চাঁদের পিছনে লুকিয়ে থাকা       চাঁদনীটাকে
ডাকতে পারো বন্ধু, তুমি-         একটু ফাঁকে !
কথা আছে, তার সাথেতে,        বলবো পরে;
আগে তাকে আসতে দাও         আমার ঘরে ।
দেখি কত সুন্দরি-ও              আমার থেকে !
বলার আছে একটি কথা,         দাও না ডেকে ।
সাহস নাকি অনেক তার          চাঁদের কাছে
চাঁদই নাকি উঠিয়ে দিছে          তালের গাছে ।
কিন্তু বেটির জানা নেই ,           নিজের থেকে
আমি কত-ই সুন্দরি             এই ভূ-লোকে ।
চাঁদটি যেমন পড়ামুখো-          কলঙ্কতেই
ঠিক তেমনি চাঁদনী-টাও         চাঁদ জগতেই ।
হোক না তবু চকচকি           চাঁদির রূপ
আমার রূপের আলকেতেই      পুড়বে ধুপ ।


চাঁদনী তখন ঘুমোচ্ছিল          চাঁদের কোলে
শুনতে পায়, চাঁদটি তখন        ডেকেই বলে- ।
চাঁদনী তখন সাড়া পেয়ে         উঠেই পড়ে,
শুনার পর, যেন সে              ‘কড়াত-কড়ে’
পড়ল ফেটে আকাশ হতে       ভূ-তলেতে,
যেমন কোনো ঢেউর আছাড়,    পাহাড় কোলেতে  ।
যেমন করে ননীর বদল          হয় ঘোলেতে,
তেমন ছিল দ্রুতগতি             ওর বোলেতে  ।  
যেমন করে- বলল এমন         ছন্দা-ছলে
পাল্টে যেত, আমার মতে        আর কে হলে ।
কিন্তু মাধুর মাধুর্যতা              কমলো না আর,
হার মানতে পারলো না আর,     -এই বিধাতার ।


বলতে গেলেই চাঁদনী খুব        সাধাসিধা
তাইতো তার হার মানতে      নেই দ্বিধা ।
যেমন থাকে শিশুটি তার      মায়ের কোলে
ঠিক তেমনি চাঁদের পানে       চেয়েই বলে;
রূপ আছে তো ক্ষতি নেই      আমার তাতে
কারণ আমার রূপটি নয়       বাড়া পাতে ।
ভালো আমার। কলঙ্ক হোক    চাঁদের গায়ে
তা বলে কি ছেড়ে দেব          কোন সে দায়ে !
রূপের সাগর থাকতে পারে     আমার হাজার
কিন্তু আমার রূপের মাঝে      নেই বাজার ।
হয়তো আমি কলঙ্কতেই         আছি মেখে
হয়তো আমার রূপটা থাকে     আলোয় ঢেকে,
তবু কি আর পারি মাধু          চাঁদকে ছাড়া
আমার রূপের আলোয় ভরতে    আমার পাড়া ।
'কলঙ্কতা' কে বলেছে ?        তোমার কাছে ,
কালো বলেই বলবে নাকি    তোমরা পাছে !
'ওটা হল- আমার রূপের        চাঁদনী বুক',
'ওটা হল ভালোবাসার        বধির মুক' ।
আমি আমার চাঁদের কাছে     পরীর পরী
আমি আমার রূপের কাছে     মনের 'গোরি' ।
তুমি যেমন তোমার রূপের      রূপ-বতী
ঠিক তেমনই আমি চাঁদের     "মনের মোতি" ।