মাটি
---
তোমার জন্য আমি চাঁদ ছুঁতে পারিনি
জানো তো!.
তুমি বলতে আমি পারব না,
আমিও ভাবতাম আমি পারব না।
তুমি বলতে আমি কিছুই পারি না
তোমার কথার প্রতিধ্বনি তুলতো
তোমার সরোবরে থাকা সব জল,
আর আমি ভাবতাম!
আমি আসলে কিছুই পারি না।


তুমি বলতে আমি অলক্ষী, অপয়া,
আমায় দেখে অমাবস্যা লুকায়
দিঘীর কালোজলে,
বহুদিন একাকী আকাশ দেখেছি,
ওখানে খুঁজেছি লক্ষীর উপমা,
বৃথাই সন্ধান, আমি খুঁজে পাইনি।
একাকী ঘর-বার আমার
সঙ্গোপনে লুকোতো মুখ
কংক্রিটের আড়ালে।


ভেতরে কথার সমুদ্র নিয়ে মনে মনে
একাকী পার হতাম কত সমুদ্র মহাসাগর,
তুমি অচল গম্ভীর, সুদৃঢ় বাক্যবাণে
আমায় করেছ তুচ্ছ, করেছ ক্ষয়,
আমার জন্য ছিল না সান্ত্বনার বাণী,
ছিল না উপশমে ক্ষত কোন,
ভয়ে যন্ত্রণায় কাতর চোখ
সভয়ে খু্ঁজতো কোন এক বটবৃক্ষ।


ডাগর চোখে ছিল কি জল?
ছিল না তো!
ছিল প্রশ্ন অনেক, ছিল বিস্ময় কত---
একই বাগানে ফোটা হরেক ফুলে
কত না বিভেদ, ফুলের কাঁটা,
অতঃপর তুমি আঁচলে বেঁধে নিতে
দলছুট তোমার যত সাক্ষী।
আমি রুদ্ধবাক, আবার একাকী,
কত কথা ছিল মনে, কত স্বপ্ন চোখে,
তুমি সব ধুলো ছুঁড়ে
নিমেষে মলিন করে দিলে।


আমি আর চাঁদে হাত বাড়াতে যাইনি,
অক্ষমতার যন্ত্রণায় অহর্নিশ অবুঝ বনে থাকা;
আমি কিন্তু চাঁদ ছুঁতে পারিনি,
আমার অক্ষমতা, অযোগ্যতা নিয়ে
আমি কোনমতে টিকে থেকেছি।


বহুদিন পর আমি মাটির কাছাকাছি এসেছি,
মাটিতে রুয়েছি স্বপ্ন,
আমার মতই বাকহীন মাটি,
তাই নির্ভয়ে আজ মাটি ছুঁতে পারি,
হ্যাঁ, অবশেষে আমি মাটি ছুঁতে পেরেছি,
দেখলে তো তুমি!
তোমাকে ছাড়াই কেমন মাটি ছোঁয়া যায়!
জানি না মাটির মূল্য তুমি কী দাও
আমার কাছে তো অমূল্য,
যে মাটি আমায় পূর্ণ করে,
অধিকার দেয় নির্ভয় দাঁড়িয়ে থাকার,
নাই বা থাকুক চাঁদ আমার।
২/৫/২৪