আমার কবিতা পড়িতে যাইয়া বলিও না ভাই, এ-ই কবি,
কবিতার কথা বুঝি নাকো আমি, বর্তমানের হই ভবী।
               কেহ বলে তাহা কবিতা না ছাই,
               কবিতাকে নিয়ে করিনা বড়াই,
রবি ও কাজীর শ্বাশ্বত বাণী নাহি পেয়ে আঁকি দুখ-ছবি,
হরতাল পেলে কর তাল করি গাহি প্রভাতের ভৈরবী।


বন্ধুরা কয় হতাশ হইয়া কি লিখো যে ছাই বিরবিরে!
তোমরাতো জানো দেখেছো অতীতে পুঁজেছি কাহারে মন্দিরে।
              শিকল বাঁধন ছিড়িবার তরে
              মিছিলের আগে শ্লোগান ধরে
শরীরের ঘাম ঝরায়েছি, নিয়ে মার্ক্স-লেনিন গন্ধীরে,
তোলপার করে ঝড় উঠায়েছি নিশার আধারে বন-চিরে।


আমাদের ক্ষুধাতুর শিশু চায় এক থালা ভাত একটু নুন,
খায়নিকো বাছা বেলা দ্বিপ্রহর পেটের ভেতর জ্বলে আগুন।
              ছুটিয়া আসিয়া পাগলের প্রায়,
              স্বাধীন-পতাকা খুবলিয়া খায়,
হরতাল দিয়ে রাজনীতি করো মুখে তোমাদের কালি ও চুন,
তাহাদের গালে কষে মারো চড়, যারা খায় এই শিশুর খুন।


স্বাধীনতা যেন বেগুন ভর্তা ক্ষমতা লোভীর লোলুপ গ্রাস,
টাকা দিয়ে ভোট কিনিয়া তাহারা সিংহাসনের মালিক খাস।
              ভুখারি সমাজ ঘোরে পিছে পিছে,
              জীবন তাদের কেটে যায় মিছে,
সন্ত্রাসী সেজে ভয় দেখাইয়ে বাঘে-ছাগলে খাওয়াও ঘাস,
ভিক্ষা মাগিছে জননী আমার ঘরেতে রাখিয়া ছেলের লাশ।


বলিতে কষ্ট বন্ধু আমার! বিষ জ্বালা জ্বলে এই বুকে,
ক্ষেপিয়া গিয়াছি দেখিয়া শুনিয়া যাহা আসে তাই কই মুখে।
              সারথী তোমরা এসো রাজপথে,
              মানুষ-প্রেমের আলোকের রথে,
ভেঙে ফেলি এই শোষন-দেয়াল, কাঁদি যে বন্ধু বড় দুখে,
তোমরা লিখিও অমর কাব্য যারা আছো আজ মহাসুখে।