প্রত্যাবর্তন
---
এই চেনা পথ ছিলো বড় আপন
বহুদিন, যেন অযুত বর্ষ ধরে,
ছিলো যুগলবন্দী জীবনের সাথে।
ঝড় থেমে যায়, নদীও মিলায় ভাটিতে,
কখনো বা হয় নক্ষত্রের পতন।
কাল মিলায় মহাকালে,
ছায়াপথে হারায় অগণিত তৃষিত দৃষ্টির প্রক্ষেপণ
সময়ও একদিন শেষ হয়ে আসে,
যেমন পথের শেষ হয় গন্তব্যে।
অতঃপর তুমি নেমে এসো রাজপথে,
সাধারণ মানুষের একজন হয়ে।
তোমার ঘড়ির কাঁটা এখন তোমারই অধীন,
নেই তাড়াহুড়ো, বড় সুস্থির আর অচঞ্চল সময়
তুমি অবশেষে পেয়েছো ফিরে, সেই আগের মতো।
ওখানে ছিলো সুরঞ্জনা, যুবকের সাথে কথা বলা যার
নিষিদ্ধ ছিলো।
তোমার সুরঞ্জনা, একান্তই তোমার,
যার চোখে তুমি স্বপ্নের বীজ বুনেছিলো।
প্রতারিত আক্ষেপ নিয়ে অবশেষে তুমি আমার হলে,
আমাদের পথচলা শুরু কোনও এক রৌদ্রজ্জ্বল দিনে,
পিছনে ছিলো গাঢ় অন্ধকার,
সামনেও তাই, যেটুকু আলো সঞ্চিত ছিলো আমার
তাই নিয়ে নির্ভয়ে তোমার হাত ধরেছি আমি।
আমার শক্ত মুঠোয় বন্দী তোমার হাত,
যতটুকু ছিলো অপূর্ণতা,
বিশ্বাস সেখানে পূর্ণতা দিয়েছে, দিয়েছে ডানা মেলার পূর্ণ স্বাধীনতা।
তুমি তোমার দীর্ঘ যাত্রা শেষে যখন ক্লান্ত এখন;
আমি রয়েছি পাশে,
আমি তোমার সুরঞ্জনা নই,
নই তোমার কল্পলোকের রাণী,
তবু আমার মুঠোয় পরম নিশ্চিন্তে বন্দী তুমি।
বাকীটুকু পথ তুমি একাকী নও তো,
গভীর মমতায় একজোড়া চোখ তোমার সঙ্গী এখন,
পথের শেষে আবার শুরু হয় নতুন পথ।
আমিই তো আছি, সেই কবে থেকে আমি আছি,
কখনও সরবে, কখনও নীরবে আমিই আছি
সাথে তোমার।
অঢেল সময়ের সাথে আবার যাত্রা করি শুরু,
চলো আবার নতুন করে,
একা নও তুমি, আমি আছি জেগে
শুষ্ক বিবর্ণ জীবনের গহীন তমসায়
আমি আছি জেগে তোমার পাশে, তোমারই সাথে।
তুমি চলো,অশ্রুটুকু মুছে নাও আঁচলে আমার,
তারপর দুজনে বসে একসাথে জোছনার খেলা দেখি,
আমরা অনুভব করি সময় আর জীবনের ঘ্রাণ
একসাথে, পরম আশ্বাসের বিশ্বাসে।
তোমার হৃদয়ে থাকুক সুরঞ্জনা,
আমি থাকি তোমার চোখের সীমানায়,
তোমার অখণ্ড অস্তিত্বে আমি থাকি
আমি থাকি দুয়ারে দাঁড়িয়ে তোমার,
অবশেষে আমারই কাছে হয় তোমার প্রত্যাবর্তন।
২৭/১২/১৮