অহল্যা,দ্রৌপদী, কুন্তী,তারা,মন্দোদরী
পাঁচ কণ্যার নাম নিলে পাপ যায় হরি
একদা ব্রহ্মা এক পরমাসুন্দরী সৃষ্টি কল্পে
অহল্যাকে সৃষ্টি তিনি করেন ভূমন্ডলে
অতুলনীয়া রূপবতী জুড়ি নেই তাঁর
স্বর্গের অপ্সরাগন এ রূপের কাছে মানেন হার
ব্রহ্মা তাকে নিয়ে যান ঋষি গৌতমের কাছে
কণ্যাকে পালন করার জন্য দেন ঋষিকে
তিলে তিলে বাড়ে কণ্যা ঋষির আশ্রমে
পূর্ণ যৌবনা হলে গৌতম স্থির করেন মনে
ঋষি নিয়ে ব্রহ্মাকে ঐ কণ্যা দেন
কণ্যাকে দেখে ব্রহ্মা হরষিত মন
ব্রহ্মা গৌতমকে বলেন “ওহে ঋষিবর
এই কণ্যাকে বিয়ে করে বাঁধ তোমার ঘর”
মুনি সসম্মানে বলেন ব্রহ্মাকে, “হে ঈশ্বর
তব বাক্য লঙ্ঘিবার শক্তি নাই মোর
বিচার করে দেখুন, হে জগতঈশ্বর
কণ্যার চেয়ে আমার বয়স বহুগুণ বেশী
এ বিবাহ সমীচিন কিনা বিচার করুন ঋষি”
ব্রক্ষা বলেন “বিধির বিধান এই শোন মুনিবর
কারো নাই শকতি এই লিখন খন্ডাবার
স্রষ্টার ইচ্ছায় চলে ব্রহ্মান্ডে ঘটণঅঘটণ
কোনো শক্তি নাই পারে এ পদ্ধতি নিবারন
এ কণ্যাকে নিয়ে যাও তোমার আশ্রমে
সেথা গিয়ে বাস কর দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন মনে”
সদ্য পূর্ণযৌবনা নারী উত্তাল কামলিপ্সায়
সাধু যোগী গৌতম কামকে করেছেন জয়
সাধনা জপ তপ নিয়ে কেটে যায় দিন তাঁর
সময় নেই তাঁর নারীর মনোবাঞ্ছা জানবার
যতদিন যায় অহল্যা কামেতে পাগল
লাজে এ কথা তাঁর স্বামীকে বলেন নাই মনোবল
দিনে দিনে কাম বাড়ে, চিত্ত অস্থির
কামকে জয় করর ক্ষমতা নেই সাধারনের
ইন্দ্র দেবতার রাজা স্বভাবে কামাচরী
ক্ষমতায় আসিন থাকলে সে হয় স্বৈরচারী
ইতিহাসে দেখি অধিকাংশ সম্রাট ও রাজা
কামচরিচার্থ করতে ছল বল প্রয়োগে করে কব্জা
ইন্দ্র নেন ছলনার আশ্রয় অহল্যাকে ভোগ করতে
এক ভোরে ঋষি যান স্নানে নদীতে
এই সুযোগে ইন্দ্র মুনির ছদ্মবেশ ধারন করেন
অহল্যার ঘরে গিয়ে উপস্থিত হলেন
কামার্ত নিদ্রালু নারী সহবাসে হন লিপ্ত
ঐ সময় নারীর থাকে না বিচারবোধ জাগ্রত
ইন্দ্রের কামকলায় অহল্যা মুগ্ধ হলেন
চরম তৃপ্ত হয়ে ইন্দ্রকে আলিঙ্গনে ধরে রাখেন
হেনকালে স্নান সমাপনে ঋষি আসেন ঘরে ফিরে
কামলীলায় ক্রোধান্বিত চোখে আগুনের গোলা ঘোরে
কেহই সহিতে নারে স্বকাম পরকীয়ায় স্ত্রী বা স্বামী
রক্তবর্ন চক্ষু কম্পমান শরীর শাপ দেন তিনি
“যোনির আকাঙ্খাহেতু তুমি করলে এ পাপাচার
সারা শরীরে তোমার সহস্র যোনি হবে সমাহার”
অহল্যায় বলেন “মুনির বনিতা হয়েও কাম নার জয়
এখানে থাক তুমি হয়ে পস্তরবৎ অহরহ
আমি চলিলাম হিমালয়ে সাধনার তরে”
স্বাভাবিকভাবে যদি কেউ গোপনে পাপকার্য করে
ঐ কাজ জনসমক্ষে এলে আবেগ যায় ভয়ে
মানসিক স্থিরতা হারায় অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে
অভিসপ্ত হয়ে দুজনে পায়ে পড়ে কাতর প্রার্থনা করেন
মুনিবর শান্ত হয়ে ইন্দ্রকে বলেন “অভিসাপ আমার
ফিরানো না যায়, তোমার যোনি হবে রূপান্তরিত নয়নে
ভগবান রাম যবে আসবেন এই কুঠিরে
তাঁর উপদেশে অহল্যার অভিসাপ যাবে চলে।।