লম্বা পানা পটল বাবুর, পালপাড়াতে বাস,
বন্ধু যে তার বেজায় মোটা, বেঁটে ভোলা দাস।
পাল পাড়াতে পটল থাকে, দাস পাড়াতে ভোলা,
গাছ-গাছালি, ক্ষেতের মাঝে, হাঁটা পথে চলা।
পাকা পথে দুই পাড়ার মাঝে, দূর ছ'কোশ বটে,
কিন্তু, ক্ষেতের মেঠো পথে গেলে, লাগবে মিনিট আটেক।
পটলবাবুর বাবার শ্রাদ্ধে, মহা হৈ চৈ,
কার্ড পাঠিয়ে বলেছে পটল, ভোলা তোমার আসা চাই।
নাগড়া পায়ে চাদর গায়ে, কলপ করা চুলে,
আতরমাখা, গিলে করা, পাঞ্জাবিটা গায়ে।
সকাল সকাল চললো ভোলা, পটলবাবুর বাড়ি,
দুলিয়ে ছাতা কুচিয়ে হাতা, চড়ে গরুর গাড়ি।
হরেক রকম খাবার ভোলা, পেট টা পুরে খেল,
লুচি, ঘুগনি,মাছ, মাংস, ফ্রায়েড রাইস ও ছিল।
রসগোল্লা কত খেল, সে সব কথা থাক,
ডজন খানেক সন্দেশ খেল, সে সব কড়া পাক।
ভালো মন্দ খেয়ে ভোলা, ঘুম এর জায়গা খোঁজে,
অবশেষে ওঠে গিয়ে, চিলেকোঠার ছাদে।
চোখে নেমে এলো ভোলার, যত রাজ্যের ঘুম,
চোখ কচলে উঠলো যখন, রাত্রি গভীর নিঝুম।
ধড়মড়িয়ে ওঠে ভোলা,বুক করে গুড়গুড়,
চোখ কপালে উঠলো, যেতে হবে ছকোশ দূর।
পাকা পথে গেলে পরে, রাত্রি হবে ভোর,
ক্ষেতের মেঠো পথে ভোলা, ধরে হাঁটা জোর।
দরদরিয়ে ঘামে ভোলা, পাঞ্জাবি যায় ভিজে,
ছমছমিয়ে আসে কেরে, হাতের চুড়ি যেন বাজে।
যত জোরে চলে ভোলা, আওয়াজ তত জোর,
উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়ে পেরোয়, বুড়ো বটের মোড়।
হঠাৎ দেখে আসছে কেরে, হাওয়ায় ভেসে ভেসে,
সাদা কাপড় গায়ে দিয়ে, খোনা গলায় হেসে।
কাছে এলে দ্যাখে ভোলা, পটল পালের বাবা,
বলছে হেসে, "শ্রাঁদ্ধ আঁমাঁর, খুঁবঁ খেঁয়েঁছিঁস, ভোঁলাঁ?
এঁবাঁরে আঁয়, তোঁকেঁ চিঁবোঁই, মুঁণ্ডুঁখাঁনাঁ ছিঁড়ি,
ঘাঁড় মঁটকে, রঁক্তঁটা খাঁই, ছিঁড়ি নাঁড়িভুঁড়ি"।
খাবার দাবার গলা দিয়ে, উঠে আসে ভোলার,
চোখ বেরিয়ে পা সেঁধিয়ে, দম আটকে যাবার জোগাড়।
যেই না ভূতে এগিয়েছে, ধরবে বলে তাকে,
ঘুমটা গেল চটকে ভোলার, পটলবাবুর ডাকে।
কি ভাই ভোলা যাবে না বাড়ী, রাত একটা বাজে,
ভোলার চক্ষু ছানাবড়া, স্বপ্ন বিষম এযে !!!
ভোলা বলে, 'না ভাই পটল, বাড়ি যাবোনা আজ,
করব বলে রয়ে গেলাম, তোমার বাকি কাজ।