কবিগুরু, হে রবীন্দ্রনাথ!
শত বছরের পর কবি এক সালাম জানায়
       শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় হয়ে প্রণিপাত।
বাংলাভাষার কাব্যের সমুদ্রের জলে
যে দোলা দিয়েছো তুমি, বিপুল সম্ভারে;
এখনো তা অবিরাম দোলে
কথা ও ছন্দের সুর বেজে যায় অমিত ঝংকারে।
ছন্দের কারুকার্যের বাতাসের তোড়ে
দোলায়ে গিয়েছো দূর পাহাড়ের রুক্ষ বৃক্ষ-লতা।
ভাবনার অন্তরীক্ষে উদিত করেছো
      চিরবঞ্চিত সরল মানুষের হৃদয়ের কথা।
অভিধানের শব্দকে কলমের নিবে তুলে দিয়ে
            নাচায়েছো লক্ষ্মীবাই নর্তকীর মতো।
তোমার কবিতা যেন কাব্যিকতা এনে
ঝরে গেছে স্নিগ্ধ জলে শ্রাবণের ঢল অবিরত।
কবিতাতে এসে শব্দেরা পেয়েছে প্রাণ,
          ভুলেছে সকল হাপিত্যেশ;
বিমূর্ত বিহ্বল তাড়নায়
     মানুষেরা বিমুগ্ধ হয়েছে, অনিঃশেষ।
আমার মায়ের মুখের ভাষাকে তুমি
তুলে দিয়েছিলে বিশ্ব দরবারের চরম শিখরে।
অকৃতজ্ঞের মতোন সে সব অমূল্য অবদান
মান্যতাহীনভাবে, বলো, ভুলবো কি করে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!
চিন্তা ও চেতনে আমোদিত করে যাও,
       এই হৃদয়ের মাঝে রহো ভরপুর।


হায়!
আজ ওই দূরে শোনা যায়,
কতিপয় কবিদের মুখে।
তুমি নাকি এই বাংলা সাহিত্যের মান্দাত্মার কবি?
এই কথা বলে তারা নেচে যায় কুৎসিত পুলকে!
দৃষ্টতায় নাচে তারা মিনমিনে গলায় বলে যায়-
'কাব্যময়তা ছিলো না রাবিন্দ্রীক ছন্দ-কবিতায়!
পদ্যের সুরেলা স্বর পদ্মপাতায় ঝরেছে মাত্র।
ওসব পড়তে নাকি জ্বলে যায় সেই সব কবিদের গাত্র!


আধুনিক তারা!
কবিতায় তুলে আনে এক উত্তরাধুনিক ধারা-
'কাব্যের ছন্দকে পরিহার করে আজ!
বলে, ছন্দহীনতায় জাগে কবিতার কারুকাজ!
গলা টিপে তারে মারো!
যতোটুকু যে যেখানে পারো'!


হায়! কবিতা এখন আভরণহীন;
       আবরণও কম, খুব তুচ্ছ!
কাক ও শিখী একসাথে নাচে
            দুলিয়ে তাদের পুচ্ছ।


০৩/০৯/২০২২
মিরপুর, ঢাকা। ম