"রামাদান (ত্যাগের অগ্নিস্নান)"

রামাদান ইতিহাসের প্রান্তরে খোদিত এক অনির্বাণ শিখা,
যে জ্বলেছে আত্মশুদ্ধির অগ্নিবেদীতে,
সংযমের দীপ্ত শপথে।
বর্ণিল ভোগবিলাস যখন আত্মমোহের অন্ধকারে নিমজ্জিত,
তখন রামাদান আসে নবজাগরণের প্রজ্জ্বলিত আলো হয়ে।

এই মাস শুধু উপবাসের নয়, আত্মজিজ্ঞাসারও;
শুধু ক্ষুধার নয়, আত্মসংযমেরও।
রাত্রির নিঃস্তব্ধ প্রহরে লাবণ্যময় তারাগুলো সাক্ষী হয়,
যখন উম্মাহ’র হৃদয়ে তওবার অশ্রু ঝরে,
যখন সিজদাহর মাটিতে আত্মার ভার লুটিয়ে পড়ে।

ইতিহাস সাক্ষী, বদরের প্রান্তরে ক্ষুধার্ত মুজাহিদিনেরা সংখ্যায় ক্ষুদ্র,
অথচ ঈমানের দুর্ভেদ্য দুর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিল;
তাদের রক্তধারা দিয়েই লিখিত হয়েছিল বিজয়ের মহাকাব্য।
রামাদান সেই স্মরণিকা, যে শেখায় আত্মনিবেদন,
যে জাগায় আলোর মশাল।

এটি কেবল ত্যাগের নয়, এটি এক মহাসমর;
প্রবৃত্তির সঙ্গে, লালসার সঙ্গে, পৃথিবীর মায়ার সঙ্গে।
যে জয়ী হয়, তার জন্য রয়েছে জান্নাতের অনির্বাণ প্রভা,
যে পরাজিত হয়, সে হারায় নিজেকেই,
হারায় আত্মার অন্তর্গত শুদ্ধতাকে।

রামাদান, কেবল একটি মাস নয়,
এ এক বৈপ্লবিক অধ্যায়,
যেখানে আত্মার শেকল ভেঙে মানুষ পায় মুক্তির সোনালি আকাশ!