রাধাচূড়া-কৃষ্ণচূড়া


                                পাঁচটি বছর আমার দীর্ঘশ্বাসের স্বরগুঞ্জে
                                তবে অনামিকা,
                                চূড়ায় আজ তবু যে তোমার গেরুয়া সাজ
                                স্বজাতির ধর্মগুনে নিজে বৈরাগী রং-খোঁপা  
                                নাকি পাঁচটি বছরের  উপেক্ষা
                                নতুন মুদ্রায় দিলে!
  
                                 কৃষ্ণচূড়ার আবির জেনো
                                 আমার বুকেই জ্বলছে শুধু
                                  রক্ত যদি কষ্টের রং
                                আমার চোখেই খেলছে শুধু ।


                                   আসছে বছর ফাল্গুনিতেই
                                    মূদ্রা নতুন কোথায় পাবে
                                      কৃষ্ণ যখন চক্র হাতে
                                   এক মানবীর রক্ত চাবে?


                                     02.
                   তুমি


কৈশোর ,তারুন্যে এমনকি শৈশবের ভরা ভাদরে
  শুয়ে উর্ধ্বপানে দেখে দেখে চুমকি বসানো
                 রুপোর চাদরে।
  যাদের কথা ভেবেছি , সেইসব স্বপ্ন-আগুনে রমনী
  যারা হয় আমাকে ,নয়
  আমি যাদের ভালবেসেছি
  তাদের সবাই একে একে একেলা করেছে
  নয় ,
  হয়েছি ,অনিবার্যভাবেই।
  শুধু তুমি যাওনি আমাকে ছেড়ে ।


  মাঝে মাঝে এখন যখন
                 সাদা পাঞ্জাবী পরে ,সাদা পায়জামা পরে
                   সঙ্গীতের মৃদু ধ্বনিতে ,নিপাট চুলে
                   সদ্য গোসলের আমেজলাগা ঠোঁটে
                   খালি ঘরে বসি ,তোমার জন্যই শুধু ।
   প্রথম তোমার আস্বাদ ,
                            সাদা বর্নে আগুনে রঙে ,
                             নীলচে ধোঁয়ার ,মিষ্টি ভুরভুরে সুবাস ।
     একটু একটু করে আগুন লাগায় যেন
                                               তোমাকে কষ্ট দেবনা ।
       এরপর  একে একে সময় পরিক্রমায় সবাই ,
                                                        কেউ আগে ,কেউ পরে বাতাসে মিশে যায়।
                           আশ্চর্য সুখ পাই ।
         কিন্তু প্রথমজনের মজা সত্যিই অন্যরকম।


                                    03.
ভালবাসা ও প্রেম


কর্জ করে অনুমান করি এই দ্বীপ জ্বেলেছি
নয়নতারা অনুমান করো এই হৃদয়ে ধরেছি


এ তো নয় প্রেম
যারা সন্ধ্যায়
সকাল আলো
জ্বেলেছিলে


তাদের বলি ।


যখন ভালবাসা ছিল সাগরের জল জ্বলা কিছু
লুটোপুটি বাতাসের হুমকি;আর একা কোন
লোনা ঘ্রাণ;সাদা নক্ষত্র


সে তো ভালবাসা
নয়;আজও যারা
পৃথিবীতে এসে
নির্জনে ভালোবাসে


তাদের বলি ।
  
                                04.
দ্বিতীয় প্রহর


নি:শব্দ রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরে
সাক্ষী রেখেছি এক বলাকারে
সে ছিল দূরে, যোজন যোজন
ছিলনা বাহুতে বল ,অবশ
সময়ে ,তাই দ্বিতীয় প্রহরে নিঝ্ঝুম;
দিবস -বলাকা বিরহী কেঁদে ফেরে ।


বাণ মেরে তারে লাল নিশানে করে
আমার একার রাত্রি আকাশে ,
উড়াবো না;
ফাঁদ পেতে তারে ঘুঘু-ধরা ধরে;
আমার একার দিবসে
মাতবো না;


এই রাত্রি, দ্বিতীয় প্রহর,অচেনা মেঘের
আজব শহর ,বলাকারে দেয় ছুটি
আরবার যামিনী এলে ,নিশুতি ,
চলে যাব মেঘেদের নীড়ে ,রোদেলা ছায়ায়
যেখানে রাত দিন চাঁদ হেসে যায় ।


                  সেই তো দ্বিতীয় প্রহর!


         05.


দ্বিতীয় প্রহর(দ্বিতীয়)


নিঃশব্দ রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরে
যখন যুবক নিশিডাকে ফেরে
ঘুম-ভাঙ্গা শ্রমিক নিরন্ন সকালে
যখন কোন আরোপিত দায়ে
              একাকী কেঁদে ফেরে ।


তখন বাতাস ,যখন গুঞ্জে
চক্র হয়ে ,ভালোবাসার প্রহরীর মত
ব্যাকুল ত্রস্ত পায়ে ,


সব ঘাম ঝরে গেলেও কোথাও
স্ফুলিংগ জ্বলে
কোথা থেকে বারুদ আর রাজদ্রোহ
কোথা চলে যায় অজানা।


অন্ন ,চাই,বস্ত্র চাই ,শিক্ষা চাই
নিশি কেটে গেলে ,দিবাকরে তারে
নিয়ে বাঁচতে চাই।


06.
অনামিকা


ভালোবাসা ভালোবাসা খেলা
খেলনা অনামিকা
ব্যর্থ দীর্ঘশ্বাস আর কত জমাবে !
পাগলামী প্রেম-পরিনয়।


আমার হৃদয় বাতাস থেকে পত্র মাঝে খেলে
বৃক্ষ-দীর্ঘ ইতিহাস ছায়াছবি যদি মেলে
তবুও একটিক্ষণ বন্ধ কপাট গুমোট
অধিরাস্ফিত নয়নাবৃত ব্রীড়া
               এ জন্মে পাবোনা ?
দায় নেই ,দাবী নেই ,কথা নেই
দেখা নেই, শোনা নেই ,জানা নেই
              যুক্তি নেই, যুক্তি নেই।
এই এতকিছু মাঝে যদিও কংকাল আঁকড়ে বেঁচে আছি
                তুমি কোথায় ?
                শুনতে পাওনা?