মহৎ দান
---
লাজুক লাজুক ওই কিশোরী
ছন্দ নুপুর পায়ে,
ভীরু আঁখির মায়ায় জড়ায়
ওই যে সবুজ গাঁয়ে।
হরিণ টানা কাজল চোখে
স্বপ্ন মধুর দোলে,
তাই না দেখে বনের ময়ূর
কেমন পেখম মেলে।


হাসি গানে আপন মনে
কাটায় সারাবেলা,
প্রজাপতির ডানার মত
অনেক রঙের মেলা।
দূরের মাঠে আপন মনে
বাজায় রাখাল বাঁশি,
কোন যাদুতে প্রাণ হরিল
সেই সে মেয়ের হাসি।


একদিন এক শুভক্ষণে
চাঁদের মধুর ছায়ায়,
বাঁধা পড়ে দুটি হৃদয়
অনেক আপন মায়ায়।
স্বপ্ন হয়ে নামল হেসে
মাটির পৃথিবীতে,
অবুঝ এক দেবশিশু
চিরদিনের রীতে।


সেই শিশুটির  মুখে ফোটে
আধো আধো বোল,
মা ডাক শুনে ভরে উঠে
নবীন মায়ের কোল।
কিন্তু ওরা তীব্র স্বরে
দিতে এল বাধা,
তোমার ভাষা স্তব্ধ হবে,
উর্দুতে সব সাধা।


বজ্র কণ্ঠে তেড়ে এল
সেই শিশুটির বাপ,
ধরব চেপে টুঁটি তোদের
নেই কোন নেই মাফ।
বুলেট এসে কেঁড়ে নিল
সতেজ দেহের প্রাণ,
রক্ত সাগর পাড়ি দিয়ে
পেল মায়ের ঘ্রাণ।


রিক্ত করে নিঃস্ব করে
দিয়ে নিজের জীবন,
ওই শিশুটির মুখের বুলি
অটুট আজীবন।
সেই কিশোরী ধূসর চোখে
আকাশ পানে চায়,
কুঁচকানো গাল তবুও বুঝি
খোঁজে ভীষণ মায়ায়।


হারিয়ে গেছ কবেই তুমি
অনেক তারার ভীড়ে,
কিন্তু তুমি বর্ণ মালায়
আসছ ফিরে ফিরে।
কেমন করে ভুলবে সবে
তোমার অবদান,
বাংলা ভাষায় কথা বলে
এ-যে তোমার মহৎ দান।
১৮/০২/১৮