বিমান বন্দরের পুরনো রানওয়ে_
ল্যান্ডিংক্রাশ হতে হতে কোনমতে হলো উড়াল।
বাজপাখির ডানায়,
শতকোটি আলোকবর্ষ মাইল লম্বা পথ।
পৃথিবীর উপর পৃথিবী
সমুদ্র সফেনের মত।
সাজানো চূর্ণ হীরের দানা,
তারার বিম্বিশা,
রমণীর শ্যামলা হাতে
কুঁচকানো আউলা চুলের মত সুদীর্ঘ
অমানিশা শেষে পৌঁছে গেলাম আরশ মহল্লায়।
আলোর ঝলসানো রঙমহল,
কারুকার্য শোভিত কাগজের ফুল,
মলাট উল্টে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা মহাকাব্যের মহাকাল।
হুর পরীর কটিদেশ ঝুলছে একশত জোছনার সমান
একেকটা কটিবসন।
চারপাশে ম-ম গন্ধ
এখনি নামবে ফল্গুধারা
চাঁদের হাটে হবে নিলাম
উষ্ণ ঝর্ণায় অভ্যর্থনা
ডালি ডালি সাজানো স্বর্গের সফেদা ফল।
আমরা খেতে আসিনি ঈশ্বর, দাবি নিয়ে এসেছি।
অতঃপর শত আয়োজন শেষে
মালয় সাগরের সুবিন্যস্ত ঢেউ
আর আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত
মহা ঘুর্ণিঝড়ের শো শো প্রলয় শেষে
ঈশ্বর এসে দাড়ালেন গোলটেবিল বৈঠকে।
চেহারা যেন ভিসুভিয়াসের হঠাৎ জ্বলন্ত লাভা,
চোখদুটো তাঁর দ্বিপ্রহরের সূর্যের মত প্রখর,
চোখেমুখে পাষবিক হিংসার লেলিহান দাবানল
হাতে পৃথিবীর মৃত্যু পরোয়ানা।
কর্কশ কন্ঠে হুংকার দিয়ে উঠলেন;
কি চাও তোমরা?
দাবি!
কিসের দাবি?
চলে যাও, মৃত্যু থামবে না!
সমস্ত আশা শেষ
রুদ্রদীপ নিভু নিভু সলতে প্রান্তিকা
গোমড়ামুখে ঈশ্বর চেয়ে দেখে আমাদের।
ভয়ংকর সে দৃষ্টি!
জলোচ্ছ্বাসের মত মহাপ্রলয়,
ভুমিকম্পের মত দিশাহীন বোধ,
কেয়ামতের মত সব অচেনা।
হঠাৎ বোকা ছেলেটা বলে উঠলেন,
দাবি নয়, সমঝোতা চাই;
তুমি যদি মৃত্যু থামাও
আমরা তোমাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিবো।
ঈশ্বর উঠে দাঁড়ালেন।
হয়তো এখনি ঘোষণা দিবেন
অমর অক্ষীয় বাণী;
মৃত্যুর কোলাহল থামবে হয়তো
সবুজ তৃণে ঘাসফড়িং উঠিবে নেচে
পুস্করিণী নব যৌবনে হবে মাতোয়ারা
ঘোষণা আসবে তিনি সমঝোতায় রাজি।
কিন্তু না,
কিছু ই হলো না।
ঈশ্বর বললেন_ সভা মুলতবি,
এখন দ্বিপ্রহর, তাঁহার প্রচণ্ড ক্ষুধা পেয়েছে।