কবিতার অন্তজ স্বর: কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা
খাতুনে জান্নাত
……………………………………………………………………………………………………………….
কত বিনিদ্র রাতের খসড়া এক করে তৈরি হয় একজন লেখক জীবন। পৃথিবী নীরব হলে জেগে উঠে একাকীত্ব। যে কোন কাজে গভীর নিমগ্ন হতে গেলে প্রশান্তি ও নীরবতা অপরিহার্য। ভাবনার করিডোর ধরে হেঁটে যায় হাজার বছরের মানুষের আর্তনাদ ও ঐতিহ্যের আবহ। যুদ্ধ, ধ্বংস, মহামারী ও প্রাণ বিয়োগ ব্যাথা, বেঁচে থাকার আনন্দ, প্রিয় কণ্ঠের অনুরণন, প্রতারণার প্রদাহ। নারীর প্রতি সীমাহীন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য, নির্যাতিতের ক্রন্দন। পাওয়া না পাওয়া বুকের কোথাও হিমের প্রহর কাঁপিয়ে দিয়ে যায় অথবা আনন্দের বাগানে ফুল ফোটায়। কখনো হৃদয়ের আকাশ ভরে তারায় তারায়। চায়ের চুমুক, সিগারেটের ধোয়া, পানীয়ের শিথিল নহর, খাতা, বই, কলম ও কাটাকাটি। কত রাতে ভেস্তে যায় সব আয়োজন। কত দিন রাতে আয়োজন হীন পাতার পর পাতা সাজতে থাকে, বাজতে থাকে বিরহের সেতার। অলক্ষ্যে সুর ও স্বরের সম্মিলিত ধ্বনি প্রতিধ্বনি কাব্যদেবী জেগে উঠে কোন অসতর্ক-সতর্ক মুহূর্তে। জেগে উঠে গদ্যের প্রতিমা। দার্শনিক মতামত। বিজ্ঞানী আবিষ্কারের খুশিতে বলে উঠেন, ইউরেকা। রাতের নাভিতে কত কালের মধুচন্দ্রিমা, শোলক বলা তিথি, প্রেমের অক্ষয় অনুরাগ, প্রিয় চুমুর চুম্বক, স্পর্শের বাহারি রঙধনু, সহবাসের প্রবাহমান সুখানুভূতি, আহরিত শব্দের পরিপাটি সংগম। মননের গভীর তন্ত্রীতে আলোড়িত হয় ছন্দের দোলা, বাক্য বিভা, করুণ কোন বার্তা। কখনো অনুভূতি রসাস্বাদনে অধরা কোন অনুভূতি লটকে ঝটকে থাকে; ধরেও ধরা যায় না। এমনি পেষণ তৈরি হতে থাকে সৃষ্টির জগৎ। কত দীর্ঘ ও নাতিদীর্ঘ বলয় হেঁটে আসা পৃথিবী, বিলীন হয়ে যাওয়া ফসিল, বৃক্ষের প্রেম কথা, অগ্নি ও প্রলয়ের গীতিকাব্য। ধূলিতে উড়ে আসে প্রতাপী বিলুপ্ত জাতির অশ্ব-খুর ধ্বনি। হৃদয় তন্ত্রীতে বেজে উঠে নিষ্পেষিত জনের ব্যথা ও বিড়ম্বনার শত বাধা ও বেদনার হাড়ের ইতিহাস।


