তারি মাঝে ঘোরা ফেরা, কাটে সারাক্ষন-,
চারিধার বন, সে তো- ‘মাধুলির বন’ ।


প্রতিদিন তারি মাঝে, তাড়াতাড়ি উঠে
তিন ক্রোশ রাস্তা যাই আমি ছুটে- ।
সাথে থাকে গামছা, যাতে মুড়ি বাঁধা,
বাঁধা থাকে ডানখানে, কোমরেতে আধা ।
সাথে আরো পড়শির একপাল গরু-,
দুই ধারে আল কাটা, রাস্তাও সরু ।
ধেণু যাবে, মাধু যাবে ওই সরু বাটে,
কলসি -তো রাখা আছে শালিনির ঘাটে !
তৃষ্ণা পেলে পরে যাবো সেইখানে-
ভেজাবো মুড়ি আর ভরাবো প্রাণে ।
সেই মাঠে সারাদিন, যেই মাঠে চাষী-
চাষ করে একমনে নিয়ে তারা দাসী ।


এক বিল, দুই বিল, তিন বিল প’রে
পৌঁচ্ছেই- যাই আমি আট’টার ভোরে ।
তারপর বাঁধা ঝোলা খুলে আমি রাখি
তারপর মাধু, ধেণু-, সবারেই ডাকি ।
বলি কানে-, ‘ওয় তোরা যাবি না যে দূরে-
বিকেল হওয়ার আগেই যেন আসিস্ ঘুরে’  ।


মাধুলির মাঠ সে তো ঘাসে ঘাসে ভরা
লাগে যেন দেখলেই- পুরো অপ্সসরা...।
তারি মাঝে এক কোনে আম্লকির ঘনা
বসে তারি তরু ছায়ে- হই আনমনা  ।
কখনো বা ঘুম মারি করে শুনশান
কখনো বা ফল পাড়ি হয়ে হনুমান  ।
কখনো বা বাশুরির সুর শুনে সে তো-
গাই আর বাছুরেরা পেট ভরে খেত ।
ওই বাঁশি বাঁশেরি তো-, সুর তুলি ভালো
সুর শুনে গায় সবে ‘-ওরে ঝুমকা-লো’
ঝুম ঝুম ঝুম’সুরে সাত সুর ধরো-
রাখালের বাঁশি মাঝে আলো হয়ে ঝরো ’  ।


হাম্বার ডাক আসে- বিকেলের বেলা
যখনই করি আমি বন’মাঝে খেলা ।
কিত্-কিত্ কিংবা গাছ লুকোচুরি
কো-কো ডাক দি, থেকে হাত দুরি !
কত গাছ আছে সে তো- মাধুলির মাঠে
আম, জাম, ঝাউবন-  কেউ নয় কাটে  ।
তারি পারে লুকোচুরি, মানে যেই খেলা-
খেলি আমি একা একা, কাটে তাতে বেলা ।


'আল কাটা সরুমানি', ওই পথ ধরে-
ফিরবার সময়েতে ফিরি আমি ঘরে...।
ঘরে ফিরে সব্বাই যে যার কাজে
মন দেয়, মাঠ ছেড়ে  ঠিক মন মাঝে  ।