবো যুগলবন্দি তৃষ্ণার্ত এ প্রাণ,
চারিদিকে খরা ফসলের জমি ফেটে আজ খান খান।


               ওগো বরষার মেয়ে!
তপ্ত নিদাঘে অশান্ত মন আকাশের দিকে চেয়ে।
          কদম্ব ফুল বুঁজে আছে চোখ,
          পরশ আশায় রহে উন্মুখ;
রোঁয়ায় রোঁয়ায় ভালোবাসা দাও আকুল মিনতি তার,
বরষার মেয়ে, ধরায় এসো গো নিয়ে জল সম্ভার।