নরসুন্দা ও আমাদের গল্পগুলো
--
নরসুন্দার পাড়ে কাশবন ছিল,
ছিল না করচের সারি।
ও আমাদের গ্রামের বাড়ীতেই ছিল,
তবুও আমাদের গল্প বলায় কোনো কমতি ছিল না;
প্রতিনিয়তই আমরা গল্প তৈরী করেছি কত, পরস্পরের জন্য।
কখনও আমরা নিশ্চুপ, কেবল দৃষ্টি পেরিয়ে যেত দিগন্ত,
মন পেরিয়ে যেত সীমানা---
একই সাথে দুজনে আস্ত পৃথিবী পরিভ্রমণে যেতাম।
সে-ও অন্য আরেকরকম গল্প,
বাতাস সে গল্প শুনতে কান পেতে রাখত,
আর নরসুন্দার জল!
পরম সোহাগে তির তির কাঁপত।
কোনো গল্পই বোধ করি জীবনভর চলে না,
গল্পটা দিক বদল করে,
গল্পের প্রয়োজনে পাত্র পাত্রীও বদলে যায়।
নরসুন্দার পাড়ে এখন অন্য কোনো যুগল
গল্পের বিনিময় করে,
আর আমাদের গল্পগুলো টুকরো করে দিয়ে,
তুমি চলে যাও অন্য একটি গল্পের দেশে।
নরসুন্দার জল আমাকে প্রায়ই আমাকে প্রশ্ন করে,
তোমার কথা জানতে চায়।
আমি নিরুত্তর থাকি, আসলে আমি তো তোমার হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা জানি না,
আমারও প্রশ্ন জাগে মনে
কেন তুমি চলে গেলে!
আমাদের গল্পে তো কোনো জটিলতা ছিল না,
সহজ সরল গল্প ছিল।
আসলে এটাই নিয়ম যে গল্পগুলো একদিন শেষ হয়ে যায়,
আর কথকেরা যে যার মত প্রস্থান করে।
কেবল নরসুন্দা নামের একটি নদী অনেক গল্পের স্বাক্ষী হয়ে থাকে,
সাক্ষী  থাকে কাশবন, আর শরতের আকাশ।
শিউলী ফোটার দিন এলে আমার তোমার কথা মনে পড়ে না,
নরসুন্দা বিষয়ক যাবতীয় কিছু মনের ভেতর তোলপাড় করে,
আদতে নরসুন্দাও হারিয়ে গেছে সেই কবে আর


আমিও হারিয়ে যাই অনেকগুলো হারানো গল্পের সন্ধানে।
২৮/০৮/২০