দিনের শুরুতেই মুদির আজ বড়ো ব্যাস্ততা
পাওনার হিসেব টানতে গিয়ে বেড়েছে আক্কেল;
শুনলো, বাসায় ফিরেছে কেঁদে তার সেয়ান ছেলে
শেষ বছরের পরীক্ষাটায় মেরেছে নাকি ফেল!


সব খদ্দের বাকি নিয়ে করেছে দোকান খালি
পাওনা টাকা চাইতেই পকেট একেবারে ঠনঠন,
সারা মাস সবাই খেটেছে নাকি গাধার-খাটুনি
মালিকপক্ষ দেয় নাই এখনো তাদের কাজের বেতন।


এখন মুদির মাথায় হাত সময় অসময় করে
সপ্তা গড়ালো অসুস্থ্য শাশুড়ির জ্বরে পুড়ছে গা,
মুখরক্ষার এবার নিকুচিই হবে দেখতে না গেলে
জীবনে সুনাম যা কামানো ছিলো যাবে সব গচ্চা।


"ইলিশের ঝোল খাবে মায়", গিন্নীর আহাজারি
এই করে করে না খেয়েই কাটিয়েছে সারাদিন,
শাটার নামিয়ে মুঠোফোনে মুদির তদবির শেষমেশ
পুরানা দিনের বন্ধু এবার তারে দেয় যদি কিছু ঋণ।


ঠেকেই গেছে ভীষণ মতন এবেলায় হাত খালি
পরিশেষে বন্ধুর আশ্বাসে মুদি প্রাণ ফিরে পায়,
আসছে শুনে পায়চারিতে রাস্তার এপাড় ওপাড়
এক ঘণ্টাই গেল থাকতে থাকতে বন্ধুর অপেক্ষায়।


এক বছরের লসে ছেলে আর খদ্দেরের এক মাস
সপ্তার লসে শাশুড়ী আছেই এক দিনের লসে বউ;
পথ চেয়ে ঘণ্টা গেল ট্রেন ছুটলো কার মিনিট লসে
ঐ টেনশনেই চেনা কুকুরে টানা করছে ঘেউ ঘেউ।


বন্ধু এলো; হাঁপিয়ে গেছে ঘেমেও গেছে নেয়ে
এক সেকেন্ডের জন্যই নাকি ও প্রাণে বেঁচে আছে;
রডের গাড়ি উল্টে গেছে তার মাথার উপর দিয়ে
মোটর সাইকেল দুমড়ে গিয়ে পড়েছে পুলের কাছে।


মুদি মনে মনে ভাবে লস আর লস একগাদা লস
সময়ের দাম যায় না দেয়া আর দাঁড়িপাল্লায় মাপ,
বরাদ্দের বাইরে যে হারাইছে সেই জানে এর মূল্য
এই ভাবনায় ডুবে দিয়ে মুদি এখন একদম চুপচাপ।


কলমেঃ রনি পারভেজ (#JD_কাবলিওয়ালা)
সময়কালঃ ১৩/১২/২০২৩ (সকালে)