দুষ্টুরা হারিয়ে গেছে


স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে, বই-খাতা বারান্দায় ছুঁড়ে,
মাঠের দিকে পা বাড়ায় বিশে।
মা জামা টেনে ধরে বলেঃ “প্যান্টটা তো গেছে ছিঁড়ে,
দাঁড়া, সেলাই দিই করে।”
পাশের বাড়ির দিলুটা মাঠে যাওয়ার পথে দরজা দিয়ে
ডেকে যায়, “তাড়াতাড়ি আয় বিশে।”
এক লাফে বারান্দা থেকে উঠোনে নেমে পড়ে বিশে,
আধ-সেলাই সুচ লাগানো প্যান্ট পরেই দেয় দৌড়।


কিত কিত খেলতে খেলতে দিলু পা জড়িয়ে ধরে বিশের,
সূচের ডগা তার হাতের তালুতে ঢুকে যায়, বেরিয়ে আসে রক্ত।
সম্বিত ফিরে বিশে ছুটে যায় মাঠ-লাগোয়া বাগানে,
ছিড়ে আনে কয়েকটা গাঁদা গাছের পাতা,
ভালো করে তালুতে ঘষে রসসহ পাতা
ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দেয়, বন্ধ হয় রক্ত।


তড়িতগতিতে বাড়ি পৌঁছে যায় খবর
বুঝে ধীরপায়ে খিড়কির দরজা দিয়ে বাড়ি ঢোকে।
বিশের সামনে লাঠিহাতে মা।
সূচহাতে বিশের দু’চোখ বেয়ে জল গড়ায়,
হাতের লাঠি ফেলে মা বিশেকে জড়িয়ে ধরে বুকে।


প্যান্ট কলতলায় খুলে হাত পা ধুয়ে
মায়ের নির্দেশমত রান্নাঘরে রাখা ছাতুমাখা হাতে তুলে নেয়।
ঠিক তখন বিশের কানে আসে শাঁখের আওয়াজ
তুলসীতলা থেকে,
ছাতুমাখার বাটি রান্নাঘরে রেখে
মায়ের পাশে এসে দাঁড়ায়- জোড়হাতে।
মায়ের আঁচল তার চোখের পাশে দোলে।