আজ্ঞে হ্যাঁ আমি কাঁচাভূত ।  
সমান বয়সী পাথর অবশ্যই আছে
                                      না গাছ নেই ।
অধুনা নিবাস বনরংটিয়া বনস্থলীর এক অতিপিতামহ আস-শ্যাওড়া গাছ
আমার কোনও ছবি নেই
                আমার প্রেমিকার ছবি ইতিহাসের পাতায় আছে,  
অনেকেই চেনেন তাকে, হাতে চুড়ি,
কোমরটা ঈষৎ বাঁকিয়ে নাচের মুদ্রায় দাঁড়ানো মহেঞ্জোদড়ো-নারী
                                         সেই সেই ......
সেই মহা-প্রলয়ের রাতে প্রথম ছাড়াছাড়ি
তারপর আমি ফসিল, পাথরে মিশে পাথর
তারপর তারপর তারপর ......
                             পার হয়ে এসেছি শত-সহস্র বছর ;
জানেন ? আমিও কবিতা রচনা করতাম ;
অনেকেই কৌতুক করে বলত কাব্যরোগী
বিখ্যাত ভৌতিক পাক্ষিক “অমাবস্যা”য় বেশ কিছু কবিতা
ছাপা হয়েছে এক সময়
                               সে সব অবশ্য ভৌতিক ভাষায় ;
মহাকালাধার পাব্লিকেশন আমার একটা কাব্য-সংগ্রহও ছেপেছিল ;
বিখ্যাত মহানিশি-গ্রন্থাগারে দু’ একটা কপি এখনও
                                     পাওয়া যেতে পারে মনে হয়
আপনাদের পড়ার ইচ্ছে থাকলেও এখনই পড়ার উপায় নেই,
মানে ভবলীলা সাঙ্গ না হলে সম্ভব নয় ;


আমার ভৌতিক ভাষায় রচিত কবিতার নমুনা ;
“ আঁমৃভ লফঃনংন্তুডঃ আঃঘু
                     অংথতৈঃভ লফঃথঃশথ
গৃও ঢুঘু আঁমৃ  ফাঘু বঃঋহঃ
                         অঁপঁযঃদ তব আঁযনঃণ
ভঃডঁ-দঢঁঐ আঁফঁ ণিভ ণিভ ঘঃহঃদ্ধু লছগভঠ
আঁমৃভ দভঁতঁ ভঃয
অঁথুঐ ভঁঘথু কীভডু কীভডু আঁযৃ ভঁঘথু আঁযৃ অঁডমু
ফীড যঃহঁড আঁফঃড দ্ভডথ ণঁথ । “


কবিতাটা বাংলায় অনুবাদ করে দিই
তার আগে বলে নিই
বাংলায় আমি একেবারেই কাঁচা । তবুও শখ,
হব বাংলা-ভাষায় কবিতা-লেখক ।


উদ্ধৃত কবিতার অনুবাদ ঃ


"আলোর সীমাবদ্ধতা আছে
                        অন্ধকার সীমানাহীন
চোখ থেকে আলো মুছে যাওয়া অভিশাপ নয় আশীর্বাদ
রাত্রি-পথিক আমি দূর দূর ছায়াপথে সঞ্চরণ
আলোর পরিধি পার
অনেক পিছনে ঘুরতে ঘুরতে আরও পিছনে আরও অতলে
সূর্যের পচা-গলা শব ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন শব আর অনাদি অনন্ত নক্ষত্র বীথি
       হারিয়ে যাচ্ছে আমার দিন......"


বুঝে গেছি বাংলা ভাষায় আমার কবিতা লেখা হবে না মশাই
বেশ জটিল
উপমা, শব্দালংকার, অর্থালংকার, ছন্দ, অন্ত্যমিল
বরং লিখব ভৌতিক ভাষায়
তারপর ভাবানুবাদ
                    ঘোলে দুধের স্বাদ ।