তোমার চোখে পড়েনি আমার চোখ
এই বেশ হয়েছে ভালো।
তোমার ঠোঁটের হাসিও হয়নি দেখা।
তোমার ঐ চুলের গোছা,
দেয়নি দোলা কোমর তলা দিয়ে;
হাওয়ায় উড়েনি...
যাতে চুলের ওই মোহিত গন্ধ
অভিভূত করে আমাকে।


তোমার ঐ খিলখিলিয়ে হেসে ওঠা:
আহা কী দারুণ যেন...
যেমন ওই শুকনো মুড়ির উপর জলের ছিটা
কী অসাধারণ শব্দ!
সবাই তো চাঁদের জ্যোৎস্না আর নদীর কলতান
নিয়ে তুলনা করে প্রেমিকার হাসির!
আমি না হয় সাদা মুড়ির সাথে তুলনা করলাম।


সমুদ্রের গভীরতা বা নীলোৎপল যেমন
ঠিক তেমনি হয় ভালোবাসার মানুষের আঁখি।
বেশ গভীর ভাব জমানো মোহন টান...
ঠিক যেমন শ্রী কৃষ্ণের বাঁশির সুর,
যার টানে বিনোদিনী আসে বারে বারে।
ঠিক তেমনই মোহনীয় তোমার চোখজোড়া।
কিন্তু কুয়োর ব্যাঙ হওয়ার জন্য তাকে বড় জোর
কুয়োর জলের গভীরতার সাথে তুলনা করতে পারি।
কিংবা, তোমার চোখজোড়া হয়তো কুয়োর গায়ে
লেগে থাকা ফার্নের জোড়া পাতার মত মনে হতে পারে।


তোমার ওই টমেটোর মত নরম কপোল আর গাল।
চুইংগামের মত লেপ্‌টে থাকতে ইচ্ছে হয় তাতে।
পেয়ারার উপরের সবুজ শাঁসের মত তার স্বাদ।
আর দেখতে তো ভিতরের লাল অংশের মত।


কপালের কথা তো নাই বললাম।
সেইখানে ফুটে ওঠা টিপের জৌলুস তো... আহা!
শ্যামলা পুকুরের জলে রাজহাঁসের বিচরণের মত,
কিংবা হঠাৎ করে মাছরাঙার ছোঁ মারার মত।
আবার অমাবস্যার আকাশে আলোর ছটা যদি বলি...
ভুল কিছু বলা হবে?


চুলের বাঁকা সিঁথি!
যার জন্য শ্রী কৃষ্ণ বিখ্যাত।
সেটাও তোমার মাথায় বেশ লাগে।
আদৌ আছে কি না জানি না।
কারণ তোমার চুলের গোছা হাওয়ায় উড়ে এসে
আমায় মোহিত করতে পারেনি।
তোমার চোখ, কপোল, গাল, মাথা
যা নিয়ে এত তুলোধোনা করলাম।
আসলে কোনোটাই আমাকে ছুঁয়েও যায়নি।
ভালোবাসার টানে কাছে টানেনি।
তবুও কল্পনার সাথে একটু একটু একটু করে অনুভূতি...
অনুভূতি মিশিয়ে আমি বর্ণনা দিতে চাইলাম।
ঠিক যেমনটা বর্ষার সময় মাঠে চাষীরা সার ছড়ায়।
ঠিক যেমনটা হয় ধানের গাছ লাগানোর সময়,
কিংবা শীষধানের গজিয়ে ওঠার অনুভূতির মত...
আমিও একটু না হয় ছড়িয়ে দিলাম।


রূপসীর রূপের ঝলকে কবিতা লেখা সহজ।
কিন্তু তাকে না দেখেও এই একটু বর্ণনা যদি করতে পারি;
তোমার রূপে সত্যিই মোহিত হয়েছি আমি।
ধন্যবাদ। মোহিনী।