মায়ের হাসিতে স্বদেশ
-----
একটি নিটোল কবিতার মতো
নিপাট বুননে অনুপম কাঁথা,
মায়ের গন্ধ লেপটে থাকে যেমন,
মায়ের আঁচল জড়ানো ভালোবাসায়।
সুঁই আর সুতো যেমন,মা আর জীবন তেমন
পরিপাটি ঘরদোর আর তৃপ্তির ব্যঞ্জণাদি,
মা কেবলই মা, মা কখনও একটি বদ্বীপ,
কখনও মায়ের চোখে দেখি একটি আস্ত পৃথিবী,
নির্ভার নির্ভরতা যেমন স্বদেশের চোখে পৃথিবী আমার।
নতুন কাঁথায় মায়ের পুরনো শাড়ির নতুন গন্ধ
যেমন পুরনো জমিতে নবীন পলির আশ্রয়
আর কর্ষিত তাতে ফসলের ভ্রুণ।
একটি আস্ত জমিন বর্ণিত নানাবিধ গাঢ় রঙে
ক্রমশ সবুজ হয়,সবুজ অরণ্যের মতো
একটি সবুজ মানচিত্র।
সবুজ মানচিত্রে লাল বৃত্তে বন্দী সূর্যটা
ছড়ায় প্রগাঢ় মমতা, মায়ের আঁচলের মতো।
পুরনো শাড়ির নবীন কাঁথার মতো
হাজারো ঐতিহ্যে লালিত স্বদেশ আমার।
ঘ্রাণ ভেসে আসে,অস্তিত্বে জানান দেয়
চিরচেনা যেন সব রূপ-রস,
আর রচিত হয় অনবদ্য একটি কবিতা।
কবিতায় আমার স্বদেশ হাসে,আমার মাটি হাসে
আর গরবিনী মায়ের হাসি মূর্ত হয়ে উঠে।
পাষাণ প্রাচীরের শ্যাওলা হয় অপসৃত,
দূর হয় শকুনীরা ত্রাসে,
ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হয় একটি শুভ্র চিহ্ন,
ঝিলের জলে যার অবয়ব।
হাসে, খেলে,আর হাতছানি দিয়ে ডাকে স্বপ্ন জেতার নতুন যুদ্ধে,
মা থেকে আবার আরেকটি মা,আরেকটি মায়ের জন্ম,
এই মায়ের আঁচলে বন্দী স্বপ্ন জয়ের স্বপ্ন,
মা কখনও মাটি হয়, কখনও হয় প্রিয় আমার স্বদেশ।
অজস্র ভালোলাগায় অবশেষে তৃপ্ত আমি,
আমার স্বদেশ হাসে চিরদিন আমার হৃদয়বৃন্তে
মায়ের হাসির মতন,
যেখানে আমার স্বপ্নেরা জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়
আমারই সমগ্র সত্ত্বায়।
-
-----রচনাকালঃ সন্ধ্যে ৭.২০ ঘটিকা, ০৪/১২/২০১৮