একবার অনন্ত নীল দেখার সাধ জেগেছিল,
সাধ জেগেছিল স্নিগ্ধ মায়াময় কিছু দেখতে।
ছুটে গিয়েছিলাম প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে,
তার ভুবন মোহিনী নীল তরংগমালার সন্ধানে।
তার নীল জলরাশি আমাকে মুগ্ধ করতে পারেনি,
পূর্ণ করতে পারেনি আমার অনন্ত নীলের তৃষা।


শুনেছিলাম পাহাড় থেকে আকাশ লাগে নীলতর,
তাই চড়েছিলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার দূর্গম চূড়ায়।
সুবিশাল আকাশের নীলও লেগেছিল ফ্যাকাসে।
পরিতৃপ্ত করতে পারেনি আমার চোখের ক্ষুধা,
অত্যুজ্জ্বল নীলের জন্য আমার মোহমুগ্ধতা।


সেই কবির মতো হন্যে হয়ে খুঁজেছি নীলপদ্ম,
দু'চোখ ভরে অথৈ নীল দেখার তীব্র আকর্ষনে।
খুঁজে পেতে দেখলাম, নীলপদ্ম নীল নয় মোটেও।
তেমনি নীল নয় ফুটে থাকা নীল-অপরাজিতা,
কিংবা শেষ বিকেলের রংধনুর দ্বিতীয় বর্ণালী।


অবশেষে স্মৃতির ঝাপি খুলে ভাবি তোমার চোখ,
ভাবি তোমার আয়ত চোখের নীলাভ স্ফটিক,
আর সরল দৃষ্টির অপার নির্ভরতার অনুভব।
তোমার আঁখির মোহময় নীলে নিমজ্জিত হয়ে,
আমার অন্তরের বিষন্নতা লাঘব হয় নিমিষেই,
অদ্ভুত প্রসন্নতায় তৃপ্ত হয় হৃদয়ের আনাচ কানাচ।


মায়াবতী নারী, তোমার নীলপদ্ম আঁখি নিয়ে;
আরেকবার সমূখে বস, ক্ষয়ে আসা ম্লান বিকেলে,
শ্যামল বাংলার কোনো এক ঘাসে ছাওয়া প্রান্তরে,
শেষবারের মতো প্রাণের গহীন কানা পূর্ণ করে নিই,
তোমার চোখের দ্রবীভূত নীল আকরের বন্যায়।


যতই সবাই বলুক,নীল মানে বেদনা, নীল মানে বিষ,
আমি জানি সব নীল বিষ নয়, কিছু নীল অমৃত হয়।


আগস্ট ১৩, ২০২৩, ভ্যাংকুউভার, কানাডা।