"তোমাকে একা ছাড়তে পারি না
মনের মধ্যে সারাক্ষণ অস্থিরতায় তোলপাড়,
পারি না বকতে; কড়া শাসনও করতে
আগলে রাখার দায়িত্ব শাসায়, খবরদার!
কি থেকে কি করে বসবে বেখেয়ালি মনে
ভাবি তোমার শিশুতোষ আবদারের পূর্ণতা,
একা যে ছাড়বো আমার সাহসই হয় না
আকাশের নারাজি মানতে চাঁদের শূন্যতা।"


ঝুল বারান্দায় বসে এসব মনে মনে আওড়াই আর সে অভিমানী হয়ে কাপড় গোছায়। গোছানো না তো এলোমেলোই করে। চলে যাবে নাকি দুচোখ যেদিকে যায় সেদিক; আমার সাথে সে আর থাকবেই না। সেও আপন মনে গজগজ করছে,


" বলেছিল ভালোবাসবে, কিসের বাসাবাসি
এখন একটু কদরও নাই যেন মূর্তির সঙ্গে ঘর বেঁধেছি,
কবি বাবুর চির সখ্যতা কলম ডাইরি খাতায়
আমি উড়ে এসে জুড়ে বসে যেন বাঁধ সেধেছি!
আমাকে ছাড়া দিব্যি চলে তো চলুক
আমার যাওয়ার তোড়জোড়ে না একটু ঘাড় বাঁকায়!
মুক্তির ফুরসুতে কি সুন্দর দ্যাখো
পায়ের পরে পা তুলে আয়েশে চা খায়!
চলেই যাব থাকবো না আর
দিনে দিনে অবহেলা আর কত?
মুখ ফুটে চেয়ে ভালোবাসা নিব?
বয়েই গেছে আমার কাজ আছে আরো কত!"


গুছানোর পর্ব শেষ হলে একদৃষ্টে তাকিয়ে দেয়ালের দিকে। দেয়ালে তখনো ঝুলছে দু'জনের যুগলবন্দী ফ্রেম। মনে মনেই ভাবছে,


" ইস! আমার কবিবাবুকে নীল পাঞ্জাবিতে বেশ লাগে
ভাগ্যিস সেদিন কায়দা করে কালো শাড়ি পড়েছিলাম,
বুকের বামে নিয়ে সে ছিলো পেছনে দাঁড়িয়ে
কি সুন্দর ছবি! আচ্ছা এটাও নাহয় নিয়ে নিলাম। "


আমি তখনো বসে বসে তার পাগলামি দেখছি। মনে মনে শব্দ খুঁজছি কবিতার রসদ। অমনি কানে আসে কান্নার স্বর;


" কি গো কাঁদছো কেনো?"
" ফেরাও না যে ! "
" কোথাও গেলে তো ফেরাবো-
লক্ষ্মী এখনো ঘরেই আছে! "
" চৌকাঠ মাড়ানোর সাধ্যি না হোক
তার আগেই যেন প্রাণ নাই হয়ে যায়।
কোত্থাও যাওয়ার নেই কোত্থাও
আমার কবরও হোক বুক ঠিকানায়!"


জড়িয়ে রেখেছি তারপরও কাঁদছে তো কাঁদছেই। চোখের অশ্রুতে ভিজে একাকার বুকটা।


কলমেঃ রনি পারভেজ (#JD_কাবলিওয়ালা)
রচনাকালঃ ২৪/১১/২০২২ (রাত্রে)