পৃথিবীতে সেই টিকে থাকে যে নিজেকে বেশি মূল্যবান মনে করে। নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাকে মুখোমুখি হতে হয় সংগ্রাম ও সমজোতার। (যদি না শিল্প হয়ে উঠে কালোত্তীর্ণ। কালের প্রবাহে তা একসময় নিজস্ব বিভা বলে দাঁড়িয়ে যায়।)  এখানে ক্ষুন্ন হয় নৈতিকতা, করতে হয় দমন পীড়ন। সংগ্রাম দু’ধরনের এক নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি স্থায়ী করণের জন্য নিষ্ঠুরতম আয়োজন, আরেকটি দমন পীড়ন থেকে মুক্তি লাভের পথ কর্ম-পরিক্রমা। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ যে সর্বদা অন্যের কথা ভাবে সে নিজেকে পীড়িতদের পক্ষের জন মনে করে। সে নিষ্ঠুরতার হাত থেকে মুক্তির জন্য মানুষকে মানবিক হতে উৎসাহিত করে। মানব মনের অন্তর্গত সু ভাবনাগুলোর উদ্ভাসিত করণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। কেননা যে কোন সংগ্রামের সাথে জড়িত থাকে হত্যা, মৃত্যু ও ধ্বংস। লেখক নিজেকে উজাড় করে অন্যের নিমিত্তে প্রাণে বহন করে নিবিড় মমতা ও ক্রন্দন। তার মন মানবিকতার পদদলনে আর্তনাদ করে। একজন লেখকের প্রাণও শামিল হয় নির্যাতিতের বেদনা ও রক্ত-ক্ষরণের সাথে। তিনি সকল ধর্মের, সকল গোত্রের, দেশ ও কালের ঊর্ধ্বে অবস্থান করেন। শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখেন এক আলোকিত রূপময় শব্দ সম্ভার ও অনুভূতির আলোকে। আলোয় আলোয় মুগ্ধ শব্দাবলী মুক্ত হয়ে পাঠকের অন্তঃকরণে সুপ্ত ও মগ্নতার অনুভূতি সৃষ্টি করে। ভাষা ও বোধকে তৈরি করতে হয় একদিকে নির্যাতিতের ধারক বাহক রূপে অন্যদিকে স্বাধীনতার আলোকোজ্জ্বল স্তরের সোপান ধরে তোরণে পৌঁছার সংকল্পে। যা মিথ্যে তা ঝরে পড়ুক, যা আদি ও আসল তাই মূর্ত হোক। তবে কুসংস্কার ও অজ্ঞতা বা অত্যাচারের নিষ্ঠুর হাত দমনে যে মনোসংগ্রাম ও আধুনিকরণতাকে স্বাগত জানাতেও দ্বিধা থাকে না একজন সৃষ্টিশীল মানুষের মনন ও চিন্তনে।


যদিও মানব জীবনও সংগ্রাম ও কৌশলে টিকে থাকার ইতিহাস। হাজার হাজার শতাব্দী ধরে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মানুষ পরিবর্তিত করে এসেছে এক কোষ থেকে বহুকোষী পর্বের স্তর। এ পর্বের কিছু মানুষ মন ও মননে পশুত্ব স্তর থেকে উত্তীর্ণ হয়ে মানবিকতার স্তরে পৌঁছেছে। এটা ধ্যান ও সাধনার নিরন্তর শৈল্পিক মনোবৃত্তি। এখানেই মানুষ শুধু ভোগী নয় লালন করে স্রষ্টা-সত্তা। হয়তো বিবর্তনের হাত ধরে সৃষ্টিশীল মানুষ আরও নতুন কোন অবয়বে নতুন কোন স্তরে পৌঁছে যাবে; এটা কল্পনা, আশা বা স্বপ্ন যাই হোক স্রষ্টা-মানুষ ক্রিয়াশীল থাকে ভবিষ্যৎ পরিভ্রমণে। শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক অনুধ্যান করেন সৌন্দর্য সৃষ্টির। মনের গভীর অতলে নাড়া দেন। পৃথিবীর রুক্ষ-আবিলতা ঢেকে প্রকৃতির রূপ মাধুরী ধারণ করেন আপন প্রতিভার স্ফুরণ ঘটান । সে সৌন্দর্যে ডুবে পাঠক অর্জন করে সৌন্দর্য পিয়াসী অন্তঃকরণ ও শৈল্পিক চেতনা। যা যুগে যুগে মনের পশুত্ব বিসর্জন দিতে সহায়তা করে। এ চর্চা মনকে করে শাণিত, কেমন করে উজ্জীবিত। প্রকৃতির রূপ বৈচিত্র আত্মিক জগতে প্রবেশ করে শিল্প স্ফুরণ ঘটায় শিল্পীর। যা সমাজকে, দেশকে জগৎকে আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত করে।


কবিতা অন্তজ শ্রেণির মুখের ভাষা। চর্যাপদের পদাবলীর আশ্রয় থেকে শুরু হয়েছে বাংলা কবিতা তথা বাংলা সাহিত্যের পথচলা। বৈশ্বিক বিভেদ ও সংগ্রাম, পতনের অন্ধকার যুগ পার হয়েও যুগে যুগে কালে কালে বৌদিক চিন্তা চেতনা ধারণ করে কবি, সাহিত্যিক সৃষ্টি করে চলেছেন নিজস্ব অনুভূতির প্রকাশ। সাহিত্যের জন্য তৈরি হয়েছে ভাষার অনুপম বৈচিত্র। কবিতা প্রবেশ করেছে নিজস্ব রূপ ও অবয়ব নিয়ে নতুন নতুন আঙ্গিকে নতুন নতুন শিল্প ও নান্দনিক রূপময়তায়।  কোনো কোনো কবি পরিবর্তন করেন সাহিত্যের ধারা। আর সাহিত্য পুরনো খোলস ভেঙে নতুনতর আবেশে স্নিগ্ধ ও লাবণ্যময়ী হয়ে প্রতিভাত হয়, দ্যুতি ও বিন্যাসের স্বাক্ষর রেখে যায় কালের কপোলে ।


কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উচ্চকিত ঘরানার বিদগ্ধ কবি। তাঁর পথচলা দীর্ঘ। ষাটের দশক থেকে অদ্যাবধি। কবিতাও তার চলার পথের উজ্জ্বল সাথী ও সংখ্যাধিক্যে অগণন। বাংলা সাহিত্য তথা বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ধারণ করে প্রকৃতির অনন্য শৈলীতাকে বহন করে তিনি সৃষ্টিশীলতার সরস বীজ বপন করেছেন। আজ তা ফুলে, ফলে সুশোভিত তরুলতার মায়াময়তা ও বৃক্ষ স্বরূপে ছায়া দান করে চলছে অথবা পাড় ভেঙে ভেঙে এগিয়ে চলছে সাহিত্যের নদী নতুন প্রভায় নতুন আলোড়নে। তিনি যেমন ঐতিহ্যে ঐতিহ্য মণ্ডিত এবং বর্তমানের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ের ক্রোধ ধারণ করেন। তেমনই প্রেমের, বিরহের আদিরস ও আগামীর শাণিত ধারায় শিল্প ও নান্দনিকতায় চরম উৎকর্ষ সাধন করেছেন। তাঁর প্রজ্ঞা, তাঁর সৃষ্টিশীল কাজ কালক্রমে তাঁকে জাতি সত্তার কবি হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে; দাঁড় করিয়েছে সফল ও উজ্জ্বল পাদ প্রদীপের আলোয়।
‘আবার কাকে যে তুমি হারাতে এসেছো?
এসো তবে চণ্ডালিনী প্রকৃতির মতো।
আমি নই তপোবনে শালপ্রাংশু ঋষি,
আমি নই গোলাপের বংশধর অনঙ্গ অপাপ।’
(শিবরঞ্জনীর ঝিঁঝিঁ)


'আলোক পাপড়ি হয়ে উড়ে যাই স্বর্ণগুল্ম, হরিৎমিথুন
সরোবরে বনহংসী করে জলপান
হয় গুম খুন
আমাদের ঘামে-রক্তে নুন, শুধু নুন'


উপমা, রূপকল্প, উৎপ্রেক্ষা ও অলঙ্কার, ভাব ও অনুভব শব্দে শব্দে মন্দ্রিত, অনুরণিত হয়ে প্রাণে সঞ্চার করে শিল্পের দ্যোতনা। কবি হারিয়ে যান প্রকৃতির আবহে। যেখানে আমাদের মন গ্রহণ করে নিজেকে ছড়িয়ে দেয়ার সুষমতা ও অতীত থেকে ভবিষ্যতে নিজেকে ভেঙে ভেঙে প্রকাশ করেন সাহিত্যের ইতিকথা।
'সব পাখি ডাকছে তোমাকে,
ঝাঁকড়া সবুজ ঝোপে খয়েরি শালিখ,
লাফিয়ে লাফিয়ে আঁকে টিয়ে রঙ পথ,
পাতার আড়ালে হাঁটে বাদামি চড়ুই,
ভোররঙ শেফালি ও জুঁই,
তরঙ্গের চুড়ায় চুড়ায় জেগেছে পাখিরা।'


প্রকৃতির শোভাময় অলঙ্কৃত পথ হাঁটতে হাঁটতে কবি ভেসে যান দেশ থেকে এক মহাবৈশ্বিক পরিক্রমণতায় আরও দূর গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে বিশালতার অনন্য মায়ায়। ভাষার অবগুণ্ঠন উন্মোচিত হয় কবির কথায় 'যত দূর বাংলা ভাষা তত দূর বাংলাদেশ'। আর মানুষই শুধু আলোকিত হাতে নিতে পারে আলোর মশাল। মানুষের রক্তে রক্তে ফুটে উঠে আলোর গোলক। কবি নিজে বলেছেন আমি আগে মানুষ তারপর বাঙালি। পৃথিবীর দুর্দশা ও ধ্বংসের সময় মানুষকে জাগিয়ে তুলতে পারে আলোকিত মানবিক মানুষ।
‘সমুদ্রের মুখোমুখি মানবসাগর
ফুটে ওঠে সুর্যাবর্তে, আকামডানায়
আলোকমানুষ এসে জলে বাঁধে ঘর
মানুষেরা তরঙ্গের জন্ম সহোদর।
(আলোকমানুষ)


