আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে, রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।
বাপ নেই, মারে-ঘরডারে গেল-গেলবারে খাইছে ডাইনি ছিডরে,
পড়ি গাও-গেরামের হাইইশকুলে, থাহি আমি চাচার সংসারে।

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে, রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।

উকিল গাজী শামছুর ছাওয়াল, বেজায় গুনী আর বিদ্দ্বেন নওশেদ মাষ্টের,
হাটে মাঠে মানুষজনেরে ক'য়ে বেড়ায়, আগাম বান-তুফানের,
অনেক অনেক মিনতি আর জোর দিয়ে কয়েছে মামারে-চাচারে।
বাপের গাওয়ের লোকেরে বাচাতি কে না চায়, তাই ক'লাম তোমারে।

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।

চাচা আমাগের থাহে, আরব কেমবা মদ্দি দরিয়ার দেশেতে,
বেজায় রোজগার, বেজায় টাহা, ছেলেপুলে নেই – চাইছিলো এক পুতে।
চাচা আমারে ক'লাম পছন্দ করিছে, নিতি চায় তেনার দেশে।
জাফর মাস্টেরের কাছে করিছি আমি পাশ, শক্ত গনিত কষে।

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।

ফজর আলী চাচা, “দোয়া চাতি আজ আসিছি তোমার কাছে। “
“কান্দিসনে বাজান, লালন আর পালাগান, গাঁওয়ের পুঁথি, একতারাটা নিস সাথে।
আমাগের জন্য ভাবিসনে, গাংএর লোনা আর তুফান কমি যাবি,
দাদারা-মামারা-চাচারা চিন্তা করিছছে, ফল একটা হবি।“

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।

নৌকো বানালাম গেওয়া আর শোন্দরী ফাড়ি, ছাও দেলাম তার গোলে,
কান্দি কান্দি ফুলু সাজায়েছে তারে, কত্ত রহমের ফুলে ফলে।
কান্দে মন, ব্যস্ত চাইছি, ফুলুরে রাহি এ কেমন বিদেশ যাওয়া
বাদ ফজর, ফজর আলী চাচা বলে “যাও” দেখি উত্তর হাওয়া।

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।

বাংলা ছাড়ি দরিয়ায় আমি, বুক ফাটি যায়, চাইছি পিছু ফিরি,
শোশের দল চলিছে সাথে, ইলিশ লাফায়ে নৌকোয় উঠিছে চড়ি।

আফারে-খালারে-মামারে-দিদিরে, বাড়ি আমার দক্ষিণে,
বংগদেশের দরিয়ার কোলে রূপসা-শিবসা-শোন্দরবোনের খুলনে।।

খাগড়াছড়ি, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০১২