-ঃ "আপনি কখনো হাসেন না?"
-ঃ...................." হাসতাম তো!"
-ঃ "মানে...?"
-ঃ "যে জ্যোতির আলো হয়না সেখানটা কৃষ্ণগহ্বর,
যেখানে বিচূর্ণ হয় স্বপ্ন, বিদীর্ণ হয় অনুভূতি
সেখানে আক্ষেপ নেই, অনুশোচনা নেই, অভিযোগও নেই।"


তারপর অনেকক্ষণ চুপ; দু'জনেই চুপ


-ঃ "তোমাদের এই ব্যস্ত নগরীর কেউ আমায় চেনেনি,
মজার ব্যাপার হচ্ছে আমিও কাউকে চিনি নি কোনোদিন।"


তিলোত্তমা চুপ একদম, শুধু দুই কনুইয়ের উপর ভড় করে নরম গালের টোল তালুতে পুরে, মনোযোগী হচ্ছে একান্তে।
প্রচণ্ড অস্বস্তি সত্যেও, কি নির্বিঘ্নে চোখের সামনে মেনে নেয়
লোকটার আগুন শলাকার কুণ্ডলী বৃত্তের রহস্য জানতে।।


অ্যাসট্রে তে চাপা পড়া শেষ অগ্নি স্তুপ নিভলেই.....


"ভেঙ্গেছে হৃদয় কত শতবার
ভাঙ্গা হৃদয় ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে চূর্ণবিচূর্ণ আজ!
তুমি ভাবলে ভাবতেও পারো, বয়সের ভাড়ে তো কষ্টও বাড়ে
তবু বৃদ্ধা মায়ের বাবু ডাকে পাইনা বয়েসের আন্দাজ।।


প্রতিনিয়ত নতুন জীবনের নিত্যনতুন মৃত্যু
ভাঙ্গাগড়ার কর্মযজ্ঞে শেষে আমিই স্বার্থপর,
তুমি কি জানো? মর্গে মৃত মানুষের চিৎকারের চেয়ে
মানুষ যে বদলায় তা সহ্যাতীত ভয়ংকর।।


মাঝেমধ্যে ছেলেমানুষী দেখে হকচকিয়ে যাই
আসলে আমাদের প্রত্যেকের ভেতর একটা বাচ্চা আছে কিনা,
অট্টহাসি দেয়ালবিদ্ধ হয়ে একার অস্তিত্বে যখন ফিরে আসে
তখন তো আমারো সন্দেহ হয় আমি হাসতেই পারি না।।


অন্ধকারে নিমজ্জিত হীরার স্ফটিকের মাঝে
তুমি তার সৌন্দর্যের অস্তিত্ব খুঁজো না আলোক উৎসহীন,
স্থান বেধে পাত্র আর কথিত কালের সূত্র ধরে
একটা জীবন বাঁচেই বড়জোর কয়েকটা দিন।।


এইযে তোমার সামনে রক্তে মাংসের মানুষটাকে দেখো
মহাবিশ্বের আবর্তিত সময়েই সে কখন মরে গেছে,
বুড়ো-আঙুল প্রকৃতির নিয়মে দেখানো যায় না বলেই
লোকারণ্যের চত্বরে আজো নিঃশ্বাস ফেলে আছে।।


তুমি নিশ্চয়ই সূর্যের অস্ত যেতে দেখেছো?
গোধূলির মায়া সূর্যের বিদায়ে পেয়েছে সৌন্দর্যের অস্তিত্ব,
সব কিছুর শেষ যে কান্নায় হতে হবে এটা অযৌক্তিক
শেষটাও যে সুন্দর হয় তা দেখিয়েছে সূর্যাস্ত।।


ঋতুরাজ বসন্তও পুড়ে গ্রীষ্মের উত্তাপে
না থাকে তার যৌবনের নাম রঙের বাসন্তী
হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া থেমে যাবে এ মহা সত্য
ব্যর্থ তার আগমনী সময়, যে না হতে পারে কিংবদন্তি।।


আর আমি ব্যর্থ হতে চাই না।।"


তিলোত্তমা কাঁদছিল..........
টেবিলের অপরপ্রান্তে আগুন শিখা জানান দেয় রহস্যবৃত্ত।।


: রনি পারভেজ (#JD)
১৩/০৬/২০২১