কবি মাহফুজা আক্তার এম.এ.কে-এর "প্রণয় নীড়" কবিতাটি প্রেম ও গভীর অনুভূতির এক নিবিড় চিত্রায়ন। কবিতাটি তিনটি স্তবকে বিভক্ত, যেখানে কবি গভীর রাত, প্রকৃতি এবং প্রেমের একীভূত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

প্রথম স্তবকে, কবি "গভীর রজনীর স্নিগ্ধ পবন" হয়ে প্রণয়ের বাঁধাহীন আগমনের কথা বলেছেন। "কামিনীর গাঢ় ঘ্রাণে মাতাল হয়ে / সিক্ত প্রহরে গড়বো প্রণয় নীড়!" লাইন দুটি প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে এক অন্তরঙ্গ ও সুরভিত মিলনের আকাঙ্ক্ষা ফুটিয়ে তোলে, যেখানে প্রকৃতির সজীবতাও ভালোবাসার আশ্রয় নির্মাণে সহায়ক। 'প্রণয় নীড়' শব্দটি প্রেমের গভীর এবং নিরাপদ আশ্রয়কে বোঝায়।

দ্বিতীয় স্তবকে, বৃষ্টির সুরের সাথে প্রেমের অমৃত সুধার তুলনা করা হয়েছে। "মুষুলধারে বৃষ্টির ও ছন্দে ছন্দে / অমৃত সুধার অতৃপ্ত পিয়াসায়" পংক্তি দুটি প্রেমের জন্য এক গভীর তৃষ্ণার ইঙ্গিত দেয়, যা প্রকৃতির ছন্দে মিশে যায়। জোনাকির আলোয় ঠাঁই নিয়ে আকুলতায় মোহনায় হারানোর কথা বলা হয়েছে, যা প্রেমিকের সাথে একান্তে কাটানো মুহূর্তের রোমান্টিকতা এবং বিশ্বস্ততাকে তুলে ধরে। এটি সেই আকুলতা, যেখানে সবকিছু ভুলে কেবল প্রেমের গভীরে হারিয়ে যেতে চায় মন।

শেষ স্তবকে, মেঘের গর্জনে হারানোর ভয়ের উল্লেখ থাকলেও, তা প্রেমিকের প্রতি হিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। "বিবাগী হয়ে হরণ করে প্রতি লগ্ন / মেতে উঠবো নীল সুরের ভেলায়!" লাইনগুলো প্রেমের গভীরতা এবং সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রেমে মগ্ন হওয়ার ইচ্ছাকে প্রকাশ করে। 'নীল সুরের ভেলায়' ভেসে ওঠার কথাটি প্রেমিকের সাথে এক স্বপ্নের জগতে ভেসে যাওয়ার এক সুন্দর উপমা, যা তাদের সম্পর্ককে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।

সামগ্রিকভাবে, "প্রণয় নীড়" কবিতাটি প্রেমিকের জন্য গভীর আকুলতা, প্রকৃতির সাথে প্রেমের নিবিড় সম্পর্ক এবং বাধাহীন প্রেমের এক নিরাপদ আশ্রয় গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। এর ভাষা সহজ কিন্তু অনুভূতিতে ভরপুর, যা পাঠককে প্রেমের এক রোমান্টিক ও স্বপ্নময় জগতে নিয়ে যায়।