তোদের নগরের কি খবর পরিমল?
এখনো কি চলছে
আদিমমনা মানুষের বর্বরতা,
তোদের গৃহের লক্ষ্মী ছেড়ে যাচ্ছে কি ঘর,
বাড়ছে কি সংসারের খরচাপাতি
নুন আনতে পান্তা ফুরায়
এ- প্রবাদ পাচ্ছে কি ঘরে ঘরে স্বীকৃতি?
অথচ এখানে দেখ
বাবু- বিবিরাই আছে বেশ সুখে
ক্যান্ডেল লাইট ডিনার
ক্যাফে বসে খাচ্ছে ফ্রাপে
গাঢ় ভালোবাসায়।
অদল বদল হচ্ছে নারী
পুরুষের হাতে হাতে
একই পরিবারে তিন- চারটে গাড়ি
সুন্দর, নিউ মডেল চকচকে।
এমন বৈপরীত্য দেখে
পরদেশ নগর ছেড়ে
আসতে চাইবে কি ঐ যুবকটি
পুরনো প্রেমিকার কাছে?
সে এখন শিখে গেছে
ডলার পাউন্ডে গৌরী কাঞ্চন
প্রেমিকা হাসে
মহল্লার চা স্টলে বসে
করবে কি সে কোনোদিনও প্রতীক্ষা
সুহাসিনীর আশে?
পরিমল, আমিও জানতাম না এতকিছু
যদি তোদের মত হয়ে যেতাম সংসারি
ছেলে পুলের বাপ।
হয়তো সেদিন আমারও
মেয়ের স্কুলের বেতন দিতে গিয়ে
বাজার খরচে পড়ে যেত টান
হেডমাস্টার স্যারের কাছে জানাতাম আবেদন
মেয়ের ফুল-ফ্রি বেতনের জন্য
একটু ভালো-মন্দ খাবার জন্য হয়তো
গিন্নির স্নো- পাউডার কিনা হতো না।
পরিমল, দুর্নীতি তারাও করে
দুর্নামের ভয়ে কিছুটা কম
তলে তলে
তুই আমি কেউ দেখতে পাই না ।
ধনীরা হতে চায় আরো ধনী
অভাবিরা হয় তাই আরো অভাবি
মোটা টাকার টেন্ডারে চলে দর কষাকষি
গায়ের অভিজ্ঞ মাসরে পায় না কন্ট্রাক্ট
বারোমাসই তাই তার ঘরে থাকে অভাব।
তুই ভালো নেই জানি, পরিমল
তবু ভালো থাক
পড়ে যদি মনে আমার স্মৃতি
তবে দাঁড়িয়ে দেখিস বাড়ির ইট পাথরের কণায়
শুয়ে আছে যে রোদ
ওখানেই ভেসে উঠবে আমার মুখ।
কৃষ্ণচূড়ার মত টকটকে সূর্যাস্ত দেখে
কোনো রমণী হয়তো পড়বে কপালে সিঁদুরের টিপ
তার সেই মুখখানা দেখার জন্য
আমি প্রতিদিনই দাঁড়িয়ে থাকি
সূর্যের কাছাকাছি
তুই তো জানিস না সে কথা, পরিমল
সে কোন রমণী?