ছাদে পা গুটিয়ে বসে গান গাইছি।
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার স্যারের লেখা
সবার পছন্দের গানঃ
এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকেনাতো মন
কাছে যাবো কবে পাবো
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ?
পায়রার পাখা ঝাপটানোর শব্দে
চমকে উঠে তাকিয়ে দেখি
পায়ের কাছে পড়লো এসে
এক বেনামি চিঠি।
হাতে নিলাম তুলে।
লাল গোলাপটা বেশ লাগছিলো চিঠির উপরে।


চিঠিতে লিখাঃ


হে প্রিয়,
রোজ তোমায় দেখি ঠিক এই বিকেল বেলা।
তুমি ছাদে ওই মাঝখানটায় বসে
আকাশ পাণে চেয়ে ডুবে থাকো গানের সুরে।


আকাশ, মেঘ,পড়ন্ত বিকেল,
হেলে পড়া সূর্য কিরণ, মৃদু বাতাস,
বাতাসে ছড়ানো ফুলের সুভাষ সবটা যেন শুধু তোমারি।
তুমি এতটা আপনমনে বিকেলটায় প্রকৃতির
নানান কান্ডে ডুবে থাকো,
প্রতিদিনের বিকালটা যেন শুধু তোমারি।


ঝাঁক বাঁধা পাখিদের ঘরে ফেরা মুগ্ধ চেয়ে থাকা
তোমার সে দুচোখ দেখে মনে হয়
চোখ দুটো নতুন কাব্যের সন্ধানে ব্যাকুল।


প্রথম যেদিন দেখেছিলাম তোমায়
খোপা বাঁধা চুলে
সেদিন তোমার খোপার ফিতায়
যেন আমাকেও বেঁধে নিলে।
খোলা চুলে দেখেছিলাম তোমায়
অঝোর বৃষ্টির দিনে।
তুমি বৃষ্টির তালে তালে
ময়ূরের মতো নেচে বেড়াচ্ছিলে।
আর গাইছিলে বৃষ্টির গান মধুর সুরে।
আমি আমার টিনের চালের নিচে বসে
মুগ্ধ চোখে দেখছিলাম তোমাকে।
টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দ আর
তোমার নুপুরের ছন্দ দুটো মিশে
প্রেমের শিকল বাঁধলো আমার মনে।
সেদিন তোমার নুপুরের ছন্দে
যেন আমায় আরো একবার বেঁধে নিলে।


তোমার খোলা চুল যখন মৃদু বাতাসে দোল খেলে,
তখন আমি অপলক চেয়ে ভাবি
একটা মানুষ কি করে এতটা অপরুপ হতে পারে?


তুমি ব্যস্ত থাকো গুন গুন গানে।
তুমি ব্যস্ত থাকো মেঘ পাণে চেয়ে।
তুমি ব্যস্ত থাকো প্রকৃতির সৌন্দর্য চিত্রনে।
আর আমি তোমার সেই ব্যস্ততার ফাঁকে
তোমাকে রাঙায় আমার রং তুলিতে।


তুমি ব্যস্ত থাকো নৃত্যের তালে।
তুমি ব্যস্ত থাকো কবিতা আবৃত্তিতে।
তুমি ব্যস্ত থাকো কবিতার ছন্দ মিলাতে।
আর আমি তোমার সেই ব্যস্ততার ফাঁকে
তোমাকে দেখি প্রাণ ভরে।


আজ তোমার গানের সুরের ডাকে
ইচ্ছে হলো সাড়া দিতে।
তাই লিখলাম
মনের সব জমানো কথা।
লিখলাম আমিও
এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে
আমারও থাকেনাতো মন
কাছে যেতে চায়
কাছে যেতে লাগে ভয়।
তাই চিঠিতে দিলাম
তোমায় প্রেমের নিমন্ত্রণ।


ইতি
তোমার প্রেমে পাগল প্রেমিক।