তারপর হাসতে হাসতে চলতে ফিরতে কথা বলতে বলতে চলে যাবো,
যেতে হয়, সবাই যায়, যাবো ঠিকই, চলে যাবো কোন সিদ্ধান্ত নেবার আগেই,
কামিজের ভাঁজে, আঁচলগিঁটে, কাঁচলের ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে রেখো গোপন কথা,
জানা হবে না, জানব না, অন্য কেউ  খুঁটে খাবে ক্ষুধার্ত চঞ্চুতে স্বর্ণশস্যকণা।


রাতের মত আর ফিরব না, ফিরব না ভোরের মত আর কারো দরজায়।
চাঁদ-সূর্য, জোয়ার-ভাটা, দিন-মাস, ষড়ঋতু-বারোমাস কিম্বা বসন্তের মত,
আর কোনদিন ফিরব না এই জনারণ্যে; জল-বায়ু, আলো-আঁধারিতে,
ভালোবাসা-ঘৃণা, রাগ-রাগিনীর অনুরাগের এত ভীড়ের মধ্যে আসব না আর।


খুঁজব না কাউকে, না, তাকেও না; পাতব না ভিক্ষুকহাত ফিরব না ভগ্নহৃদয়ে!
বুকভরা ভালোবাসা তার বুকেই থাক, একটা পুরো জীবনতো কেটে গেল তবু
বুঝল না, বুঝাল না,- শুনল না, শুনাল না কোন কথা, বাঁধল না বাসা চৈত্রশেষে,
থাক তবে এই জন্ম, খড়কুটো, স্বপ্নসাধ, আদর-সোহাগ মুখ থুবড়ে পড়ে থাক বুকে।


ভাঙ্গা দালান ঝোপঝাড় ইঁটের ফাঁকে বটচারা কেউটের ফণা, গোখরার হিসহিস,
আসমানী কিতাব রামায়ণ বাল্মিকী মহাভারত গীতা বেদ বাইবেল ত্রিপিটক।
এলোমেলো অগোছালো পড়ে থাক বিছানা বইপত্র কবিতার খসড়া খাতা,
পড়ে থাক প্রতীক্ষা, ধৈর্য-সহ্য, বাসনা মৃত ভ্রমর ফড়িং প্রজাপতি মৌডানায়।


সোহরাওয়ার্দীর সবুজ ঘাস চন্দ্রিমার লেক রমনার বটতলা শিল্পকলার চিলেকোঠা,
অচেনা পারফিউমের সুঘ্রাণে ভরে থাক সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা আঁচল বিছিয়ে।
রাত-বিরেতে নগর-বন্দর, অলিগলি-রাজপথ, গ্রামগঞ্জে সস্তাশরীর বিলাক সম্ভ্রান্তবণিতা,
ফিরেও তাকাব না, গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত ও বসন্তে আর কোনদিনও না।


কেউ কেউ হাসি তামাশায় পরজন্মের খুব লোভ দেখায় পাড়া-প্রতিবেশী হবে,
ছোট্টবেলা থেকেই প্রেম প্রেম ভাব জমাবে, তারপর শুধু ভালোবাসা সাথে থাকা।
এ জম্নে যারা ফিরে তাকায় না, পরজন্মে এই পথে এসে পায়ের ধুলো দেবে!
সে আশা করি না, কি জানি হলে হতেও পারে, নরোম কাদার মত মনতো!


বিশ্বাস অবিশ্বাস জানে চৌষট্টিকলার ফাঁদ পাঁজরে পাঁজরে ঘাস-দূর্বা-জলে,
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে লালিত বিশ্বাসে একবার ফাঁসলেই বারোটার ঘণ্টাধ্বনি!
প্রস্তুতিপর্বের শেষসিঁড়িতে কেমন যেন অচেনা ঠক ঠক শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে,
চলে যাবো, যেতেই হবে অপূর্ণ স্বপ্ন-সাধ আশা-আকাংখা প্রেম-ভালোবাসা বুকে নিয়ে।
--------------------- ---------------------
৩রা মে ২০২০, ২০শে বৈশাখ ১৪২৭, রবিবার, সকালঃ০০ঃ৪৫ মিনিট, (+৬)
Unauthorized use or reproduction for any reason is prohibited.


** ঘুমাব,  বাতি নিভিয়েছি, বালিশে মাথাও রেখেছি, হঠাৎ মনে হ'ল কে যেন বুকের মধ্য ধাক্কা মেরে বলছে, ঘুমালে তো ঘুমাবেই, কথাগুলোত আর বলা হবে না। ঘড়িতে এলার্ম দেওয়া আছে ঠিকই কিন্তু যদি কাল সকালে জীবনের এলার্ম না বাজে, যদি আর না ওঠো!


উঠলাম, আলো জ্বাললাম,  খাতা কলম হাতে নিলাম, তারপর এইটুকু প্রয়াস। লেখালেখির জীবনে এমন রাত জেগে লেখার ঘটনা অনেক আছে, স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে উঠে লেখার ঘটনাও আছে তবে এই রকম ঘটনা এটাই প্রথম।