চিরপথিক বাউল
(১)
কায়াহীন বাউল
সম্বল তার ছায়া,
যে ছায়াশরীর বেঁচে থাকে
হৃদয়ে বসত করা
মহাকাব্যে।
পাতার পর পাতা উলটে যাও
মহাকাব্য হবে না শেষ
যদি বা শেষ পাতা খুঁজে পাও
নখের আঁচড়ে তোলা যাবে না।
হতাশ হয়ে উলটে দাও মহাকাব্য
দেখবে রক্তিম অক্ষরে
লেখা- বাউল!
 
সুবর্ণরেখার শুষ্ক চর পেরিয়ে
বাউল এসে ধরে নাও-
শীর্ণ নদির বুকে,
পশ্চিমের সোনাগলা রোদ্দুর
জলে প্রতিফলন-
শেষে হৃদয়ে বসত মহাকাব্যে
নিঃশব্দে ঢুকে পড়ে
গেঁথে যাওয়া নতুন পাতায়
চিন চিন করে বুক
বাউল ভাবে এগোতে হবে
আরও বহুদূর।
নির্ভীক নিশ্চিন্ত বাউল!
 
ভসরাঘাট।
ছেড়ে গেছে দিনের শেষ বাস-
চায়ের দোকানে দিনান্তিক জটলার বন্দরে,
নোঙর করে বাউল-
চায়ের কাপে চুমুক
বাউলের মনে এগিয়ে যাওয়ার
নতুন ছক।
ভেবে কি হবে?
ক্লান্তিহীন দুটো পা
হৃদয়ে মহাকাব্যের ইঞ্জিন-
দুচোখে অদেখার হাতছানি।
নেমে আসে আঁধার-
লগন এগোবার,
নিশ্চিন্ত বাউল।
 
কেশিয়াড়ি।
দিনান্তের অভিসার।
তামসীর আঁধারে
পুরোগামী সাঁওতাল যুগলের
ফিস ফাস, অস্পষ্ট ধ্বনি-
বাউলের আঁধারপথের ধ্রুবতারা।
পিছনে ভসরাঘাটের তর্জনি
তাই অবিরাম পথচলা-
চির-নিশ্চিন্ত বাউল।
 
মহাকাব্যের হৃদয়-ঘড়ির টিক টিক
সাঁওতাল বালার খিল খিল হাসি
তার মাঝে
তরঙ্গিম মশালের আগুন
মাদলের দ্রিমি দ্রিমি
সাঁওতাল গ্রামের উন্মত্ত জীবনলীলা
দৃশ্যপটে আঁকে
অবলীলাভরে।
বাউলের হৃদয়ের মহাকাব্যে
নতুন পাতা জোড়ে।
আঁধারভেদি জীবনের জয়গান
সুধা মাখা মনে
আঁধারে পথ হারিয়ে,
তবু নিশ্চিন্ত বাউল।
[এর পর দ্বিতীয় পর্বে]
 
#পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি।