বাবা, চল্ যাবো আজ তোর দাদার ভিটায়।
আহারে!
কতোদিন যাইনা নাড়ি পোঁতা আঙ্গিনায়।
শ্যামল ছাওয়া সেই দূর পাড়া গাঁয়,
প্রতিদিন শতবার আমায় ডেকে যায়।
ব্যস্ততার নাগপাশ দেয়না অবসর,
একবারও পারিনা যেতে দেখতে বাবার ঘর।
যে ঘরে হয়েছে জন্ম আমার, কেটেছে শৈশব।
যে ঘরের দেয়ালে রয়ে গেছে আজো প্রিয় সব অনুভব।
যেখানে একদা লুকানো থাকতো কৈশোরের ধনরাজি,
একে একে সব পুরোনো রত্ন দেখাবো তোকে আজি।
দেখাবো তোর দাদার জোয়াল, পুরোনো লাঙ্গল,
যা দিয়ে ফলাতেন সবুজ জমিতে গোলাভরা ফসল।


বাড়ির কাছের শীর্ন নদীর চরপড়া ঐ ঘাঁটে,
পুরোনো সেই বড় ডিঙ্গা ভেঙ্গেচূরে পড়ে আছে।
তোর সেই ছোট্ট দাদু আমার দাদার সাথে,
বায়না করে না’য়ে উঠতেন, বাণিজ্যতে যেতে।
পূর্ব পশ্চিমে কতশত হাঁটে ভিড়ত তাদের নৌকা,
সবকিছুই তার বিবর্ন অতীত, স্মৃতির পটে আঁকা।
অই দূরে দেখ বিশাল দীঘি শীতল জলের আধার,
শত বছর ধরে তৃষ্ণা মিটিয়েছে পূর্বপুরুষ সবার।
ফলজ বনজ শত বৃক্ষ দীঘির চারপাশ জুড়ে,
তাদের ছায়ায় শরীর জুড়াতেন দাদারা অতীতকালে।
বাঁকা কাস্তে, চ্যাপ্টা কোদাল, খাঁজকাটা নিড়ানী,
পুরোনো স্মৃতি মনে করে দেয়, চোখে এনে দেয় পানি।


সব দেখে শুনে বলিস আমাকে, কেমন লাগলো তোর?
দাদার বাড়ীর শীতল আঙ্গিনা, খসে পড়া বাড়িঘর।
কেমন লাগলো শ্যাওলা পড়া দীঘি, ভাঙ্গাচূরা নৌকা,
কিছুই তুই রাখিসনা গোপন, খুলে বলিস সবটা।
আর বাবা তুই স্রষ্টার নামে আমায় কথা দে,
তোর সন্তাদেরও একদিন তুই নিয়ে আসবি এই গাঁয়ে।