আলোচনায় রাখতে চাই একটি নাম ভাই,
এই বাংলাদেশে এক নামেই চিনবে সবাই।
বানভাসি পরিচিত থানা সারিয়াকান্দি ভাই।

সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি গ্রাম,
অবস্থান যার ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন।
এই গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে গেছে বাঙালী নদী,
ছোটবেলায় খেলেছি সাঁতার, রয়েছে অনেক স্মৃতি।

উত্তরে ঘেঁষে আছে নাম ভেলাবাড়ী,
দক্ষিণে ছোট্ট গ্রাম পরিচিত সাতবেকি।
জোড়গাছা মৌজার অংশ, এতটুকু জানি।

এই গ্রামের মাঝ বরাবর একটি রাস্তা ভাই,
দুই ধারে ঘেঁষে আছে নানা প্রতিষ্ঠান তাই।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে পূর্বদিকে যদি যাও,
খোঁজ পাবে একটি গ্রাম, নাম বড়িয়া তাও।
পশ্চিমে চোখ রাখলে দেখো কালাইহাটা,
এক কিলো হেঁটে গেলে পাবে তার দেখা।

একটি হাটের কথা, অনেকের না জানা নাই,
ময়-মুরুব্বি গল্প করে, নাম তার তরুণী হাট ভাই।
কাঁচা মরিচ তুলা হত, বেচা তরুণী হাটে,
এই কথা মনে রাখা, অনেক স্মৃতি ভাসে।

জোড়গাছাও লেগেছিল মঙ্গলবার হাট,
দ্বন্দ্ব আর রেষারেষি জেরে হয়ে গেছে বাদ।
আগের মতো নাই এই গরু ছাগলের হাট।
মরিচ আর বেগুন উৎপন্ন হত অনেক বেশি,
এই হাটে বেচে মোরা থাকতাম বেজায় খুশি।

হায়ের এই হাটটি আজ হয়ে গেছে ফাঁকা,
গরু, ছাগল, ভেড়া বিক্রি নাই ঝাকানাকা।
কিলো পশ্চিমে গেলে পাবে সুবোদ বাজার,
লঙ্কা বেচার জন্য খ্যাত, বিখ্যাত এক বাজার।

মূল আলোচনা ভুলে আর কথা না বাড়াই,
আমাদের গ্রামটির নাম জোড়গাছা ভাই।
শান্তিকামী, ঐক্যবদ্ধ এই গ্রামের মানুষ,
উত্তরবঙ্গের বগুড়ায় কোথাও এমন নাই।

এক গ্রামে এক মসজিদ কয়টি গ্রামে আছে?
বগুড়ায় খোঁজে পাবে কয়টি গ্রামটি আছে!
মসজিদের জন্য সুখ্যাতি আছে এই গ্রামে,
চারপাশের হাজার মানুষ এই কথাই বলে।

ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ মোর জন্মস্থান,
কাগজ তোলার জন্য অনেকে আসে এখানে।
জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে--
এই কাজে পেতে সহায়তা আসে এই পরিষদে।

আছে মসজিদ, মাদ্রাসা, হাইস্কুল, প্রাইমারি,
অভাব নাই গড়ে ওঠেছে এসব ছাতার লাহানি।
পাড়ায় পাড়ায় আছে মক্তব, আছে হেফজোখানা,
এই তথ্য সবাই জানে, গ্রামবাসীর নাই অজানা।

গড়ে তুলেছে কত সুন্দর কিছু প্রতিষ্ঠান খানা--
কিন্ডারগার্টেন, এনজিও স্কুল, দেখে নাই মানা।
সরকারি-বেসরকারি কত প্রতিষ্ঠানই আছে,
হিসাব করে দেখতে হবে, তাই নতুন করে।

মহিলা কলেজ, বালিকা বিদ্যালয় পাশাপাশি,
দুই প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্ব সংঘাত নাই একটুখানি ।
ঈদগাঁ এর জন্য আছে সুন্দর একটি মাঠ,
যেখানে নামাজ পড়ে সাতাশ পাড়ার জট।

বগুড়া জেলার গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে দেখা চাই,
জোড়গাছার মতন এমন গ্রাম আর নাই।
আমাদের গ্রাম অতি গুছানো একটি গ্রাম,
সারি সারি পাড়া বাড়ি, তাই খুব দৃষ্টিনন্দন।

এই গ্রামের বাস করেছে কিছু কৃতি সন্তান,
দুইটি নাম বললেই মুখে চেনে দশ গ্রাম।
জোড়গাছার সাবেক দুই চেয়ারম্যান--
মৃত হাতেম আলী, মতিয়ারের নাম।

পশ্চিমে বাড়ি যার নাম হাতেম আলী,
ময়-মুরুব্বি থেকে শোনা কথা বলি ভাই।
বিএ পাশ হাতেম আলী খবর বলে যাই,
আসত লোকে দেখতে ঘোড়া গাড়ি করে।

পূর্বে বাড়ি যার নাম মতিয়ার রহমান,
এক নামেই চিনে তারে সারা গ্রামবাসী।
বগুড়ার চেলোপাড়ার ঠিক আশপাশেই,
গড়ছে বসত বাড়ি পাড়া-প্রতিবেশী অনেকেই।

করতোয়া নদীর নাম না জানার কেউ নাই,
এই নদীর উপর আছে এক ব্রীজ ভাই।
কয়েক বছর ধরে ছিল সংস্কারের কাজ,
নতুন করে ব্রীজ চালু হলো আবার ভাই।

বর্ষা মৌসুমে নৌকা বাইচের সময় জমে,
বাঙালী নদীর পাড়ে দাঁড়ালে মনও রমে।
এই গ্রামে ছড়িয়ে আছে সুনাম চারদিকে,
শিক্ষার আলোতে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিক্ষণে।
      **********************