১ এ চন্দ্র, ২ এ পক্ষ


চন্দ্র
সকাল সাঁঝে
দিন দুবেলা আমার মা লোকের বাড়ি বাসন মাজে।
আমার বাবা রিকসা চালাই;
কাজের মাঝে মদ গিলে খাই।


পক্ষ
সকাল সাঁঝে আমার মা
দিন দুপুরে ঠিক সময় কেবল সাজে কেবল সাজে।
বাবা আমার আপিস করে;
রাতে ও সে থাকে না ঘরে।
  


দু পক্ষেই চাঁদ ওঠে আর ঢোলে।


*    ** ** ** ** ** **   *


খিলখিলিয়ে চাঁদটা হাসে-
তারাদের সব আবছা আলোয়;
চাঁদ ওঠে ওই দূ-র আ-কা-শে ---।


চন্দ্র তখন ইস্‌- কুলে যাই।
বন্ধু যেন হাজার শত;
মন খান্ তার বড্ড খুশি-
নিচ্ছে পড়া মগজ ভরে মনের মত মনের মত।


স্কুলে ছুটির ঘণ্টা পড়ে-
মন খারাপের আবেশ মাথায়-
চন্দ্র তখন বাড়ি ফেরে।


বাড়ি তো নয়-
মুক্ত আকাশ-
বৃষ্টি পড়ে-
উথাল পাতাল
রৌদ্র ঝড়ে-
মদের নেশা বাবা ঘরে;
মা ফিরবে
একটু পরে
তারপর আর বলবো কি আর-
মুখে আসে না সেসব কথা-
দুম্ দুমা দুম্ পিঠের প'রে-
মুক্ত আকাশ চাঁদ ক্ষয়ে যায় ধী-রে ধী-রে ---
ঘনিয়ে আসে গাঢ় আঁধার আকাশ প'রে
একটু ক'রে একটু ক'রে।
* ** ** ** ** ** *
পক্ষ থাকে খাটের পরে;
ঠাণ্ডা ঘরে আরাম ক'রে।
বাপের মায়ের অনেক কামায়-
টাকা দিয়ে সব ঢাকা তার!
কৃষ্ণ, শুক্ল সবাই সমান-
কিনতে পারে গোটা আসমান।


মন খারাপের গুমট যখন--


রিমোট চাপে!
কত কি দেখে!
মাঝে মাঝে আলমারি তার নজর কাড়ে
রঙীন বোতল একটু চাখে,
এক-টু চা-খে।
সুখ যেন তার উথলে ওঠে
আকাশ দেখে।
*****************
সর পড়া দুধ চাঁদ-টা তখন
হাসতে থাকে হাসতে থাকে।
চন্দ্র তখন---
ভূমির পরে আধ বোঝা চোখ।
সারা গায়ে জোৎস্না মাখে;
স্বপ্ন দেখে!


মনের মতো ছড়িয়ে দেবে মিষ্টি আলো
ধুইয়ে দেবে পৃথিবী টাকে
ভুলিয়ে দেবে দুঃখ সকল
পৃথিবী পরে
নিজের ঘরে
ভাবতে ভাবতে চোখ জুড়িয়ে-
স্বপ্ন তাকে বিভোর করে!


চাঁদের দিকে আড়চোখে চাই
কৃষ্ণ পক্ষ শুক্ল পক্ষ
হাজার নয়ন পিছন পানে
কেউ বা ভালো কেউ বা ---;
আড়চোখে চাই মন্দ মনে
কাজের মেয়ের ছেলে ও বোঝে;
নিজের পড়া পড়ে নিজে।
চন্দ্র বাবা রিক্সা চালাই-
বাবা কে মদ গিলে খায়-
শুক্ল পক্ষ আসলে পরে-
হাসির পাশে সুখের বাড়ি-
চাঁদ বাড়ে ঐ দূর আকাশে-
চন্দ্র তখন কেবল হাসে কেবল হাসে।
পাড়া-পড়শী বন্ধু স্বজন-
স্বভাব যেমন, স্বভাব তেমন---।
চন্দ্র নাকি স্কুলের প্রথম!
দেখব থাকে কদিন এমন?
মা-টা তো
বাসন মাজে লোকের বাড়ি
বাবাটা তো রিক্সা চালাই
কার ও কোনো সাত পাঁচে নাই।
সময় পেলেই মদ গিলে খায়-


তাদের ছেলে হচ্ছে প্রথম
মাষ্টার দের চোখ কিছু নাই!


আমার ছেলে-
আমার মেয়ে-
টিউ-শনে যায়
ম-স্ত বড় স্য-রের কাছে --
অংকে তো পাই নব্বই।
চন্দ্র একশ পেতেই পারে,
নম্বর দেয় দয়া করে।
মা-বাপ যাই বা করুক
মুখে তো তাদের মিষ্টি হাসি
বুঝবে ঠ্যালা
কদিন পরে!


চন্দ্র মা
দিন দুবেলা লোকের বাড়ি বাসন মাজে,
সকাল সাঁঝে।
কাজের শেষে-
যায় মন্দিরে।
ছোট্ট গোপাল;
তাকেই দেখে ---- দুচোখ ভরে।


গোপাল নাকি ছেলের মত,
বোঝে না কার ও নিষেধ শত।
নাড়ু, লজেন্স
চিপস্ কিনে দেয়;
যেদিন গোপাল যেটুক জোটায়।
পূজারী ও দেয় গোপাল হাতে-
গোপাল হাসে, মা ও হাসে নিজের মতো।


এমনি করে দিন কেটে যায়।
শুক্লপক্ষে চন্দ্র হাসে।
কৃষ্ণ পক্ষে কাঁদে বসে।
চন্দ্র এখন বাড়ে---
আর পাশের বাড়ি জ্বলে।


পক্ষের মা ও জ্বলে-


শাপ শাপান্ত মাথায় করে-
চন্দ্র ঘরে পড়া করে।


একটা পক্ষ বেড়ায় বলে
চন্দ্র বড্ড ভালো ছেলে।


একে চন্দ্র দুয়ে পক্ষ।
এ-কে চন্দ্র দু-য়ে পক্ষ।