সেই কবে একদিন মেঘ গুরুগম্ভীর আকাশ দেখে
তুমি ইশারায় বলেছিলে,
'চলে যাও যমুনা কূলে - শ্রাবণ কদম্বের সুগন্ধি মেখে ভিজব দুজনে! আমি আসব।'
আহা! এমন নিমন্ত্রণ কেউ ফেরায় কখনও
এমন ভর বৃষ্টির জলে শীতল স্নান,
দোঁহে এমন হিম স্পর্শ, সন্ত্রস্ত মৎস কন্যার মতো
নিবিড় আলিঙ্গন,
এমন জড়িয়ে রাখার আকুলতা, কেউ গ্রহণ না করে  থাকতে পারে !  


আমি এর আগেও স্নান করেছি দিঘির জলে
বৃষ্টির জল পড়ত জলে,
মুক্তার মতো রুপালি জলের ফোঁটা পড়ত, কস্তোরির আড়ালে চলত জলকেলি
কীভাবে ক্লান্ত দুপুর গড়িয়ে যেত নিমিষে !
টলটলে জলে মৃদঙ্গ ঢেউ তুলে সাঁতরাতে সাঁতরাতে
কূলে ফিরে আসতাম।


তোমার এমন আমন্ত্রণের অপেক্ষা করেছি
আমার যৌবনকাল থেকে ,
কত হাহুতাশ করেছি, হৃদয় ভেঙে কত ক্ষরণ হয়েছে বেদনা, তুমি মায়াচোখ মেলে তা দেখোনি কখনও,
সেই তুমি প্রেমজ আহবান করলে আামাকে,
আমি তা ফেরাই কী করে!


বৃষ্টি নামুক সেখানে, জলে ভরুক যমুনা, উপচে উঠুক একূল ওকূল --
কদম্ব ফুটুক, সুগন্ধ ছড়াক চারিদিকে --
মেঘমেদুর বরষায় ভিজব শ্রাবণ অঝোর ধারায় --


আত্মহননের মতো কী ভয়ংকর মুহূর্ত হবে, ঢেউয়ের দোলায় তোমার দিগন্ত জোড়া ধবল পিঠ ,
বাঁক খাওয়া কোমড় ও উরু ডুবে বুঁদবুঁদ হবে ,
কী অদ্ভূত জলস্রোত, কী সুন্দর জলস্রাব!
জাদুর চুম্বকের মতো আমরা দুজন একজন হয়ে যাব!


আমরা শুচি হবো দোঁহের শরীর ছুঁয়ে, আরও কত শ্বেত জল একাকার হবে স্রোত বক্ষে! কত কাঙ্গাল ছিলাম আমি এই ক্ষণটির জন্য।  


আশ্চর্য শিহরণে গা কাঁপে, আমরা উথাল-পাতালে ডুবে যাই... জলতরঙ্গে ভেসে ভেসে যাই, অতলে তলিয়ে যাই নিরুদ্দিষ্ট হাঙ্গরের মতো।


****