ক্ষমা চাইব না,
কেন চাইব ক্ষমা কি অপরাধ!
পূর্বপুরুষের রক্তস্রোত ধমনীতে
উত্তরসুরীর কোন অপরাধ নাই।
তারা খোদার ষাঁড় উন্মুক্তস্বাধীন।


যা ইচ্ছে খুশী
করবার অধিকার আছে তাদের,
উলট পালট করে দিতে পারে সব।
মুহুর্ত্বে বদলে দিতে পারে নিয়ম-
অনিয়মের চর্চিত চর্চায় নিবেদিত।


বিচার হবে না,
‘তণু’ তুই মরে গিয়ে অপরাধ করেছিস,
তোর বেঁচে থাকা দরকার ছিল খুব!
খাটাসগুলোর দাঁতের ক্ষত বুকে নিয়ে-
যোনিতে তাজারক্ত নিয়ে সুরতহালে।


তুই কেন মরলি,
উঠে আয় কবর থেকে, একবার এসে
বলে যা তোর মৃত্যুর কারন কি ছিল!
খোজা ক্লীবগুলো দুই দুইবার ময়না
তদন্ত করেও মৃত্যুর কারন জানে না।


নিশ্চিত হতে পারেনি
ধর্ষনের বিষয়টা; ন্যাকা সুরে বলছে
যৌনসংসর্গ ঘটেছে! কবে কখন তাও
বলতে ব্যর্থ দেশের উচ্চতর চিকিৎসা
বোর্ড। কবরে তোর হাসি পাবে শুনলে।


বিচার হবে না
তোর মতো কত ‘তনু’ ধর্ষিতা হচ্ছে
ওতো জীবদ্দশায়ই দেখেছিস চোখে।
নতুন করে কি বলার আছে বলতো।
দেশটা এখন বাঁদর নাচের উঠোন।


আইন কানুন শাসন,
গজ ফিতেয় মেপে মেপে দর্জির দোকানে
কাপড় কাটার মতো কাটছাট হয় এখানে,
উর্দ্ধত্বন কর্মৃকর্তাদের খেয়ালখুশীতে কলকাঠি
নড়ে হাতের ইশারায়; গোপন দূরালাপনে।


এসব বলতে হয়না,
আমজনতা খুব বেশী বোকা ভাবলে ভয়ানক,
ক্ষেতের ধানের চালে ভাত খায় সবাই, পুকুরের
মাছ, পালের গরুর দুধ। ঘি মাখন জুটুক বা
না জুটুক পালানের কাচামরিচ পিয়াজ খায় ওরা।


শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত
যন্ত্রের বাতাস প্রয়োজন হয় না; প্রাকৃতিক হাওয়া
জাম-জামরুলের পাতা, নদীর বুক ছুঁয়ে আসা
নির্মৃল বাতাস বুকের ছাতিতে ধরে সকাল বিকাল।
দীর্ঘ্যশ্বাস আগুনের ফুলকি হয়ে উড়ে যায় আসমানে।


‘মিতু’ মরল সেদিন,
স্বামী তার পুলিশের অফিসার, সাত বছরের ছেলে
চার বছরের মেয়ে রেখে। চট্টলার খোলা রাস্তায়
পড়েছিল রক্তাক্ত দেহ। কি নির্মৃম রহস্যজনক মৃত্যু।
আটটা ছুরির আঘাত, দুই দুই বার পিস্তলের গুলি।


হাসিখুশী গৃহবধু
কারো সাতে পাঁচে নেই, দিব্যি নামাজ রোজায় ব্যস্ত
ঘর সংসার, স্বামী সন্তান নিয়ে কাটছিল তার দিন,
তবু রক্ষা পেল না, স্বামী তার শান্তিরক্ষক, দেশসেবক।
দূর্নীতি দমনে নিজেকে উৎসর্গীকৃত এক সাহসী সৈনিক।


তারও মৃত্যুর কারন
এখনও হয়নি উদঘাটন। চলছে সুরতহাল, তদন্তকমিটি
গঠন, পরিবর্তৃন, সন্দেহভাজন গ্রেফতার, সাড়াষি
অভিযান। দিনের পর দিন বেড়ে যাচ্ছে হত্যা, গুম,
ধর্ষৃন, শ্ললিতাহানি, যেন অনৈতিকতার অভয়ারন্য।


মানুষ শান্তি চায়,
দু’বেলা দু’মুঠো খাবার চায় ক্ষুধার্তৃ মুখে,
ঘুমাতে চায় নির্ভৃয়ে। খোলা দরজায় হুহু
দখিনা বাতাসে চায় বুক ভরে শ্বাস নিতে।
কে দেবে সে নিশ্চয়তা! সবাই স্বার্থান্ধ।


রেলের বগি জুড়ে
দিলে হুড় হুড় করে ছুটে চলে একের পিছে
অন্যটি, দেশের মানুষ হুড়মুড়িয়ে ছুটে চলে
স্বার্থের গন্ধ পেলে। ভুলে যায় নৈতিকতা।
একটুও কাঁপে না হাত কাউকে খুন করতে।


পূর্বৃসূরী থেকে প্রাপ্ত
আশীর্বাদে বলীয়ান, যেন ক্রমাগত অপরাধ
প্রবনতায় অন্ধ বিবেকবর্জিত কিছু সংখ্যক
মানুষ নামের কীট; পুরো দেশটাকে নির্দ্বিধায়
দ্বন্ধ্ব আর দম্ভের আশ্রম বানিয়ে তুলছে ক্রমশ:।


উপরের চাপ বলে,
নিজের ইমেজ বাঁচাতে ব্যস্ত এখন যে যার
নিজস্ব বলয়ে। স্বেচ্ছায় জীবন দিতে কে চায়
জগতে! চিরন্তন মৃত্যুর কাছেই দূর্বলতা সবার।
আপন প্রাণই প্রিয়তর সবার; এটাই বাস্তবতা।


প্রশাসন, ডাক্তার, আইন
সব একসূত্রে গাথা, এক আঙ্গুলের অজানা
ইঙ্গিতে চলছে লাটিমের ঝিম ধরা ঘুর্নাবর্তে।
ক্ষমতা আর পদের দম্ভ লোভের চাকায় যুক্ত।
আপোষ মীমাংসা সব যেন শালিসের তালগাছ।


এ দেশের মাটি,
আবার রক্তের বন্যায় ধুয়ে পবিত্রতা আনতে হবে।
মুখে যে যত বলুক ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’ সত্য নয়,
ওটা মুখের কথা মনের মধ্যে বাজে অন্য সেতার।
লোভের উর্দ্ধে কোন মানুষ নেই; সবতো ভেলকি।


তণু, মিতু, তোমরা
আজ না হোক একদিন জানবে এই সত্য তোমাদের
হত্যাকারীরা তোমাদের মারতে পারে নাই; মারছে
নিজেদের। তোমরা রয়ে গেছ লক্ষকোটি জনতার
মুখে মুখে; অন্তরের অতলান্তে। মমতার মোড়কে।
============== ==========
১৩/৬ থেকে ১৪/৬/২০১৬, সোম ও মঙ্গলবার