যাপিত জীবন
খাতুনে জান্নাত
...............
স্লেট‐কোলে দিনকাল মুক্তো ছড়ায়,
কুলায় ঝেড়ে নিই আতপ জীবন
ঘুরেফিরে মিহিন মৌসুম থেকে ছিটেফোঁটা স্মৃতির দহন
ঢেঁকিছাটা চাউলে আবীরমাখা জাউভাত
রোদ‐সুখ, পাখার বাতাস, ছড়াকাটা প্রহর প্রহারে।


তুমি-আমি চিনি না কাউকে
দিনগুলো চিনে রাখে
এখনো পথের বাঁকে হাত ইশারায় থামায় পলক
প্রাকৃত জনের কাছে শেখা সেই বর্ণের বাতাস
হাতপাখা দুপুর মায়ের কোল ঘেঁষে মেনিবিড়ালের আদরে
জাফরান দিন
সুষমা পলির গান
ছড়া আর গান
পিঠে-ভাজা ঘ্রাণ
আদরে উৎসুক শাসনেরও জোর কলেবরে
অক্ষরেরা এলিয়ে নেতিয়ে থাকে
স্লেট, খাতায়, ঝরা পৃষ্ঠার প্রদেশে...


মা’র কাছে শিখেছি সবক
ভাইবোনের সবক
সেই ভাইবোন সেই মা
সেই দাদীমা বিহীন বাবার নির্জন গল্প-বলা রাত
ছুটে যায়, আধা আধো সীমানা ডিঙ্গায়
দিনের ভিতর রাত রাতের ভিতর দিনরাত নেয়া
সহস্র জাগ্রত কাল--


দৈনন্দিনে মিশে থাকে ভাষা শহীদেরা
এ অক্ষর ও জ্যোতির্ময় দিনের আভায়...
ভাষা শহীদেরা অমর অজয়
দীর্ঘ দীর্ঘ দিন পার হলে
বটমূলের পাদদেশে চৈতালী রাতের পালাগান
শ্রদ্ধা ও আনত চোখের ভাষা ও ভাটিয়ালি
বিশ্ব বাগানে ফসল ফলায়
যে পথের বাঁক চলে গেছে আকাশ পথের ধারে
প্রিয় রঙ, প্রিয় প্রিয় ভুল গুলো স’য়ে ধানকাটা শেষে
শুয়ে থাকে ক্লান্তির ক’ফোঁটা ঘাম ও তৃষ্ণাসহ


খাতা থেকে যে ক’টা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে উড়িয়েছে ঘুড়ি ও রকেট
শৈশব খুঁজছে পথ
যুবাকাল খোঁজে পথ
প্রৌঢ়ত্ব খোঁজে অন্তঃদহন থেকে মুক্তির ভাসান...


যে পথে হয়নি যাওয়া কোন কালে
মুক্তির মিছিলে তারাও শামিল হয়
লক্ষ এক ভাষা ও শ্লোগান
যে পূর্বজন পাহারায় আছে শিউলি বিছানো বাগিচায়
আশীর্বাদ হ’য়ে ঝরে ফুল, আমরা কুড়াই।
জীবনের প্রথম ও শেষ গান অনন্ত দহন
মুক্তির মুক্তাঙ্গনে স্বাধীনতার অনন্তহীন সুখের স্মরণ
এ সবের ভাষা এক
স্বপ্নের ভাষাও এককে মিলায়...