জীবনের কোন ভাষা নেই;
আমরা সকলে দ্রুতপদে মৃত্যুর মিছিলে
এগিয়ে চলেছি কালো মরনের পথে।
শরত-শিশিরভোরে ঝরে পড়া শেফালিকার মতোন
ঝরে যায নিঃশব্দে, নির্জলা এই আকালের কালে!
ভালোবাসাহীন জীবনের রক্তলোভাতুর এই পরিবেশে
আমাদের জীবনের কোন আশা নেই।
মনে হয়, আমাদের পাহাড়ে-প্রান্তরে, গ্রামে-গঞ্জে,
শহরে-বন্দরে বাঁচবার কোন আশা নেই।
কেবল কান্নার স্বর, দুঃস্বপ্নের কালো অমানিশা,
মরণাতঙ্কের দুঃসহতা গ্রাস করে সকলের মনে।
একঘেয়ে নৈরাশ্যের হাঙরের মুখ
হা-করে এগিয়ে আসে আমাদের জীবনের দিকে।
জানি, এই দেশে এবং এ লোকালয়ে
অভাবের আগমন ছিলো চিরন্তন!,
ভাতের অভাব, ভালোবাসার অভাব, বিশ্বাসের,
চিন্তার এবং মানুষের সততার।
কিন্তু, কখনো অভাব হয়নি অকালে প্রাণ হারাবার,
মরক ও মহামারির ছোবলের ঘায়ে।


মৃত্যুর কান্নার সুর যখন সর্বত্র আন্দোলিত,
বেদনায় খরতাপে শুকায় নদীর জল,
ঝরে পড়ে বৃক্ষের সজীব পাতা,
বৃষ্টির জলের ন্যায় অশ্রুর দুর্গম হয়;
এই সময়েও কিছু স্বার্থান্বেষী বেনিয়ার দল
মানুষের পবিত্র জীবন নিয়ে অবহেলা ভরে
পোঁ-ছক্কা অথবা এক্কাদোক্কা খেলে।
যেখানে মরক অতিমারি মৃত্যুর খবর আনে;
স্বজনের কান্নার আওয়াজে পশু-পাখি, বৃক্ষ-লতা
বিমর্ষ হৃদয়ে হাহাকার করে!
অথচ, সেখানে বুদ্ধিমজা মৌ-লোভীরা,
অর্থের কুমির চণ্ডাল ব্যবসায়ীরা
নারী আর মদে আনন্দ-উৎসবে জনন-মৈথুনে মত্ত হয়।
মরকের কষাঘাতে মৃত্যুর মিছিল নামে,
শোনা যায়, চিতা ও করবে সৎকারের স্থানের অভাব!
চৈতন্যহীন দুর্বৃত্ত সাইলক সুদের হিসাব কষে।
শিকারের লোভে শিকারীরা ওর পেতে থাকে,
গুষ্ঠিয় লোভের খঞ্জনীতে নরকের সুর তুলে
ছদ্মবেশী ভদ্রলোক সেজে;
আমোদেপ্রমোদে পরিতৃপ্ত হতে চায় তারা।


আজ তাদের নিকটে ছিন্নভিন্ন প্রাচীন প্রাচীর,
সেই আপ্তবাক্য- 'মানুষের জন্য মানুষের প্রাণ'!
অবিমৃষ্যকারী সত্তার ভিখারি তারা,
তাদের বসতি সমাজের আঁস্তাকুড়ে।
যদিও সে সব দুর্বৃত্তেরা গণ্যমান্য; অথচ নগণ্য,
হিংস্র, জুয়াচোর, ইতিহাসের নিকৃষ্ট জীব।
সংহতির সীমিত সত্যের মাঝে
আজ সাম্যের সুন্দর দুর্জয় সিম্ফনি তুলতে হবে,
তবেই, বিবর্ণ কল্পতরু আবার সজীব হবে;
এ প্রত্যাশা রাখি, আমাদের অস্তিত্বের মর্মমূলে।


০৩/০৫/২০২১
মিরপুর, ঢাকা।