‘ছায়ামূর্তি জোছনায়
সমস্ত ব্রম্মাণ্ড মুছে দেবে বলে ক্রমশ বিশাল হয়
আসাকুসা সমতুল্য কোনো এক জায়গা পেরিয়ে
একা একা দাঁড়টানা নৌকায়
নদীমুখ থেকে সমুদ্রের মোহনা অবধি
জাপান স্রোতের ওই উন্মাতাল তরঙ্গের দিকে।’
(মিলায়, মিলায়)


কবি নুরুল হুদার কবিতা ভিন্ন। কবিতার ভাব, ভাষার সমন্বয়, বাক্য গভীর জালবুনন, মিথ ও অনভূতি  প্রকাশ করছে ভিন্নমাত্রায় তার কবিতার অবয়ব। খুব ছোট অবয়বেও কবিতা ভাবনার অতলে প্রবেশ করিয়ে রাখেন পাঠক।
‘বালিকা বালক চেনে
বালক বালিকা
আমাদের দেখা হলো
আগামী কালিকা।’
( আগামী কালিকা)
‘যে ঋণে আবদ্ধ আমি
সেই ঋণে তুমি
কবিতা কবির সত্য
স্বপ্ন ঝুমঝুমি।’
স্বপ্ন স্বপ্ন দৌড় বাস্তবতা নিরীহ, বনেদি। তার গভীরতা সময়ের বুকে স্রোতের মতো ভাঙনের খেলা। ঝুরঝুর ঝরে যায় মরীচিকা। ঝুমঝুমি আর নিথর নিস্তব্ধ। আলেয়ার আলো যেমন হারিয়ে যায় কাছে আসলে। শুধু ইশারা ধুধু বালুকণা। কবিতা সময়কে গ্রন্থিত করে, বর্তমানকে ভবিষ্যতের কাছে পৌঁছে দেয় মন্দ্রিত শব্দসম্ভারের উজ্জ্বলতায়। কবি নুরুল হুদার কবিতাও প্রেম-বিরহের দ্যুতি ছড়িয়ে হৃদয়কে কাঁপিয়ে দিয়ে কিছু সময় স্তব্ধ করে রাখে।


‘এতভাবে আসো তুমি এত হাবেভাবে
কুশনে গদিতে বসো কোন মনোভাবে,
হাত যায় রাতপ্রান্তে, পা যায় খোসায়,
মন যায় মনান্তরে, শরীর খাঁচায়.
খনার দু’ঠোঁট যায় সত্য বর্ণনায়,
ভালোবাসা বেশবাস আলুথালু, হায়!
মৎসপুচ্ছ, হংসগ্রীবা, হরিণীকোমর,
পশর নদীতে ডুবে কে কবে অমর
যদিও জানি না আমি, জানি ব্রতকথা
গরান সুন্দরী দেয় জন্ম অমরতা
রাজকীয় বাঘ এসে হরিণীকে খায়,
ভালোবাসা বেশবাসে আলুথালু হয়।
বাঘ নই, তুমি নও দুঃখিনী হরিণী
আমাকে ধরোনি তুমি, আমিও ধরিনি।’
(বাঘ ও হরিণ)


মূলত কবি হলেও সাহিত্যের প্রায় সব কটি শাখায় তাঁর সরব উপস্থিতি। জীবনকে ছেঁকে ছেঁকে তিনি সংগ্রহ করেছেন সাহিত্যের রসদ। কবিতা, গল্প, গান, উপন্যাস, ফোকলোর অনুবাদ কর্ম- সাহিত্য দিগন্তে তিনি ছড়িয়েছেন অমূল্য সম্ভার তার বিরল চেতনার পটভূমি অর্থাৎ অন্তজ দর্শনের মনোরম আখ্যানময় অধিষ্ঠান সাহিত্যমোদিদের দিয়েছে বিশেষ অনুপ্রেরণা। কবিয়ালদের কাব্যকৃতি ও পুঁথি দর্শন থেকে সাহিত্যের ভিত রচিত হয়ে তা সঞ্চারিত হয়েছে বিচ্ছুরিত আলোক সঞ্চার; কবির মননে শব্দে, শব্দে অনুভবে অন্তর্লীন। যদিও কবি নিজেকে বাঙালি বলার পরে মুসলিম গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বলে থাকেন। এখানে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন কবি। যা যুগে যুগে কবি ও কবিতাকে নির্দিষ্ট ভগ্ন ও গোষ্ঠিভুক্ত করে থাকে। আশাকরি তাঁর সাহিত্য মুক্ত ও মুক্তির ধ্যানে নিবিষ্ট থাকবে।